অবশেষে এবং অবশেষে ২১শে ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যায় অনেক কষ্টে সৃষ্টে বইমেলাতে গেল আমাদের মানে বরুণা ও প্রতিফলনের একটি না গল্প, না উপন্যাস বাট পত্রালাপীয় স্টাইলে লিখিত কিছু অতি বাস্তব সামাজিক চিত্রের ছত্রাবলী যা আমি লাভস্টোরীই বলবো....
বই এর নাম- বসন্তদিন
যা পাওয়া যাবে নীল সাধু ভাইয়ার ৭৯ নং মেঘফুল স্টলে।
প্রকাশনী-'এক্সেপশন পাবলিকেশন্স'
প্রচ্ছদ এঁকেছি আমি নিজেই...
যাইহোক, এর পিছের ইতিহাসটা একটু বলি, সামহ্যোয়ারইন ব্লগে অনেকেই আমাকে শায়মা বা অপ্সরা নামে চেনে। লেখক বা কবি কোনোটাই হবার ব্রত নিয়ে আমি লেখালিখি শুরু করিনি। পড়তে ভীষন ভালোবাসার কারণেই নিজেও কিছু না কিছু লিখতে শুরু করার ইচ্ছার শুরু। স্কুল বা কলেজের দেওয়াল পত্রিকা, বা ম্যাগাজিনে লেখা ছাপাবার জন্য লেখালিখি করলেও সত্যিকারের মন থেকে আনন্দ নিয়ে লেখা শুরু করি আমি সামহ্যোয়ারইন ব্লগেই।
লেখালিখির শুরুতে আমি আরেকটি নিকেও লিখতাম। নিকটি ছিলো বরুণা। সেই আমি বরুণা। প্রতিফলনের সাথে যৌথ প্রয়াসে লিখেছিলাম বসন্তদিন নামে খেলাছলে খুব গভীর কোনো ব্যার্থ বা অব্যার্থ এক প্রেমের কাহিনী। যে কাহিনীটার শুরু কোথায় ছিলো জানা থাকলেও শেষ কোথায় জানা ছিলো না। এমনকি আজও জানিনা। আমরা লিখেছিলাম শুধু মাত্র সাম্প্রদায়িক বৈষম্যের কারণে অকালে ঝরে যাওয়া আবেগ অনুভুতি ও ভালোবাসাময় দুটি হৃদয়ের কথা। সেই সময়টা ব্লগের অনেকেই এগিয়ে এসেছিলেন আমাদের জন্য, দুটি পরিবারের মাঝে মিলিয়ে দেবার সাহায্যের হাত বাড়াতে। কেউ কেউ ভুয়া কাহিনী ভেবে দুয়ো দিতেও ভোলেননি। তবুও আমাদের চোখ, কান ছিলো বন্ধ। আমরা সকল কিছু উপেক্ষা করে ধরে রাখতে চেয়েছিলাম জাত, পাত, ধর্ম ভেদাভেদ ভুলে দুটি নদীর মোহনায় মিলে যাওয়া কিছু অব্যাক্ত হৃদয় কথন।
২০০৮ সালে সে লেখার শুরু। তখন থেকেই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম এ লেখনী আমরা কোনো না কোনোদিন মলাট বন্দী করবো। আজ ২০১৭ এর বইমেলার ঠিক আগে আগে প্রতিফলন আর আমি দুজনে মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম এ বছরেই সেই ইচ্ছেটা পূরণের। এই লেখার পিছে পুরোটাই আসলে বাস্তব কোনো ঘটনার ছায়া। এই এতগুলো বছরে হারিয়েছিও হয়তো তার অনেকখানি আবেগও তবুও ভালোবাসা এমনই এক অপার্থীব মোহমায়া যার রেশ আসলে কখনও ফুরিয়ে যায় না। থেকেই যায় এই পৃথিবীর ইথারে ইথারে, গলি ঘুচীর বাতাসে। কোনা ঘুপচীতে ঘাপটি মেরে পড়ে থাকে....... সে যাইহোক......
এই লেখার পিছে কৃতজ্ঞতা থাকবে আমাদের ব্লগের পাঠকদের কাছে যাদের অনেকেই আজ হারিয়ে গেছেন ব্যাস্ততাময় জীবনের অকুল পাথারে তবুও রিয়াজ শাহেদভাইয়া, খলিলমাহমুদভাইয়া, উধাও ভাবুক,সাজিআপু, প্রলয় হাসান, মেঘদূত, একরামুল হক শামীম, হিমালয়ভাইয়া, রাতমজুর, প্রয়াত ইমন জুবায়ের ভাইয়া, এন এইচ আর, অক্ষর, আকাশ অম্বর, জেরী, টুসকি, শ্রাবনসন্ধ্যা, সহেলী,টংকেশ্বরী, মুনসিয়ানাভাইয়া, শতরূপা, চিকনমিয়া, অগ্নির প্রয়াত কৃষকভাইয়া ও আরও অনেকেই। পলাশমিয়া ভাইয়া এবং স্বপ্নজয় ভাইয়ার কাছে রইলো বিশেষ কৃতজ্ঞতা।
আমাদের বই - বসন্তদিন
স্টল নং ৭৯ ( মেঘফুল)
লিখেছি আমি বরুণা নামে এবং প্রতিফলন তার প্রতিফলন নামে।
প্রকাশনী-'এক্সেপশন পাবলিকেশন্স'
প্রচ্ছদ এঁকেছি আমি নিজেই...
