আমার মায়ের পেটের নিজের কোনো ভাই নেই। ছোট থেকেই আমি এই একটা জিনিস খুব খুব মিস করেছি। মাঝে মাঝে ভাবতাম ইশ!! আমার যদি অন্যদের মত একটা ভাই অথবা বোন থাকতো!!!
মানুষের জীবনের কিছুকিছু অদম্য ইচ্ছের প্রাপ্তি বিধাতা হয়তো মাঝে মাঝে একটু অন্যভাবে ঘটিয়ে দেন।ঠিক তেমনি এক প্রাপ্তি মনজুরুল হক ভাইয়া।
কি করে, কখন এই ভাইয়াটা যে আমার হৃদয়ের মনিকোঠায় স্থান করে নিয়েছে, বলতে পারবোনা আমি। শুধু মাঝে মাঝে তার স্নেহের সুশীতল পরশ আমাকে ছুঁয়ে গেছে। আমি আপ্লুত হয়েছি । কিভাবে, কেমন করে সে ইতিহাস আমি আজ লিখবোনা।
শুধু খুব লিখতে ইচ্ছে করছে, আমার এই মোটামাথায় ভাইয়ার লেখালিখি নিয়ে যেটুকু ঢুকেছে, ভাইয়াকে যেটুকু জেনেছি তারি কথা। প্রথম যখন ভাইয়াকে এই ব্লগে দেখতাম কিছুই জানতাম না তার সম্পর্কে। শুধু ভাইয়া আমার দেওয়া পরীর ছবিগুলো নিয়ে বলতেন যে সেসব ছবিগুলো তারও খুব প্রিয়।তখন আমি মনে মনে ভাবতাম ভাইয়া বুঝি একটা পিচ্চি ছেলে। মানে আমার থেকেও ছোটো কেউ হবে।
![:P](https://s3.amazonaws.com/somewherein/assets/css/images/emot-slices_25.gif)
একদিন হঠাৎ জানতে পেলাম ভাইয়া নাকি মুক্তিযুদ্ধ করেছে। ভাইয়া নাকি মুক্তিযোদ্ধা!!! আমি অবাক হয়ে গেলাম!! তার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা এক নিমিষে বেড়ে গেলো শতগুণ!!!!
ভাইয়ার যে সব পোস্ট পড়তাম বেশী ভাগই বুঝতাম না আমি। একটু কঠিন লেখা আমি কষ্ট করে বুঝার চেষ্টা করিনা। বলা যায় এসব ক্ষেত্রে আমি খুবি ফাকিবাজ টাইপ।
![:P](https://s3.amazonaws.com/somewherein/assets/css/images/emot-slices_25.gif)
![:)](https://s3.amazonaws.com/somewherein/assets/css/images/emot-slices_03.gif)
তবুও ভাইয়ার সাথে আমার মেইলে যোগাযোগ হত। যে কোনো রকম পরামর্শে, ঝামেলায় আমি তার সাহায্য চাইতাম। কারণ আমি জানতাম অকাতরে এই একজনের কাছেই আমি সব চাইতে পারি। আমি এটাও জানি আমার সাত দুগুণে চৌদ্দ খুন মাফ তারি কাছে।
![:P](https://s3.amazonaws.com/somewherein/assets/css/images/emot-slices_25.gif)
ধীরে ধীরে জানলাম নানারকম সমাজ সেবামূলক কাজে ভাইয়ার জুড়ি মেলা ভার।বলতে গেলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়াবার মত অবস্থা!
![:P](https://s3.amazonaws.com/somewherein/assets/css/images/emot-slices_25.gif)
যতটুকুই জানি, এসবকিছুর উর্ধে যেটুকু জেনেছি তা ভাইয়ার সেই বিখ্যাত লেখাটা থেকেই।
Click This Link
ভাইয়ার ছোটোবেলা ও তার পারিপার্শ্বিকতার একটা সুস্পষ্ট চিত্র দেখতে পেয়েছি সেখানেই আমি। আরো জানতে পেরেছি মুক্তিযুদ্ধের কিছু অজানা ইতিহাস। আমি মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি। এত সুচারু রুপে মুক্তিযুদ্ধের কোনো বর্ণনাও কখনও কোথাও পড়িনি। ভাইয়ার লেখাগুলো মন দিয়ে পড়েছিলাম।
"আল্লাহ রাখার কথা" চিরতরে মনে গেঁথে গেলো। মাঝে মাঝে ভাইয়াকে ভাবলেই, চোখ বুঝলেই দেখতে পাই ছোট একটা ছেলে ঘাড়ে বন্দুক নিয়ে হেঁটে চলেছে কোনো নির্জন গ্রাম্য পথে-প্রান্তরে। স্বাধীনতার জন্য।
লাখো বাঙ্গালীর প্রাণের বিনিময়ে আমরা যে স্বাধীনতা পেয়েছি সে স্বাধীনতায় আমার এই ভাইয়াটার অবদানের কথা ভেবে গর্বে আমার বুক ভরে ওঠে।
ভাইয়া , তোমার লেখাগুলো শেষপর্যন্ত বইএর পাতায় প্রকাশিত হলো। অন্য অনেকের প্রিয় ছিলো তোমার এই লেখাগুলো। সবার হাজারো প্রশংসায় প্রশংসিত হয়েছো তুমি তবে এ বইটা আমার জীবনে পাওয়া এক শ্রেষ্ঠ উপহার। কেনো? সেটা বলবোনা।
সারাজীবন এমন থেকো। অনেক অনেক বড়মনের একজন মানুষ হয়ে।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১০ দুপুর ২:৩২