সুন্দর, তোমাকে ভালোবাসলাম বলে-
তোমার ব্যবচ্ছেদ করি অভ্যস্ত হাতে।
এখন কাদা আমার খুব ভালো লাগে; রংধনুর চেয়ে
জলের সাথে মাটি-ধূলোর এ সম্পর্ক সরল-সাবলীল-স্বচ্ছন্দ।
বৃষ্টি পরিপুষ্ট অবাধ্য ঘাসের বেড়ে ওঠা আমার ভালো লাগে।
ঝরে পড়া পাতার শব্দ, বাতাসে পাখির পালকের সাঁতার; ভালো লাগে।
আবার ভালো লাগে না অনেক কিছুই।
কেয়ারী করা সেনানিবাসের ঘাস, লাইন দেয়া পাতাবাহার;
রিক্সার বেল, রিক্সাওয়ালার গল্পহীন ভি আই পি রোড;
শুধু স্বার্থের আলোর জন্য সূর্য্যের দিকে তাকিয়ে থাকা সূর্য্যমুখী-
শরীরের কোন কিছু গোপন না করে যে দোকান খুলে বসেছে আলোতে।
যে ফুল সোনার ফুলদানীতে বসে গর্ব করে,
সারবদ্ধ হীরার মতোন জ্বলতে থাকে শহরের সেরা রূপোপজীবিনীর খোঁপায়-
তাকে কাছে নিলে আমি কাঁচা মাংসের গন্ধ পাই।
ল’রেল-এনলিভেনের রঙ মাখা ঠোঁটে মেনথল নিঃশ্বাসের চেয়ে
শহীদ মিনারে আধশোয়া পাগলের থুথু এখন অনেক বেশি খাঁটি মনে হয়।
মেনে নিয়ে ভালো থাকার অভিনয় দেখতে দেখতে আমি ক্লান্ত,
এখন জানালার গ্রীলে হাত রেখে রাস্তা দেখতে ভালো লাগে;
ঘরের কার্নিশে চড়ুই-এর সংসার দেখতে ভালো লাগে,
হুডের ফাঁকে পা বের করে রিক্সাওয়ালার শান্তির ঘুম দেখতে ভালো লাগে।
সুন্দর তোমাকে ভালোবাসলাম বলেই-
ঘরের ভেতরও গাছের ছায়ার স্বস্তি পেলাম না,
বাথরুমের নিয়মিত শাওয়ারকে বৃষ্টি ভাবতে পারিনা,
ঘরের নীল ছাদকে আকাশ মনে হয়না,
ঘড়ির রেডিয়াম জোনাকি হয়ে ধরা দেয়না।
এখন যা কিছু আসল তাকেই সুন্দর বলে মনে হয়;
বেকার জুতোর ক্ষয়ে যাওয়া শুকতলা, সদ্যভূমিষ্ঠ শিশুর কান্না,
এমনকি পৃথিবীকে না মেনে একটি সফল আত্মহত্যা।
সুন্দর, তোমাকেই ভালোবাসি।
সাজানো সুন্দর, আমার অফুরান ঘৃণা নিও।
----------------------------০৮ অক্টোবর, ২০১৩; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।