somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এর চেয়ে জঘন্য শাসনব্যবস্থা আর হয় না -সালমা আলী

২১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৩:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



গাজীপুরের কাপাসিয়ার সংসদ সদস্যের ঘনিষ্ঠ ও এপিএস সাইফুল হাকিম মোল্লা ওরফে কাজল মোল্লা একটি মেয়েকে এত দিন ধরে নির্যাতন করল, আটকে রাখল, অথচ এ ব্যাপারে প্রশাসন কোনো ব্যবস্থাই নিল না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও বলছেন, তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। আমি একজন মানবাধিকারকর্মী হিসেবে বলছি, এর থেকে জঘন্য শাসনব্যবস্থা আর হতে পারে না। যারা রক্ষক তারাই ভক্ষক হয়ে উঠেছে। পুরো প্রশাসন, পুলিশ, আওয়ামী লীগ সবাই এক হয়ে গেছে। তারা কী মানুষ, নাকি আর কিছু! অথচ উচিত ছিল নির্যাতনের শিকার মেয়েটিকে নিরাপত্তা দেওয়া। কিন্তু তা তারা দেয়নি। এটা নারী ও শিশু অধিকারের চরম লঙ্ঘন।
এই হলো আমাদের দেশের চিত্র। এভাবেই চলছে। একদিকে প্রশাসন সব ঘটনা অস্বীকার করছে, অন্যদিকে তাদেরই প্রশ্রয়ে এসব ঘটছে। ফলে তারাও অপরাধের একটা পার্ট। মেয়েটাকে তারা বাড়িতে দিয়ে এসেছে এই শর্তে যে, সে যাতে মুখ না খোলে। দুই দিন ধরে তাকে এসব শেখানো হয়েছে। আমরা শুনেছি, মেয়েটার গর্ভপাত ঘটানো হয়েছে। পরীক্ষা করালে সেটা হয়তো বের হবে। এর ক্ষতিপূরণ সরকারকেই দিতে হবে।
আমরা বলব, সমাজে ভীতি সৃষ্টির জন্য এ রকম ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। অথচ দল-মত নির্বিশেষে জনগণের ওপর তো আর কিছুই থাকতে পারে না। কিন্তু এটা উপেক্ষিত হলো। সংবিধানে যে অধিকারগুলো দেওয়া আছে, তার সবকিছুই এ ক্ষেত্রে লঙ্ঘন করা হয়েছে। উচিত ছিল তাকে তাৎক্ষণিক সহায়তা দেওয়া, থানায় নেওয়ার পর তাকে শিশুবান্ধব স্বাস্থ্য সুরক্ষা দেওয়া, তাৎক্ষণিক ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে নেওয়া। শারীরিক, আইনি এবং মেডিক্যাল সাপোর্টসহ সব সার্বিক সহায়তা তার প্রাপ্য ছিল। অথচ দায়িত্বশীলরা তা করেনি। কিন্তু কালের কণ্ঠের সাংবাদিকরা সাহসিকতা এবং দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছেন। তাঁরা প্রশাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে একের পর এক নিউজ করেছেন। তাঁদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে কালের কণ্ঠ পরিবারকেও ধন্যবাদ। অন্য সাংবাদিকরা কোথায় ছিলেন, তাঁরা কি করেছেন?
এ ধরনের ঘটনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো সহায়তা করা হয় বলেই অপরাধীরা বড় বড় অপরাধ করার সাহস পায় এবং পার পেয়ে যায়। অনেক বড় বড় অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ঘটে গেছে, কিন্তু বিচার হয়নি। সবাই পার পেয়ে গেছে। যে কারণে অপরাধ ঘটেই চলেছে। দেশে একের পর এক নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। অথচ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে অপরাধ করার ব্যাপারে উৎসাহিত করা হচ্ছে। শাস্তি দেওয়া হয়নি বলেই সন্ত্রাসীরা একের পর এক অপরাধ করার সাহস দেখাচ্ছে।
আমার কথা হচ্ছে, যখন এত নির্মম, জঘন্য একটা ঘটনা ঘটে গেল, তখন কোথায় ছিল বিএনপি? কোথায় ছিল ১৮ দল? সরকারি দলের অপকর্মের বিরুদ্ধে তাদেরই তো রুখে দাঁড়ানো উচিত ছিল। আমরা বিরোধী দলেরও সমালোচনা করছি।
আপনারা দেখে থাকবেন, কাপাসিয়ার ঘটনাই শেষ নয়। এই দেশে একের পর নানা ঘটনা ঘটছে। এর মধ্য দিয়ে বোঝা যাচ্ছে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা সব সময় হয়, মেয়াদের শেষের দিকে সরকারি দলের লোকজন আস্থাহীন হয়ে পড়ে আগ্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করে। শাসক দলের লোকজন তখন সবকিছুর অপব্যবহার করতে চায়। মানুষ শারীরিক বা যৌন নির্যাতনকে ভয় পায়। এর শিকার হয় নারী ও শিশুরা। মানুষকে এভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে এই বার্তা দেওয়া হয়, আমরা আছি।
আর আমাদের একটা বড় দোষ সম্মানের ভয়ে সবকিছুকে লুকিয়ে রাখার প্রবণতা। দ্বিতীয়বার নির্যাতিত হওয়ার ভয়। অথচ এই লুকোছাপাটা কিন্তু অপরাধীদের পক্ষে যায়। সে কারণে ওরা আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তারা জানে, অপরাধ করলেও কিছু হবে না। নয় তো সিডি, মোবাইল ফোন ভিডিও ফুটেজ নিয়ে কেন অপরাধ বাড়ছে? এর কি শেষ হবে না? প্রশাসন কি তার দায়িত্ব পালন করবে না? এই প্রশ্ন আজ আপামর জনতার।
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সত্যি বলছি, চাইবো না

লিখেছেন নওরিন হোসেন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:০৮



সত্যি বলছি, এভাবে আর চাইবো না।
ধূসর মরুর বুকের তপ্ত বালির শপথ ,
বালির গভীরে অবহেলায় লুকানো মৃত পথিকের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা কি 'কিংস পার্টি' গঠনের চেষ্টা করছেন ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:১০


শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকেই আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামক সংগঠন টি রাজনৈতিক দল গঠন করবে কিনা তা নিয়ে আলোচনা চলছেই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্থান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্থান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×