যাইহোক, বইমেলা শুরু হয়ে প্রায় শেষের পথে। এই বাকী কটা দিনের মাঝেই অন্তত দুদিন বইমেলা না গেলে তো চলবেই না। লিস্ট অবশ্য করাই আছে
১) প্রথমেই যার বইটা কিনতে হবে সেটা আমার সায়ান তানভি ভাইয়ামনির বইটা! আমার ধারণা তার ভেতরে যে শক্তিশালী লেখক প্রতিভা আছে তা একদিন স্যার হুমায়ুন আহমেদকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে। এটা নিয়ে কেউ অন্য কিছু ভাবলে আমার কিছু করার নেই কারণ আমার তাকে এমনই এক শক্তিশালী রাইটারই মনে হয়। কাজেই তালিকার ১নংটা আমি ভাইয়ার বইটাকেই দেবো।
বইটার নামঃ 'ফসিল'
স্টল নম্বরঃ ৩৩৩
২) ২য় নাম্বারে থাকবে তীক্ষ চক্ষু বিশিষ্ট গোয়েন্দা কাহিনী লেখা ভাইয়াটা যাকেই আমার গোয়েন্দা বলেই মনে হয় তার লেখা বই
অনুবাদ গ্রন্থ 'দি এক্সক্যাভেশন' ভাইয়াটার নাম রাফায়েত রহমান রাতুল, ব্লগে তার নিক রক্তিম দিগন্ত। ভাইয়াটা মাদিহা মৌ এর সাথে যৌথ রচনায় রচনা করেছে বইটা।
৩) রুল টানা খাতা। শেখ রানা আমার বিশেষ প্রিয় এই গীতিকারের বইটা থাকবে লিস্টের ৩ নং এ।
৪) দীপংকর চন্দ ভাইয়াটার লেখা পড়ে ভাবি তাকে কি দিয়ে গড়েছেন সৃষ্টিকর্তা কেই বা জানে! ভাইয়ার বই "বেদনার পাখি" পাওয়া যাবে ২৭৬ নং স্টলে। আরেকটা বই 'অ্যাক্রেলিকে তোমার বিষণ্ণ মুখ' স্টল নম্বরঃ ৩৪৯,৩৫০,৩৫১ ও ৩৫২ এটাও আমাকে সংগ্রহে রাখতেই হবে!
৫) গিয়াসভাইয়ার বইটা আমার জন্য শুধু না আমার স্কুলের বেবিদের জন্যও আমার অনেক কাজে লাগবে এছাড়াও ভাইয়া নিজেও আমার অনেক প্রিয় রাইটার তাই তার বই দিব্য প্রকাশ থেকে প্রকাশিত 'ক্ষুদে জিনিয়াস'দের কথা' নিয়ে আসতেই হবে আমাকে। স্টল নাম্বার ১৫৪,১৫৫,১৫৬ ও ১৫৭ তে পাওয়া যাবে বইটা। তবে ভাইয়ার উচিৎ আমাকে বইটা পরীর দেশে পাঠিয়ে দেওয়া!
৬) বইটার নাম 'উপপদ্য-১'। লেখক হাবীব কাইউম ভাইয়া। স্টল নম্বরঃ ২৮২ (চমনপ্রকাশ) ভাইয়াকে অনেক আগে বলেছিলাম ভাইয়া যদি কোনোদিন বই বের করে প্রথম ক্রেতা হবো আমি! ভাইয়া সেটা ভুলেনি। বই লিখেছেন এবং উৎসর্গও করেছেন আমাকে!
৭) বইয়ের নামঃ 'কূর্চি এবং রোদছায়ার গল্প' প্রকাশনীঃ এক রঙ্গা এক ঘুড়ি । স্টল নম্বরঃ ৭৯ ( মেঘফুল স্টল, বাংলা একাডেমি)
নীল সাধু ভাইয়ার এই মলাটের দিকে আমি শুধু চেয়েই থাকি। বইটার নাম, প্রচ্ছদ সবই যেন বলে দেয় বইটার মান আসলেই কোথায় আছে।
৮) হাসান মাহবুব আমার বেবিভাইয়ার বই নরকের রাজপুত্র । ভাইয়া অন্য সকলের কাছেই শক্তিশালী গল্পকার তবে আমার কাছে বেবিভাইয়াই থাকবে আর আমি তার কেমনে যে বেইবি আন্টি হলাম নিজেও জানিনা!
