ম্যানচেস্টার এয়ারপোর্টে বসে আছি, একটু পরে ফ্লাইট; গন্তব্য জার্মানি। অনেক একা লাগছে... না, কিছু হারানোর জন্যে কিংবা কিছু পাওয়ার আকাঙ্খায়ও নয়। শুধু ভাবছি মানুষের জীবন কতো বৈচিত্র্যময়। কতো শত রকমের অভিনয় চলে, প্রতিনিয়ত।
তার বেশির ভাগই চলে পর্দার পেছনে...... থেকে যায় লোকচক্ষুর আড়ালে...... আমার জীবনও এর ব্যাতিক্রম নয়।
তবুও বুকের একপাশে বেধনার খরস্রোতা নদী বয়েই চলে...... অস্তিত্বে প্রাণের স্পন্দন জানান দেয়- বেঁচে আছি!
আজ থেকে কিছু দিন আগেও আমার জীবন এমন ছিল না, জীবনের প্রকৃত সত্য অন্য কিছুকে অবলম্বনে নিহিত থাকতো। আজ তার সম্পূর্ণ বিপরীত। যে আমি বিশ্বাস করতাম না সময়ের স্রোতে গা ভাসিয়ে দেয়াতে, আজ এই আমি হাল ছেড়ে দিয়েছি জীবন তরীর।
"যে ভুলে তোমারে ভুলে/
হীরা ফেলে কাচ তুলে,
ভিখারি সেজেছি আমি,
আমার সে ভুল প্রভু, তুমি ভেঙ্গে দাও...... !
মানুষ নামের অমানুষ গুলো, ভালোমানুষের মুখোশ পরে আমার সামনে হেঁটে যায়, আমার ঠোঁটের কোণে ফুটে উঠে একচিলতে হাঁসি...... ভাবী এই আমি ছাড়া পৃথিবীর আর সবাই ভালো, অনেক- অনেক ভালো।
এই বুকে অজস্র আঘাত, অগণিত কালো, ভয়ার্ত দাগ বয়ে চলি প্রতিনিয়ত..., হাসি মুখে বলি- ভালো আছি। ভালো যে থাকতে হয় আমাকে। এই ভালো থাকার অভিনয় করে করে বেশি দিন ভালো থাকা যায় না...... মস্তিষ্কে ঘুণপোকার আনাগুনা টের পাই। আমি জানি এরা আজ নয়তো কাল আমাকে খামছে ধরবে....
নিঃসঙ্গ পথিকের মতো আমি আজ হেঁটে হেঁটে বহু দূর এসেছি, উন্মাদনায় কাটিয়েছি অনেক টা প্রহর... তবে তা বুঝে নি কেউ। বিষের পেয়ালা নিজ হাতে মুখে তুলে নিয়েছি, সঞ্জীবনী শুরা ভেবে...
কড়া নেড়ে গেছি ভুল দরজায়...
বিষণ্ণতা, যাতনা, কিংবা কষ্ট- এই শব্দ গুলোর কোন মানে এখন আমার কাছে নেই। নিজেকে নিজে পুড়াই, সে এক অন্যরকম সুখের মগ্নতা...... ভয়ংকর নিস্তব্দতায় ছেয়ে যায় আমার চারপাশ...
১২,০০০ কিলোমিটার দুরের এই বিস্তীর্ণ আকাশ বড় অচেনা লাগে, এই বাতাসে পাই না সে ঘ্রাণ... বুক ফেটে যায় যখন তীব্র আর্তনাদে, তখন পাগলের মতো হেসে উঠি... এই হাসির উত্তর আমি খুজি না......
দেয়ালে তোমার ছবি অন্ধকার/
তুমি ছায়া ঘেরা সুদুরের মুখ/
বাগানে দাড়িয়ে আছো স্মৃতির পাথর/
ঐ পাথরের চোখে সানগ্লাস...//
শুভেচ্ছা সবাইকে।
ভালো থাকা হোক, নিরন্তর।