দৃশ্যপট#০১
মতলব ডিগ্রী কলেজ হোষ্টেল সংলগ্ন পুকুরে গত ৬ এপ্রিল দুপুর আনুমানিক সোয়া ২ টার দিকে বাজি ধরে সাঁতার কাটতে নামে সজীব (১৮) এবং জসীম (১৭)। বেশকিছুণ পর কান্ত হয়ে পরে তারা দুজন। এরই মধ্যে সজীব ডুবে যায় পুকুরে। তাৎনিক তা কারো চোখে পরেনি। অনেণ পর সবাই লক্ষ্য করে যে, সজীব নেই। এমনকী, জসীম ডুবো ডুবো করছে। তখনই হোস্টেল সুপার অশেঅক কুমার রায়, ছাত্র মাহবুব আলিম ও তারিকুল ইসলাম পুকুওরে নেমে জসীমকে উদ্ধার করতে পারলেও সজীবকে খুঁজে পাচ্ছিল না। প্রায় অনেকণ খোঁজাখুঁজি করার পর সজীবকে ডুবন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় মতলব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।ঘড়িতে সময় তখন বেলা আনুমানিক ২টা ৪০।
কর্তব্যরত ডাক্তার সজীবকে মৃত ঘোষণা করেন। ঠিক তখনই, মতলব উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ ইসহাক মিয়া ছুটে যান হাসপাতালে এবং সজীবকে আবারো পরীা করেন। ডাক্তারদের মতে, সজীব হাসপাতালে আনার অনেক আগেই মারা গেছে। এরপরই হাসপাতালে ছুটে যান মতলব উপজেলা নির্বহী কর্মকর্তা। কিন্তু, উপস্থিত ছাত্ররা দাবি করতে থাকে যে, “ডাক্তারের কর্তব্যের অবহেলায় সজীব মারা গেছে।” কিন্তুএটা সুস্পষ্টযে সজীব হাসপাতালে নেয়ার আগেই মারা গেছে এবং কর্তব্য অবহেলার কোন সুযোগ এখানে নেই। অতপর, মতলব উপজেলা নির্বহী কর্মকর্তা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সবাইকে এর ব্যাখ্যা দেন এবং শান্ত থাকার অনুরোধ জানান।
দৃশ্যপট#০২
ডাঃ মোঃ ইসহাক মিয়া সন্ধ্যায় তাঁর সরকারি বাসভবনে নিজ অফিস কক্ষে রোগী দেখছিলেন। এই সময় হঠাৎ ২০-২৫ যুবক তাঁর কক্ষে প্রবেশ করে এবং তাঁর অফিস ডিউটি সময় জানতে চান। তিনি বলেন, "আমার অফিস ডিউটি ৯টা থেকে ২টা"। এরপর যুবকদের কয়েকজন দুপুরের ঘটনা নিয়ে উল্টাপাল্টা প্রশ্ন করতে থাকে। এরপরই হঠাৎ তিনজন যুবক চরম গালি দিয়ে ডাক্তারকে আঘাত করা শুরু করে। সাথে সাথে অন্যান্যরা অকথ্য গালাগালি করতে থাকে এবং রুমে ব্যপক ভাংচুর ও ডাক্তারকে গণহারে প্রহার করতে থাকে। তবে আর্শয্যের বিষয় হলো, বাহিরে বেশ কয়েকজন পুলিশ থাকলেও তাদের অবস্থান ছিল নিরব দর্শকের মত। দুজন স্টাফ তৎক্ষনাত এসে ডাক্তার কে উদ্ধার করে। এই সময় উর্ধত যুবকরা তাঁর বাসায় ব্যপক ধ্বংস-জগ্গ চালায়। এতে একজন রোগী সহ দুজন অফিস স্টাফ ও একজন অতিথী আহত হন।
কিছু প্রশ্ন ???
