ঘটনা ১:
মেয়েটার বয়স বড়জোর ২৩ কি
২৪! রাস্তার শেষে ল্যাম্পপোস্টার
নিচে দাঁড়িয়ে আছে ! ভয়াবহ
জ্যোৎস্নায় চারদিক ভেসে যাচ্ছে!
আজ রাতেও সে বাড়ি ফিরতে পারবে
না। রাত গভীর না হলে খদ্দের পাওয়া
যায় না। ৫ বছরের মেয়েটাকে একা
রেখে এসেছে। এমনি কোন এক
জ্যোৎস্নারাতে সে তার প্রিয়
মানুষটার হাত ধরে বাড়ি ছেড়েছিল!
শেষরাতের বাসের অপেক্ষায়
দাঁড়িয়ে ছিল ল্যাম্পপোস্টের নিচে।
সেদিনো সে জানতো না তার গন্তব্য
কোথায়..আজো জানে না ! মেয়েটা
মুচকি হেসে সামনের এগিয়ে
যায়..প্রিয় মানুষটা তার এখনো অনেক
প্রিয়। সে জানে, হঠাৎ ছেড়ে যাওয়া
মানুষটা আবার ফিরে আসবে।নষ্ট
দেহের মাঝে পবিত্র মন নিয়ে
মেয়েটা ভয়াবহ জ্যোৎস্নায় প্রিয়
মানুষের হাত ধরার স্বপ্ন আজো দেখে !
ঘটনা ২:
পাশে গড়ে ওঠা বার তলা ভবনটার জন্য
বস্তির ছোট্ট ঘরে বেড়ে উঠা
মেয়েটা এখন আর আকাশ দেখে না!
যেসব রাতে মা খাবার আনতে
পারতো না,এই আকাশটাকে ভরসা
করেই মা তাকে ঘুম পাড়াতো!মাকে
বহুবার সে ওই বাসাতে ঘুরে আসার কথা
বলেছে। মা বলেছে নতুন কাপড় কেনার
টাকা হলেই নিয়ে যাবে! ওখানে খুব
বড়লোক মানুষগুলা সুন্দর জামা না হলে
ঢুকতে দেয়না! নতুন জামা পরে আকাশ
দেখার স্বপ্ন নিয়ে মেয়েটা ঘুমিয়ে
পরে!
ঘটনা ৩:
বহুতল ভবনের রংচঙে আলোতে ভরা
ঘরটা আজ আমোদে ভেসে যাচ্ছে। পুরু
মেকাপের স্তর দেয়া মেয়েটা
মেহমানদের খাতিরে ভীষণ ব্যাস্ত।
মেকাপের পুরু স্তর নিয়ে মেহমানদের
রুচি সম্পর্কিত আলাপ মেয়েটার কানে
যায় না।
মদ খেয়ে মাঝরাতে ফেরৎ আসা
স্বামীর মাতাল হবার চিহ্ন সে সারা
শরীরে নিয়ে ঘুরছে! মেকাপটা এই ভদ্র
সমাজে তাই আজ ভীষণ জরুরী !
ব্যাস্ততার মাঝে সে এক ঝলক তার
মানুষটাকে দেখে নেয়। ৭বছরের দীর্ঘ
সংসারে এই মানুষটা তার আজো
অচেনা। ৭ বছর আগের ইউনিভার্সিটিরর
সেই এলোমেলো ছেলেটার কথা
ভেবে মেয়েটা মুচকি হাসে! মাঝে
মাঝে মনে হয়,এই বহুতল ভবনের রংচঙে
পৃথিবী থেকে পাশে গড়ে উঠা ওই
বস্তির মানুষগুলো ভীষণ সুখি! সুখ খুঁজার
স্বপ্ন নিয়ে মেয়েটা মানুষগুলোর
ভীরে হারিয়ে যায় !
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুন, ২০১৫ রাত ৯:৪৩