বরষা
কথা: ফারহান/তুহীন
সুর: তুষার/ফারহান
বরষা মানেনা
ঝরছে জলধারা
জানিনা, জানিনা-কাটবে কি ঘনঘটা।
অনুনয় মানেনা
অবারিত মনকথা,
জানিনা, জানিনা-থামবে কি ঘনঘটা॥
নিরিঝর গগনে, অপলক চেয়ে রই
বিস্মৃত কবিতা, আনকা পবনে-
মেঘলা কবেকার স্মৃতিময় বাতায়ন
বলে যায় “তোমায় আনব ভালবাসি”॥
দিপীকা সায়রে, অনিমেষ চেয়ে রই
মিথিলা বরষা, অলোক দহনে-
মেঘলা কবেকার স্মৃতিময় বাতায়ন
বলে যায় “তোমায় আনব ভালবাসি”॥
বরষা মানেনা
ঝরছে জলধারা……
পাখি
কথা: জিয়া
সুর: জিয়া
একা পাখি বসে আছে শহুরে দেয়ালে
শীষ দিয়ে গান গায় ধূসর খেয়ালে
ফেলে যাওয়া আনমনা শীষ, এই শহরের সব রাস্তায়
ধোঁয়াটে বাতাসে, নালিশ রেখে যায়॥
আমি দেখিনি, আমি শুনিনি আমি বলিনি অনেক কিছু
জানিনি আমি বুঝিনি তবু ছুটেছি তোমার পিছু
আনমনা বসে দেয়ালে, পাখি নির্বাক চোখ রাস্তায়,
ধোঁয়াটে শহরের উষ্ণতা বাড়েনা,
আনমনা চোখ, অবুঝ চোখ মনের দরজায়, আঙুল রাখেনা
কিছু সুর তুমি এনে দাও পাখি নাগরিক কোলাহলে
গান গাও, তুমি শীষ দাও, এই শহুরে দেয়ালে
ভুলে যাও এই শহরের যত ব্যস্ত জনকথা
আমি এসেছি তোমার কাছে এনে দাও স্বাধীনতা
দেখিনি, আমি শুনিনি, আমি বলিনি অনেক কিছু
জানিনি, আমি বুঝিনি, তবু ছুটেছি তোমার পিছু
আমি দেখিনি, আমি শুনিনি, আমি বলিনি অনেক কিছু
আমি জানিনি, আমি বুঝিনি, তবু ছুটেছি… তোমার পিছু॥
ক্যাফেটেরিয়া
কথা: জিয়া
সুর: জিয়া/ফারহান/তুষার
পড়ন্ত বিকেল ক্যাফেটেরিয়া
উকিঁ দিয়ে দেখি,
এক কাপ চা, গরম তৃষ্ণায়
অজস্র এলোমেলো শব্দের ভীড়ে
তোমার শীতল চোখ ভিজিয়ে যায় আমায়।
যেখানে তোমার ঠোঁট ভালোবাসা
আমি বুড়ো কবিতার মত চুপচাপ।
যেখানে তোমার চোখ খুনী
আর আমি খুন হই প্রতিদিন।
স্বদেশ
কথা: ফারহান
সুর: ফারহান/তুষার
বলেছিলে তুমি আমার
“এসো, নাও নূতন ভোরের আলো”
দিয়েছিলে শতাব্দীর অবগাহন,
এক মুক্ত সময়ের আহবান।
বলেছিলে তুমি আমায়
“জাগো, শোন আমার কণ্ঠনিষাদ”
দিয়েছিলে অভ্র কোনদিনে
রোদ গন্ধমাখা জীবন।
বলেছিলে “অপেক্ষা কর জেনো
কাটবেই কৃষ্ণপ্রহর”
তবু জেগে দেখি কাঁদছে মানুষ
পুড়ছে আমার স্বদেশ।
আর একটিবার তোমায়
দেখতে চাই, দেখতে চাই॥
জেনে রেখো অন্ধকার কোন কালে হারিয়েছি
আমার অতীত
কবে পাবো অর্থময় নীরবতা,
কবে আসবে স্বাধীনতা
কবে পাবো নীরজা তোমায়, আসবে আলোক প্রহর-
তবু জেগে দেখি কাঁদছে মানুষ পুড়ছে আমার স্বদেশ
আর একটিবার তোমায় দেখতে চাই, দেখতে চাই॥
আঁধার ভাঙা, স্বপ্ন হতে জাগাই
