অক্টোবর মাসে সিলেট গিয়েছিলাম। বিছানাকান্দী , রাতারগুল, পাংথুমাই ঘুরে এসেছি। ভেবেছিলাম ছবিগুলো ব্লগে শেয়ার করব কিন্তু দিব দিব করে আর দেয়া হয়ে উঠেনি। আজকে বিছানাকান্দীর ছবি শেয়ার করছি।
সারাদিন অফিস করলাম, অফিসে কি আর মন বসে। সবাই খুব এক্সাইটেড ছিলাম। রাত পনে বারোটায় মহাখালী বাসস্ট্যান্ড আসলাম। বাস যথা সময়েই ছাড়ল মানে ঠিক বারোটায় । খুব ঘুম ছিল চোখে, ভেবেছি বাসে উঠেই ঘুম দিব। একদম শেষের দিকে আমাদের সীট ছিল। প্রথম দিকে সীট না পাওয়াতে একটু মন খারাপ হয়েছিল কিন্তু কিছুই করার ছিল না কারন কোন বাসের টিকেট পাওয়া যাচ্ছিলনা। সব বুকড ছিল। যাক কম্বল গায়ে জড়িয়ে( ইয়ে মানে এসি বাস ছিল) চোখ বন্ধ করে ঘুমাতে চেষ্টা করলাম। কিন্তু হায়! আমার ঘুম দেখি আসেই না। কি যন্ত্রনায় যে পড়লাম। একেত এই প্রথম রাতে জার্নি করছি একটা টেনশন ছিল।
যাইহোক সারারাত ঘুমাতে পারিনি। ভোর ৫.৪৫ মিনিটে সিলেটে পৌছালাম। বাস থেকে নেমে সিএনজি নিয়ে আমাদের গন্তব্যে পৌছালাম। ফ্রেস হয়ে খেয়ে দেয়েই আমরা সিএনজি ভাড়া করে বিছানাকান্দী গেলাম। আমাদের সিএনজির ড্রাইভার এনাম ভাই খুব ভাল ছিল। সে আমাদেরকে নিয়ে সারাদিন ঘুরেছে।
আমরা একটা ভুল করেছিলাম। ঘাটে এসে দেখলাম যে পাহাড় খুব কাছে। সিদ্ধান্ত নিলাম হেটেই যাব। এই সিদ্ধান্তের জন্য পরে হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি কেমন লাগে। নৌকা দিয়ে নদী পার হয়েই দেখলাম সুন্দর এক ঝাঁক হাঁস । মনে হচ্ছিল ছবি তোলার জন্য রেডি হয়ে বসে আছে। দৃশ্যটা খুব ভালো লেগেছিল। আমরা পুরো উদ্যম নিয়ে সামনে এগিয়ে চলেছি। মনে হচ্ছিল এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার থুক্কু হেঁটে যাবার। দুঃসাহসিক কোন অভিযানে যাচ্ছি তাহাই মনে হচ্ছিল।
কিছুক্ষণ হাঁটার পর দেখলাম আমাকে রেখে সবাই অনেক দূরে চলে গিয়েছে। হাঁটতে পারছিলাম না আর। সবাই আমার অবস্থা দেখে যাত্রা বিরতি দিল কিছুক্ষনের জন্য। টেস্টি স্যালাইন সাথে ছিল। একটা বাড়ি থেকে পানি নিয়ে স্যালাইন বানিয়ে সবাই খেলাম। আমি স্যালাইন খাওয়ার পর দেখলাম বেশ সুস্থ বোধ করছি। যাত্রা শুরু করলাম আবার।
অপরুপ সৌন্দর্য দেখে নয়ন সত্যিই জুড়িয়ে গেছে। সে সময় তিন দিনের ছুটি পাওয়াতে অনেকেই ঘুরতে গিয়েছিল বিছানাকান্দী। এত মানুষ তখন সিলেটে গিয়েছিল যে কোন হোটেল ই খালি ছিলনা। যাইহোক, বর্ননায় ইতি টানছি। লেখার প্রতি কেন জানি একটা অনিচ্ছা কাজ করছে।
১।
চাচা মিয়া আর তাহার হাঁস
২।
পুরো উদ্যম নিয়ে হেঁটে চলেছি। সবাই আমাকে রেখে সামনের দিকে চলে গেছে।
৩।
দূর থেকে পাহাড় দেখা যাচ্ছে।
৪।
৫।
৬।
অবশেষে পাহাড়ের কাছে
৭।
৮।
৯।
১০।
আমাদের সিএনজি ড্রাইভার এনাম ভাই। তিনি আমার ছাতা হাতে দাঁড়িয়ে আছে।
বিছানাকান্দী দেখে আমরা পাংতুমাই গিয়েছিলাম। বিছানাকান্দী থেকে ফেরার পথে বাজারের পেছন দিক দিয়ে একটা নদী বয়ে গেছে। এনাম ভাই নদী দিয়েই আমাদের নিয়ে যাচ্ছিল , দারুন মজা পাচ্ছিলাম। ভালোলাগাটা আরো গাঢ় হল যখন সিএনজি থেকে নেমে আমরা হেঁটে নদী পার হচ্ছিলাম। নদীতে হাঁটু পানি ছিল আর পানি অনেক স্বচ্ছ এবং ঠান্ডা ছিল। ঠান্ডা পানি শরীর শীতল করে দিয়েছিল। পাংতুমাই এর ছবি ভেবেছি আরেকদিন শেয়ার করব । ( যদি মন চায় আর কি )
আগে সামুতে অনেক ছবি আপলোড করা যেত কিন্তু এখন ১০ টার বেশি কেন করা যায় না সেটাই বুঝলাম না। অনেক গুলো ছবি ছিল দিতে পারছিনা বলে খারাপ লাগছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:০২