আমাদের দেশের প্রচলিত উচ্চ শিক্ষা ব্যাবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে নিম্নবিত্ত কিংবা নিম্নমধ্যবিত্ত শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ নাই।অর্থনৈতিক দৈন্যতা সেখানে অতীব গুরুত্বপুর্ণ ফ্যাক্ট।তাই দেশের পাব্লিক তথা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলি হয় তাদের কাছে যক্ষের ধন কিংবা সোনার হরিণের মত।উপরন্তু পাব্লিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি যুদ্ধ আছেই।যদিও সবার ভাগ্যে সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ হয় না।কিন্তু যাদের ভর্তির সুযোগ হয় তাদের অধিকাংশই অর্থনৈতিক দৈন্যতার শিকার।
মনে পড়ে বেশ কিছুদিন আগে জনৈক কাওসার আহমেদ এই পাব্লিক পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের "ফকিন্নির পুত" বলিয়া সম্বোধন করিয়াছিল।তারা কিন্তু ভার্সিটিতে ভর্তি হয়ে ফকিন্নির পুত হয় না বোধহয় জন্মসূত্রেই ফকিন্নির পুত হয়।বিধাতা তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাদেরকে নিয়ে খেলান। যাই হোক মূল কথায় আসি___;
হাল আমলে এই পাব্লিক ভার্সিটিগুলোও তাদের ভর্তি প্রক্রিয়ায় একটা অন্যায্য নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ সিলগালা করে দেন।যেমনঃ ভর্তি ফরমের অনাকাংখিত মুল্য কিংবা অভাবিত পরিমাণের ভর্তি ফি।অভাবিত বলিলাম এই জন্ন্য যে এখানে ফকিন্নির পুতরা ভর্তির সুযোগ পায় বলে।
এই অর্থের পরিমাণটা অনেকের কাছে সামান্য হতে পারে কিন্তু আমি হলফ করে বলতে পারি যারা এই সরকার অধিকৃত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হয় তাদের অন্তত ৪০% এর এই টাকা ম্যানেজ করতে অনেক কাঠখোর পোহাতে হয়।এক্ষেত্রে পিতার বেশ কিছু পৈত্রিক সম্পত্তি খোয়া যায়।আর অন্তত ১০-১৫% আছে যাদের এই টাকা ম্যনেজ করতে দ্বারে দ্বরে ছুটে হাত পাততে হয়।
সমস্যা শুধু এটুকু না,মোদ্দা সমস্যা হচ্ছে দিনে দিনে এই ভর্তি ফি , ফরম ফির উর্ধ্বগতি। তার-উপর টাকার বিনিময়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস তো তাদেরকে সর্বাপেক্ষা গুরুতরভাবে অর্থনৈতিক হ্যারাসমেন্ট করা।
আজ শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া ছোট ভাইদের কাছে শুনলাম যে তাদের ভর্তি বাবদ প্রায় ১৪হাজার টাকা লেগেছে।।যদিও এডমিশন নোটিশে এটা আগেও দেয়া ছিল।
আমি যখন ২০১০ সালে ভর্তি হই তখনও আনুমানিক ৯ হাজার টাকা আনতে বলা হয়েছিল,অবশ্য পড়ে ভর্তি হতে প্রায় ৬৫০০ টাকা লেগেছিল।কিন্তু এবার আনুমানিক টাকার প্রায় পুরোটাই নিয়ে নিয়েছে।
অতীব সত্য কথা হচ্ছে ১৪০০০ হাজার টাকা ভর্তির জন্য ম্যানেজ করা কত কষ্টের তা গ্রাম থেকে আসা নিম্নবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবার বুঝতে পারে।।
"আমার নিজের এলাকা থেকে(নিজের ইউনিয়নের) এক স্টুডেন্ট ভর্তি হয়েছে যার বাবা বাদাম_বিক্রি করে সংসার চালায়।এই ছাত্রের ভর্তির টাকা ম্যানেজ করার গল্পটা বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের গভর্ণর "আতিউর রহমানের" গল্পের চেয়ে কোন অংশে কম নয়।যাই হোক অবশেষে সে সম্ভবত ভর্তি হতে পেরেছে।কিন্তু আমি ভালই বুঝতে পারছি আগামী কয়েক মাস এই রাজধানীতে চলাচল খুবই কঠিন হবে,অন্তত ভাল ১-২টা টিউশনি না পাওয়া পর্যন্ত।।
#কষ্টের_কথা_হচ্ছে, প্রশাসন সরকারি কোয়ার্টারে থাকে,সরকারি গ্যাস-বিদ্যুত খায় এমনকি মাঝে মাঝে সরকারি খাবার ও খায়।আর এসব খেয়ে নিম্নবিত্তের সংগ্রামের কথা বুঝা তো দূরের ব্যাপার চিন্তাও করার চেষ্টাও করে না।
#পুনশ্চঃ ওরা সরকারি কর্মচারি হতে পারল আমরা নাগরিক হয়েও সরকারি মানুষ হতে পারলাম না।(সম্ভবত সাধারণ নাগরিক বলে)
#বিঃদ্রঃ শেকৃবির ভর্তি ফরমের মূল্য অন্যান্য যে কোন ভার্সিটির চেয়ে অনেক বেশি ছিল।
#রক্ত_চোষার_মত_আচরণ_দেখলাম_এবার।মুখ ফস্কে বলেই ফেলি(slip of toungh) __ আমার ট্যাকার হিসেব চাই...............।
*আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষাগুরু মহাশয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তাবৃন্দের মাসিক বাজার খরচটা বেশ ভালই হচ্ছে মনে কয়!!!





*কয়েক বছর পূর্বের ঘটনাঃ আমার উপজেলার জনৈক জেলের মেয়ে মেডিক্যালে চান্স পেয়েছিল।কিন্তু মেডিক্যালে ভর্তি হওয়া ও আনুসাঙ্গিক খরচ মেটানোর মত সামর্থ উক্ত পরিবারের ছিল না।তখন উক্ত উপজেলার সকল শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীবৃন্দ মিলে চাঁদা তুলে ওই শিক্ষার্থীকে মেডিক্যালে ভর্থি হতে সহায়তা করেছিল।



এইসব ঘটনা যখন দেখি তখন মনে হয় পৃথিবীতে মানুষ সত্যিই বেঁচে আছে। সৃষ্টিকর্তা আমাদের সকলকে মানুষের মত মানুষ বানাক____এই কামনা করি নিরন্তর।।