(তুমি) আসবে বলে মহাকাল স্তব্ধ
কাদের তরে (আমার) বাঁচা আমার লড়াই
এখনো তোমার প্রিয়মুখ আমায় বাঁচায়
জানি মুক্তি তোমাতে॥
ভবঘুরে ঝড়
কথা: জিয়া
সুর: জিয়া
চৌরাস্তার উঁচু ল্যাম্পপোস্ট ছাড়িয়ে,
নিঃশ্বাস নিয়ে একটু দাঁড়িয়ে
চারিপাশে বিমূর্ত রেখায়, আমি,
ভবঘুরে ঝড়, তোমাদের খুব কাছে
ছায়া হয়ে যাই,
তোমাদের ভালোবাসা…
শনশন উত্তাল হাওয়ায়,
চৌরাস্তার ল্যাম্পপোস্ট হাঁপায়
এককাপ গরম চায়ে,
আমি, ভবঘুরে ঝড়,
তোমাদের খুব কাছে
ভিজে একাকার,
তোমাদের ভালোবাসা…
কখনো তোমাদের অজানা জানায়
বাউন্ডুলে ঝড় আমায় ভাবায়…
তোমাদের ছায়ায়,
নির্বাক ভালোবাসা
আমি আজন্ম ভবঘুরে…
ঝড় নিয়ে আসি॥
রূপসী নগর
কথা: জিয়া/তুহীন
সুর: তুষার/জিয়া
আবার হবে দেখা,
তোমাদের এই অচিন নগরে
সহসা ধূসর ধুলোর ভীড়ে
অচেনা রূপসী নগরে…
আবার হতে পারে দেখা॥
আবার হবে কথা,
অনেকের এই প্রিয় নগরে
অনেক হারাবার প্রান্তরে
অজানা রূপসী নগরে…
আবার হতে পারে দেখা॥
রূপসী উষ্ণ এ পথে,
নির্বাক সব কথার ভিড়ে
ধূলোয় ধুলো প্রান্তরে,
দেখা আবার হতে পারে
হেঁটে যাই আমি।
ধূসর ছাড়িয়ে।
দেখা হবে সবুজ আশায়…
নিঃসঙ্গ
কথা: তুষার
সুর: তুষার
দীর্ঘশ্বাস তোমার রুক্ষ দেয়াল ছুঁয়ে
বিবর্ণ রাত্রি কাটে বিমূর্ত সময়
প্রার্থনা তোমার হারিয়ে যায় অন্ধকারে
স্তব্ধ এই বদ্ধঘরে অস্পষ্ট স্বরে;
নিঃসঙ্গ একা তুমি
ক্লান্ত… জীর্ণ তুমি
অন্ধ দেওয়াল জুড়ে
দুঃস্বপ্ন আছড়ে পড়ে॥
পারবে কি ভেঙে দিতে এই দেয়াল?
পারবে কি ছিড়ে যেতে এই বাঁধন?
ধুলোমাখা জানালার আলো ছাড়িয়ে
পারবে কি ফিরে যেতে আবার।
আর্তনাদ তোমার বিদগ্ধ এ মন জুড়ে
প্রতিধ্বনি করে তবুও চুপিসারে
স্বপ্নগুলো কেন জড়িয়ে যায় এ মায়াজালে
দুঃসহ যন্ত্রণাতে, অশান্ত ঝড়ে
অন্যকেউ
কথা: ফারহান
সুর: ফারহান
আমি না অন্যকেউ, নিয়ে যায় তোমায়
যেখানে অবিরত ভেঙে পড়ে সময়;
আমি না অন্যকেউ নীরবে বাঁচে
রক্তসিঁদুর আঁকে যেথা নবআশা;
আমি না অন্যকেউ নিয়ে যায়
আমার কণ্ঠ হতে প্রতিবাদ প্রলয়।
তুমি না অন্যকেউ মোর শয্যাতে
জেগে দেখি পূব কোনে তমসা ক্ষয়
তুমি না অন্যকেউ ফিরে আসে আর
ডেকে তোলে বৃত্তবন্দী মন।
সঙ্গী তুমি সোনালী ভোরে অজানা কোন আলো
আলোয় ভরা আনন্দ লোকে নিঃস্ব প্রাতে চলো
তবু জেগে ওঠো, বেঁচে ওঠো গেয়ে ওঠো আমার এ গান-
তুমি না অন্যকেউ শিয়রে কাঁদে,
অধরা ছায়া শূণ্যমাঝে ভেঙে পড়ে
তুমি না অন্যকেউ মেলে দেয়
ভোরের আকাশ সোনালীডানা চিল
যাবে কি তুমি মোর সাথে?
