অর্পিতা নীল সাদা দেয়ালে গল্প লিখে যাচ্ছিল..বিরতিহীন আঙ্গুলগুলো ছন্দ মিলিয়ে কিবোর্ড এর উপর ক্লান্তিহীন নাচ নেচেই যাচ্ছে...অর্পিতা জানে, তার গল্পের অপেক্ষা মানুষ করে, কেউ আনন্দ নেয়, কেউ হতাশা কুড়ায় আর কেউবা সাহস খুঁজে পায়..
যেমনটা আফজাল হোসেনের মৃত্যু নিয়ে লিখা গল্পটায় মানুষ হতাশা খুঁজে পেয়েছিল..ঋণের বোঝা বয়ে বেড়ানো আফজাল হোসেন যখন আত্মহত্যা করে তখন মানুষের ভিতরের লুকানো মায়াটাও বের হয়ে এসেছিল! অর্পিতা "ভিতরের মানুষটাকে বের করে আনতে পারার অসামান্য ক্ষমতা রাখে" - এই প্রশংসা ও পেয়েছিল।
কিংবা চাকরী না পেয়ে ড্রাগ এডিক্টেড হয়ে যাওয়া সৌরভের গল্পটা..সেই গল্পে কত যুবক শপথ করেছিল, হতাশ হলেও, পথ হারাবে না..
মা হারা নিঝুম যখন একা একা স্কুলে যেতে গিয়ে বখাটের জন্য বাবার মাথা ব্যাথায় পরিণত হয়েছিল তখনো অর্পিতা দেখেছে মানুষ সেই বখাটেগুলাকে কি তুলোধোনা করেছে...সামনে পেলে তারা বোধহয় গণধোলায়ে মেরেই ফেলতো..আর সমাজ হাজার নিঝুম আর তার বাবাকে মুক্তি দিত ! নিঝুমদের স্কুল ছাড়তে হতো না !
অর্পিতা এক নাগাড়ে লিখে যায়..
আজকের গল্পের নায়িকা শিক্ষিত মেয়েটি যে সমাজ আর সংসারের বোঝা মাথায় নিয়ে মাঝরাতে পুরুষ নামক জাতিটার কাছে নিজের খোলসটাকে সমার্পন করবে, যার বোনটা বখাটেদের অত্যাচারে পড়াশুনা ছেড়ে দিয়েছিল,তবুও কেউ এগিয়ে আসে নি..যার ভাইটা শিক্ষিত হওয়া সত্ত্বেও একটা চাকরী পাই নি..যার বাবা ঋণের বোঝা সঙ্গী করে আত্মহত্যাকে আপন করেছিল...শেষ গল্পের নায়িকা অর্পিতা ক্রমাগত কিবোর্ডের উপর হাত চালিয়ে যায়...নীল সাদা দুনিয়ায় একদল প্রতিবাদী- আশাবাদী মানুষ তার লেখার অপেক্ষা করছে, যাদের দেখা অর্পিতা কোনদিন পাবে না !