হয়তো এমনই লিখে রাখে আলেখ্য, এমনই অবাক বিষ্ময় লুকিয়ে থাকে কোথাও, আমাদের খুব কাছাকাছি, চৌকাঠে অথবা ছেঁড়া খাতার পাতায়, খুব সন্তর্পনে প্রকাশিত হওয়ার অপেক্ষায়। এমন অগনন হারিয়ে যাওয়া অপেক্ষা হঠাৎ আনমনা কোন সকালে রোদ্দুর হয়ে দেখা দেয় আর আমরা আচমকা যেন নিজেদের ফিরে পাই নিজেদেরই ভিড়ে। এ এক অদ্ভুত প্রহেলিকা!
সে এক শৈশবের গল্প, না! তখন কল্পনারা আরো বেশি রঙিন আর অবাধ্য, বন্ধুতা তখন যেন অনুভুতির প্রাথমিক ইশকুলপাঠ। ইচ্ছে হলেই যেন শীতের সকালকে খামে ভরে পাঠিয়ে দিতাম বন্ধুত্বের আঙিনায়, ইচ্ছে হলে বৃষ্টিবেলাকে এঁকে রাখতাম বন্ধুতার জানালায়…সে সব সবুজ দিন কবে যে ফিঁকে হয়ে গেল।
পোস্টম্যান কত্তদিন আসে না আমার দরজায়! কত্তদিন আসেনা সেই প্রতিক্ষার হলুদ খাম! খাম খুললেই লুটোপুটি খায় না আর সযত্নে সাজানো বন্ধুতার সহস্র অক্ষর!
বিস্মৃতপ্রায় সেই সব সময় পুনশ্চ স্মৃতিচারী হয়।
দারুন চমকে হেসে ওঠে প্রতিক্ষার কোন শীত শীত সকাল,
আর ভোরের সবুজ গালিচায় হঠাৎ জ্বলজ্বল করে ওঠে একবিন্দু শিশির ।
তবুও আমি ফিরে যাই আমারই নিঃশ্বাসের কাছে, নৈশব্দে, অন্তরঙ্গ ও পৌনঃপুনিকতায়… তর্জমা করি আমার ছায়া ও আড়ালের ইতিকথা। বর্ণনা করি আমার ব্যক্তিগত আলোকস্ফূরণের ছায়ার আড়ালে অথবা আড়ালের ছায়ায় লেপ্টে থাকা সেই সব শব্দসমূহ যা আমার একান্ত ঘোর ও লজ্জার, আমারই সভ্য মননের গহীন কোটরে আগাছার মত বেড়ে ওঠা অসভ্যতার হাহাকার, গোপন লোভ আর লালসার নিঃসঙ্গ আত্মহুতি। এবং আমার নিঃশ্বাস গাঢ়তর হয় আর ক্রমশ ছাই হয়ে যায় লেমিনেটেড অহমিকার আগুন। তারপর বেদনার ছাইরঙসন্ধ্যা ফুঁড়ে উড়ে যায় অদ্ভুত জোনাকিপোকা……