একদিন অফিসে গ্যাঁজাইতে গিয়ে হিমালয় প্রসঙ্গ উঠালো; বাংলাদেশের সবচেয়ে লম্বা নায়ক কে। আমি বললাম আলমগীর, হিমালয় বললো ইলিয়াস কাঞ্চন। জায়েদ বললো মাহমুদ কলির নাম। আমরা দুজনেই মাহমুদ কলির নাম শুনে অবাক। এ লোকটা যেন কে! এদিকে মাহমুদ কলির নাম জানি না দেখে জায়েদ ব্যাপক বিস্মিত। মাঝখানে কিছুদিন এ নিয়েই গবেষণা চললো। কে এই মাহমুদ কলি! কেমন ছিলো তার জনপ্রিয়তা? এখন কী করছে? বিয়ে কবে করেছে? সন্তান কজন?
এখানে থেকেই উৎপত্তি "নরকের রাজপুত্র" এর গল্প "একজন ভীষণ লম্বা মানুষ" এর। ডার্ক কমেডি আমার ভীষণ প্রিয় বিষয়। এই গল্পটিও সেই আদলে লিখতে চেয়েছি। গল্পটিতে চরিত্রগুলোর নাম মূল চরিত্রগুলোর নামেই রেখেছি। মাহমুদ কলিকে নিয়ে গল্প করতে করতে তারা অবসেসড হয়ে পড়ে, একঘেয়ে জীবন থেকে নিস্কৃতি পেতে মাহমুদ কলিকে সুপারহিরো বানিয়ে পলায়নপরতার মোহে নিমগ্ন হয়, জড়িয়ে পড়ে নানা ঝামেলায়!
নরকের রাজপুত্রের বিষণ্ণতম গল্প হলো 'জড়জ'। এটার ভাবনা যেভাবে মাথায় এলো তা বেশ মজার! তখন আমার অফিস ছিলো পান্থপথে। নিজের একটা রুম ছিলো। আমার চেয়ারের পাশে আরেকটা চেয়ার ছিলো। আমি প্রায়শই সেই চেয়ারটায় হাতের ভর দিয়ে রেখে আরাম করতাম। একদিন এসে দেখি যে চেয়ারটা নেই। তাতে আমার কিছুই এসে গেলো না। দুইটা চেয়ার দিয়ে আমি কী করবো? কিন্তু টের পেলাম একটু পরে। নিজের অজান্তেই চেয়ারটায় হাত এলিয়ে দিতে গিয়ে একরাশ শূন্যতার দাপটে পরাভূত হলাম।
এমন হতে লাগলো, বারবার, বারেবার! তখন বুঝলাম যে আমি কী হারিয়েছি! 'জড়জ' নামে বাংলা অভিধানে কোনো শব্দ আছে কি না আমার জানা নেই। (এই মাত্র গুগলিং করে দেখলাম, আছে! )। জড়র প্রতি নির্ভরতা বোঝাতেই এই নামটি রাখা হলো। গল্পে নিয়ে এলাম এক নিঃসঙ্গ মানুষকে। তার স্বজনরা অনেক দূরে। চেয়ারটির সাথে তার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সে মায়া বোধ করে...
নরকের রাজপুত্র পাবেন অনুপ্রাণনের স্টলে। ২৩ (লিটল ম্যাগ চত্বর), ৪৯৫ (সোহরাওয়ার্দি)। যারা ঢাকার বাইরে আছেন, আমার নাম্বারে ১৮০ টাকা বিকাশ করলে পাঠিয়ে দেবো। সাথে, অথবা এমনিই কথা বলতে চাইলে আমি আছি, আছি! নাম্বারটা হলো- 01937205402
শুভরাত্রি।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:২০