আকাশ উর্ধ্বে ঐ নীল মাঝে,
(যেথা) অন্ধ বিশ্ব খোঁজে তোমাকে
যাবে কি তুমি মোর সাথে?
অনেক আশা নিয়ে
কথা: জিয়া
সুর: জিয়া
অনেক সবুজের প্রান্তে তুমি থাক একাকী
আমি ধূসর, ধূসর হয়ে জেগে থাকি।
অনেক মানুষের ভীড়েও তুমি থাক একাকী
আমি অনেক আশা নিয়ে বসে থাকি॥
হেরে যেতে যেতে যদি থমকে,
এক নিঃশ্বাসে সব পেরিয়ে
রোদ ঝলমল এক দুপুরে,
যদি ঘুম সবঘুম ভেঙে যায়
আমি অনেক আশা নিয়ে জেগে থাকি॥
দরজার বাইরে রঙীন পৃথিবী,
ধূলো ধূলোমাখা দাঁড়িয়ে আছে
ঝড়ের আশায় তোমার শহরে,
শিরোনামহীন ফুটপাত ঘুমিয়ে গেছে॥
একদিন এই ঝড়, তোমার এই শহরে
ভেঙে যায় সব জানালা তবুও আমি বসে আছি।
অনেক মানুষের ভীড়েও তুমি থাক একাকী।
আমি অনেক আশা নিয়ে জেগে থাকি॥
ইচ্ছেঘুড়ি
কথা: জিয়া
সুর: জিয়া
এই হাওয়ায় ওড়াও তুমি, তোমার যত ইচ্ছে ঘুড়ি
চুপি চুপি মেঘের মেলা, তোমার আকাশ করছে চুরি
সূর্য বসাও আকাশের নীল, ইচ্ছের রং গোলাপী হলে
দিগন্ত রেখায় সূর্য নামে, ব্যস্ত সময় যাচ্ছে চলে॥
হঠাৎ খেয়ালী এ ঝড়ো হাওয়ায়,
উড়ছে তোমার ইচ্ছে ঘুড়ি
ওড়াও ওড়াও সুতোর টানে,
আকাশের নীল যাচ্ছে চুরি॥
শুভ্র সেই মেঘের ভীড়ে, তোমার সব ইচ্ছে ওড়ে॥
আকাশ খেয়ালী মনে, হারায় কিছুই না জেনে॥
তোমার সুতোয় বাঁধা আকাশ,
ঝড়ো হাওয়ায় তার রং হারালে
নির্বাক॥ ইচ্ছে॥ আচমকা॥ দিশেহারা…
এই আলোয় হাঁটছো একা, সঙ্গী কর আমায় তুমি॥
বেয়াড়া যত মেঘের ছায়া, করছে চুরি স্বপ্নভূমি
নীলের আকাশ গোলাপী হলে, ইচ্ছে ঘুড়ি যাচ্ছে চলে
সূতোয় বাঁধা ছাড়িয়ে আকাশ, অন্য ভুবন দেখবে বলে॥
হঠাৎ খেয়ালী এ ঝড়ো হাওয়ায়,
ভাঙছে তোমার মেঘলা রেখা
ওড়াও ওড়াও সুতোর টানে,
আকাশ আবার হবে যে দেখা
দ্বিতীয় জীবন
কথা: তুষার/ফারহান/জিয়া
সুর: তুষার
অদৃশ্য চাদরে, দিগন্ত রেখায় বসে আছে সে,
অসংখ্য অনাবিল, পথ পেরিয়ে আশার স্মৃতির ভীড়ে-
রূপালী চাঁদের আলোয় জড়িয়ে থাকা সেই পিচঢালা পথ,
বিষন্ন চারিধার, ছড়িয়ে থাকা মৃদু কুয়াশা-
বিষন্ন ধোঁয়াশার ধূসর স্মৃতি ঘিরে আছে, তাকে,
আঁধার লহরীর নীল সাজানো আকাশ ছুঁয়ে
জোছনা ভাঙা বালুচরে হারিয়ে যাওয়া,
মনে পড়ে যায় ফেলে আসা পথ পেরিয়ে, সোনালী প্রহর
তবুও সবুজ পথ পেরিয়ে, অসীম ছায়াপথ নিমেষে ছাড়িয়ে,
অবাক বিস্ময়ে।
জীবন স্মৃতি যেন এলোমেলো হয়ে উড়ে যায় একই পলকে,
একই নিমেষে
তোমায় স্বাগত জানাই, ঝরা পাতার মত সন্ধ্যায়,
আলোময় বিচরন, দ্বিতীয় জীবন,
ছায়াময় মননে, অবাক নয়নে,
ছায়া সুনিবিড়, বিস্ময়ে দেখি,
