আমি সমুদ্রসম, বক্ষে আমি অজস্র জলরাশি ধারণ করি। ভালোবাসা আমার সমুদ্রতটে তেজ কটালের বিশাল ঢেউ এর মতোন আছঁড়ে পড়ে। আমি প্লাবিত হই বারংবার।
আমার মধ্যে ভালোবাসার সুনামী হয়, ঘুর্ণিঝড় হয়, জলোচ্ছ্বাস হয়, আমাকে ভেঙেচুরে দেয়, আমার সমুদ্রতটে গভীরভাবে আচঁড় কাটে। ভালোবাসায় আমি ভেঙেচুরে যাই, সমুদ্রতটের সেই আচঁড়গুলো পরম মমতায় আগলে আগলে রাখি।
তবুও একদিন হঠাৎ করেই সবকিছুর শেষ হয়। সুনামী, ঘুর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসও একসময় শেষ হয়ে যায়। উত্তাল, দুর্বিনীত, উদ্দাম ঢেউ হঠাৎ করেই থেমে যায়। একদম শান্ত, স্থির। যেন কেউ এ পথ কোনদিন মাড়ায়নি, যেন এ সমুদ্রতটে কেউ কখনও ঢেউ তোলেনি, যেন কেউ এ সমুদ্রতট ছুঁয়ে দেখেনি।।
প্রত্যেকবার জোয়ারের পর ভাটা আসে, একদম নিয়ম করেই আসে। এ পর্যন্ত কোন অনিয়ম হয়নি। সত্যি বলছি, আমি কড়িতে গুণে হিসেব রাখি। তেজ কটালের সময় যেই তীব্রতা নিয়ে ভালোবাসার ঢেউ আমার উপর আছঁড়ে পড়েছিল, ঠিক সমপরিমাণ তীব্রতা নিয়েই সেই সমুদ্রের উত্তাল ঢেউ এর মতোন ছারখার করে দেয়া ভালোবাসায় তীব্র ভাটা পড়ে। ঠিক তেজ কটালের বিপরীতের ভাটা, যেমন তীব্রভাবে ভালোবাসার ঢেউ আমায় ক্ষতবিক্ষত করেছিল, তেমন তীব্রভাবেই ভালোবাসায় ভাটা পড়ে। ভালোবাসা দূরে চলে যায় প্রচন্ডবেগে, যেমনভাবে এসেছিল। কোন ঢেউ আর আছঁড়ে পড়ে না তটে, যেন কোথাও কেউ ছিলনা কোনদিন। আমি সমুদ্রতট থেকে নিজেকে মরুভূমি হিসেবে পাই, যেথায় বিশাল জলরাশি উধাও হয়ে যায় নিমিষেই। আমি পুরনো স্মৃতি হাতড়ে বেড়াই, পুরনো দাগগুলোর উপর যত্নে হাত বুলাই, সেই ঢেউগুলোর বিশালতা মাপার চেষ্টা করি। আমি নিজে নিজেই আওড়াই, " আমি পাইনা ছুঁতে তোমায়, আমার একলা লাগে ভারী"।
আমি তো সমুদ্র হতে চাইনি। আমি চাইনি ভালোবাসা আমার উপর আছঁড়ে পড়ুক, আমি চাইনি আমার সমুদ্রে সুনামী হোক, আমি চাইনি ঘুর্ণিঝড় আমাকে উল্টেপাল্টে দিক, আমি চাইনি আমার সমুদ্রতটে নিত্য জোয়ারভাটা হোক। আমি চাইনি, সত্যিই চাইনি। তবে কেন আমার সমুদ্রতটে এ নিত্য জোয়ারভাটা??
ছবি:গুগল
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মে, ২০২২ রাত ১০:৩৭