একজন পোস্ট দিয়েছে ; "ডাক্তাররা বিশ্বের সবচেয়ে বড় ডাকাত" । সেটা শেয়ার করেছে এক নিউজ পেপার টিভি বাংলানিউজ.টিভি । সেখানে শত শত কমেন্টর কমেন্ট করেছেন ।
তাদের ভাষ্য মতে ডাক্তার ৮০% ঔষধ অপ্রয়োজনীয় লিখে , সব টেস্ট দেয় কমিশনের জন্য , রোগ ধরার জন্য না।
সম্প্রতি আমার কাছে একটা রোগী এসেছিল - রোগীটা খাবার পরেই বমি হয়। অনেকদিন ধরে এই প্রব্লেম থাকার জন্য একেবারে শুকিয়ে কাঠ, সাথে নিউট্রিশন ও ইলেক্ট্রোলাইট ইমব্যালেন্সও হয়েছে ।
ঢাকায় একজন মেডিসিনের ডাক্তার দেখিয়েছে । Endoscopy করে রোগ ধরা পরলো Gastric outlet obstruction due to pyloric stenosis..
পরে ডাক্তার একজন সার্জনের কাছে রেফার করল। সার্জন অপারেশনের প্রস্তুতি হিসেবে কিছু ফিটনেস টেস্ট করালেন যা রোগীর anesthesia দেয়ার জন্য করানো বাধ্যতামূলক। যার মধ্যে একটি হলো - chest Xray..
রোগী আমার কাছে ঐ ডাক্তারের নামে অভিযোগ করে বলতেছে- কেমন ডাকাত ডাক্তার, আমার সমস্যা পেটে, আমার পেটের এক্সরে না করাইয়া ফাও বুকের এক্সরে করাইলো।। পাশে থেকে একজন বললো কমিশন খাওয়ার জন্য।।
এইসব বাজে মন্তব্য করে কারা- যারা জানে না। যারা শরীরের নরমাল অংগ গুলোর কাজ সম্পর্কে ধারনা নাই। তাদের কাছে ভালো কিছু আশা করাও ঠিক না। কিন্তু না জেনে পাকনা পাকনা কমেন্ট করা ও ভুল ধরা থেকে বিরত থাকে না।
গ্রামে যখন একটা রোগী দেখি , রোগী ১০০ টাকা ভিজিট বের করতে গরিমসি করে... । আবার সেই রোগী সামান্য রোগের জন্য ইন্ডিয়া যায়। রোগের জন্য , সাথে আগ্রার তাজমহল দেখা ফ্রি। সেখানে রোগ ধরার জন্য ৮০০০০ হাজার রুপি ঢেলে আসবে। কিন্তু ডাক্তার সাহেব এসি রুমে দেখেছেন বলে, ডাক্তার সাহেব ফেরেশতা বলতে কার্পণ্য করেন না। কিন্তু আমি আধা ঘন্টা টাইম নিয়ে নন এসিতে দেখি বলে ভিজিট বের করা কষ্টের ।
একটা রোগএর যেসব সিম্পটম থাকে, অনেক রোগেই তার কাছাকাছি সিম্পটম থাকে । যেমন - জ্বরের কারন হিসেবে ১০০ টার মত কারন আছে। ডাক্তার সাহেব হিস্ট্রি ও এগজামিনেশন করে সবচেয়ে কাছাকাছি রোগ Differentiate করার জন্য টেস্ট দেন।
রোগ ধরতে গেলে বলবেন - বেশী টেস্ট দেয়, আবার টেস্ট না দিয়ে চিকিৎসা দিলে বলবেন ভুল চিকিৎসা । ডাক্তার যাবে কোথায়?
বই পুস্তকে লেখা আছে - টেস্ট দেয়ার ৪টা উদ্দেশ্য । "রোগ ধরা", "অন্য রোগকে exclude করা", " চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ণয়ে" ও "রোগের পরিনতি বুঝার জন্য"।
প্রেসক্রিপশনে ডাক্তার যেসব মেডিসিন দেন। সেখানে ৩টা উদ্দেশ্য থাকে- "রোগ নিরাময়", "মেডিসিন দিয়ে যদি কোনো সাইড ইফেক্ট হয় সেটা প্রতিরোধ" ও "কোনো প্রকার অভাবমূলক রোগের সাপ্লিমেন্ট দেয়া"।।
যেমন - যক্ষার মেডিসিন isoniazide খেলে বডিতে একটা ভিটামিনের (pyrodoxine) এর অভাব হয় । তাই ডাক্তার যক্ষা রোগীর প্রেসক্রিপশনে পাইরিডক্সিনের ট্যাবলেট যোগ করে দেন। এখন যদি কেউ এই প্রেসক্রিপশন দেখে কমেন্ট করে- ডাক্তার হুদাই এই ভিটামিনটা দিছে কোম্পানীকে খুশি করতে । এর চেয়ে রাম ছাগল দেশে দ্বিতীয়টা হবে না ...
তাই সবার প্রতি অনুরোধ - never judge anyone until you are not perfect... আপনি যদি মেডিকেল সাইন্সের সব জানেন, তারপর ভুল ধরেন , তাতে দোষের কিছু নাই। কিন্তু আপনি আন্দাজে ঢিল মেরে দুনিয়া উদ্ধার করবেন, এরকম ছাগলামী না করাই ভাল.
Dr.SAYED sujon
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১০:৫২