৯) সাজি আপু, ফেরারী পাখি আপু এদেরকে দেখেছি। কবি মানেই যেন অন্য রকম এক আর্টিস্টিক বিশেষনে বিশেষত্ব গড়া তাদের মাঝে। ভীষন অন্যরকম মনের তারা। রাবেয়া আপুটাও ঠিক তেমনি! ভীষন ভীষন মাটির মানুষ আর সুন্দর সব রচনায় সেরা। আনবো তাই তার বইটিও। দূরের মানুষ কাছের মানুষ আপুর বইটা পাওয়া যাবে ইমেপ্রস ষ্টলে।
১০) মন পবনের নাও এই বই এর লেখিকা কাজী ফাতেমা ছবি আপুনিকে দেখলে মনে হয় একটা কথাই আমার। মাই হার্ট ইজ অলওয়েজ রাইটিং আ লাভ লেটার টু ইউ!!!! ভীষন মজার আর সর্বদা আনন্দে ভেসে যাওয়া আপুনিটার বইটা না আনলে চলবেই না!
স্টল নং-৬ (বাংলা একাডেমির ভিতরে লিটলম্যাগ চত্বর) ও ম্যাগনাম ওপাস, স্টল নং ৩৮৮-৩৮৯ এ পাওয়া যাবে বইটা।
১১) নোমান নমি ভাইয়ার পরেই যার কবিতা আমার হৃদয় ছুঁয়ে যায় সে রাকিবুল হায়দারভাইয়া! এই ভাইয়াটার উপরে আমার অনেক বেশি রাগ করার কথা ছিলো কিন্তু গুণী মানুষেরা কেমনে যেন রাগ ভুলিয়ে দেয় ভাইয়ার কবিতারাও তাই আমাকে ভুলিয়ে দিলো সকল অতীত। ভাইয়ার বইয়ের নাম শূন্যতার আরেক নাম তুমি।
১২) বইয়ের নাম দীন শরৎ বলে। পার্থ তালুকদার ভাইয়াটার এই বইটাও আমার লাগবে। রোদেলা প্রকাশনী, স্টল নং-২১৩,২১৪,২১৫
১৩) এ.টি.এম.মোস্তফা কামাল ভাইয়ার "বরযাত্রা" বইটাও আনতে হবে আমাকে।
১৪)সামিয়া ইতি আপুনির অস্তিত্বে অন্তরালে বইটা নিতে যাবো ২৮৮ নং স্টলে।
১৫) ঝরিছে নয়নবারি। কয়েস সামী ভাইয়ার এই বইটা আমাকে নিতেই হবে। বইমেলায় স্টল নং : ৪৫৬-৪৫৯
১৬) মনজুরুল ভাইয়ার বই তো বলে দিতে হবে না!!!!!! আমি বুঝি না বুঝি আমার কাছে রাখতেই হবে ভাইয়ামনির বইটা।
১৭) খায়রুল আহসান ভাইয়ামনির বই "প্রেমের একটি ফুল ফুটুক, শুষ্ক হৃদয়েই"। ভাইয়াটা এত এত ভালোবেসেছে আমাকে তা তার আমার সকল পোস্টে করা কমেন্টগুলো দেখলেই বোঝা যায়! ভাইয়ার মাঝে যে এত মমতা তা তার কথা বার্তা এবং লেখনীতে ফুটে ওঠে! আমি ভাইয়ার ব্যাক্তিতে আর লেখনীতে কম মুগ্ধ নহি! কাজেই তার বইটা আমাকে আনতেই হবে। একটা না তিনটা!
১৮) সামহ্যোয়ার ইন ব্লগের কাছে আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। সুখে দুখে আনন্দে রাগে এখানে কেটেছে বহু দিন। ব্লগারস সংকলন- ২০১৭ এর " ঋদ্ধ" বইটা আনার জন্য যাবো লিটলম্যাগ চত্বর এর মেঘফুলের স্টলে। স্টল নং ৭৯।বৃতিমনির অনুরোধে সেখানে একটা লেখা দেবার সময়ও জানতাম না এটা বই মেলাতে প্রকাশিত হবে! তবে বই এর কাভার মানে প্রচ্ছদ দেখে আমি মুগ্ধ!!!!!! ঐ কাভারের নাম মনে মনে দিয়েছি আমি আনন্দ। এত আনন্দ উচ্ছল রঙ্গের বিন্যাস!!!!!!!! বৃতিমনিকে তাই অনেক অনেক ভালোবাসা!
১৯) জলফড়িং কাব্য গ্রন্থটাও আমাকে আনতে হবে।৩৮৮ স্টল থেকে এতে আমার মোটা ফ্রেমের চশমা ভাইয়ার কবিতা আছে!!!!!!
২০) আরেকটা বই কিনবো কিন্তু সেটার নাম, ধাম, পরিচয় কিছুই বলবোনা। অজানাই থাকুক তালিকার ২০ নং টা......
ভরা থাক ভরা থাক.....
স্মৃতি সুধায় হৃদয়ের পাত্র খানি......
সবাইকে বসন্তদিনের শুভেচ্ছা!!!
এই ছবিটা গেমুর সৌজন্যে পেয়েছি। সেই আমার বসন্তদিনের প্রথম ক্রেতা তাই এই পোস্ট তাকেই উৎসর্গ করা হলো!
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:৫৮