ছাত্র মৃত্যূ সংক্রান্ত ঘটনার নিঃপত্তি হয় বেলা ৩টায়। "ডেথ সার্টিফিকেট" দেয়া হয় সবার উপস্থিতিতে। কিন্তু এরপর সবার চোখের আড়ালে বাসভবনে এভাবে কর্মকর্তার উপর হামলার কী কারণ থাকতে পারে? তাও আবার পরিকল্পনা করেই করা হয় এই হামলা। এটা কী ব্যক্তিগত আক্রোশ জনিত হামলা?
ফিরে দেখাঃ
ডাঃ মোঃ ইসহাক মিয়া একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। দেশ স্বধীন হবার পর দেশ ঘটনের কাজে যিনি নিজেকে আত্ন-নিযোগী করার লক্ষ্যে চিকিৎসা সেবার মত মহান পেশাটি বেছে নেন। সততা ও মেধার ভিত্তিতে তিনি সরাকারি চাকুরিতে যোগদান করেন একজন মেডিকেল অফিসার হিসেবে।
নিজেকে একজন যোগ্য ও সৎ কর্মকর্তা হিসেবে সুপ্রষ্ঠিত এই ব্যক্তিটি চাকুরী জীবনে বহুবার প্রশাসনিক প্রহশনে পড়েছেন। এমনকী বিগত সরকার আমলে তাঁকে পহাতে হয় "মুক্তিযোদ্ধা" হিসেবে গালি-শ্রবণ এবং বদলির পর বদলি। এতো কিছুর পর্ও কাজ পাগল মনুষটিকে কেউ থামাতে পারেননি।
সর্বশেষ তিনি নিজ এলাকায় মতলব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেন "উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হিসেবে। যোগদান করার পরপরই তিনি দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা উপজেলার রমরমা চিকিৎসা সেবার নামে চাঁদাবজি , রোগীকে ভোগান্তি সহ দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেন। আর সেটাই প্রকট কাল হয়ে দাঁড়ালো।
মুহু মুহু হুমকী, ধামকী আর বিভিন্ন উৎপাত তাঁকে সহ্য করতে হয়। অবেশেষে কাপুরুষের দল তাঁকে আক্রমণ করে। ৫৫ বছর বয়স্ক এই লোকটি পেল তাঁর সততার "সর্ব শ্রেষ্ঠ্য পুরষ্কার"।
হাসপালালের বিছানা যিনি আজ পরে আছেন প্রচন্ড ব্যাদনা নিয়ে। আসুন তাঁর এই বেদনার অবসান ঘটাই। তাঁর মৃত্যুদন্ড কামনা করি। যিনি আমার বাবা। আমার জন্মদাতা। যিনি নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন দেশের কাজে। আমার মা আজ তাঁরই সাথে শস্যায়। আমরা তিনটি ভাই-বোন আজ আবারো পেলাম আমাদের প্রাপ্প শান্তনা।
এমনকী থানায় মামলা করতে গিয়ে আমার ভাইকে পোহাতে হয়েছে যন্ত্রণা। থানার ওসি মামলা নেবে না। অতঃপর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আদেশ নিয়ে মামলা করা হয় সাতজনের নামে। চাঁদপুরের ডিসি ও সিভিল সার্জন এই ঘটনার দোষীদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। স্থানীয় দৈনিক সহ জাতীয় দৈনিক ও টেলিভিশনে উক্ত সংবাদ প্রকাশ করা হয়।
আমি আর এই দৃশ্য দেখতে চাই না। কখনো না। আসুন এবার নতুন একটি দাবি করি। এই দেশে কোন সৎ অফিসার বসবাস করতে দেয়া যাবে না। সৎ ও সত্যবান মানুষদের আসুন গণ-হারে ফাঁসি দেই।
=============================================
সর্বশেষ: পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি। প্রাথমিক ধারনায়, উক্ত ঘটনার সাথে বেশকিছু সুযোগ-লোভী লোকের সংযুক্ততা পাওয়া গেছে।
আজ ( ৮ এপ্রিল) বাবাকে নিয়ে ঢাকা যাবো উন্নত চিকিৎসার জন্য। আপনার সবাই দোয়া করবেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১:৫৭