দ্বিতীয় জীবন, দ্বিতীয় জীবন॥
শিরোনামহীন
“ইচ্ছেঘুড়ি” শিরোনামহীন -এর “জাহাজী” এলবামের উত্তরসূরি প্রকল্প… এবারে, বেশীরভাগ গানের কথায় “স্থির সময়ের চিত্রকল্প” আঁকা হলো; যেখানে গানের ঘটনা বা পরিবেশে সময়ের ব্যাপ্তি অত্যন্ত ক্ষুদ্র। গানের বিষয়বস্তু হোক মুক্তপ্রান্ত যেখানে চরিত্র নির্বাচন শ্রোতাদের ব্যক্তিগত অভিরুচির ওপর ছেড়ে দেওয়া হল। অসহনীয় নাগরিক জঞ্জালে অপেক্ষাপর্ব শেষ হোক; ওড়াও ইচ্ছে ঘুড়ি। ব্যক্তি আমি থেকে ধোঁয়াটে শহরের খবর পৌঁছে তুমি কিংবা তোমাদের ভালোবাসায়।
তানযীর তুহীন: কন্ঠ
বেঁচে থাকার আনন্দে আনন্দিত সকল প্রাণীর প্রতি শুভেচ্ছা। আমার ও আমার সঙ্গীত পরিবারে সবার কাছে কৃতজ্ঞতা, প্রতিনিয়ত আমাকে, আমাদেরকে পথ চলার আনন্দ ও প্রেরণা দেওয়ার জন্য।
জিয়া: বেস্ ও মিডি সিকোয়েন্স
বহু বছরের সঙ্গীত যোদ্ধা জুয়েল; যাকে প্রতিনিয়ত অনুভব করি। বন্ধুরা; যাদের সাথে গান এবং লিরিক কথা বলা সম্ভব হয়। স্নেহময় (জলি এবং রেশ) গানের জন্য যাদের সময় ঝরে যায়; শ্রোতাদের যারা গানকে ভালবাসে “শিরোনামহীন” কে বুঝতে পারে - ভালো কিংবা মন্দ, উভয় অর্থে। ভালোবামি ব্যান্ড সদস্যদের যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে ভালো কাজ করার ভরসা থাকে।
ফারহান: সরোদ, কন্ঠ
কৃতজ্ঞতা বাবা মা ও পরিবারকে (আমার দায়িত্বহীনতা যাদের ক্রমাগত অসহিষ্ণু করেছে)। কৃতজ্ঞতা তৃষা ও সিনথিকেদ কৃতজ্ঞতা নোমান ভাইকে; কৃতজ্ঞতা ফারহানকে কৃতজ্ঞতা শিরোনাহীনের সদস্যদের এবং শিরোনামহীনের সকল শ্রোতাদের যাদের ভালোবাসায় সাহসী আমাদের এই দ্বিতীয় পদক্ষেপ।
তুষার: গিটার
প্রথমেই কৃতজ্ঞতা জানাই সৃষ্টিকর্তাকে এবং বাবা মাকে। অসংখ্য ধন্যকাদ জানাই বন্ধুদের এবং সঙ্গীতের সাথীদের যারা এখনো সাথে রয়েছেন এবং ছিলেন। অবশেষে কৃতজ্ঞতা জানাই শিরোনাহীনের সদস্যদের, এতদূর একসাথে থাকার জন্য।
প্রিন্স: কিউজ
হারিয়ে যাওয়া স্মৃতির পাতায় আমি বড় একা, আর এই হারিয়ে যাওয়া জীবনে “শিরোনামহীন” বেঁচে থাকার উৎস।
শাফিন: ড্রামস, মিডি সিকোয়েন্স
কৃতজ্ঞতা জানাই আমার মাকে, আমার ব্যস্ততা যাকে একা করে দেয়; কৃতজ্ঞতা বন্ধুদের যাদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হই সবসময় এবং কৃতজ্ঞতা শিরোনামহীনকে কারণ শিরোনামহীন আছে বলেই আমি শিরোনাম।
ভালো লাগলে জানাবেন, তাহলে চালিয়ে যাবো...
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মার্চ, ২০১০ বিকাল ৪:০২