ঈদ নিয়ে এত আয়োজন, আলো ঝলমলে দোকানগুলোয় ঈদ উৎসবের মহা প্রস্তুতি, কেনাকাঁটা, বাজারঘাটে লোক সমাগম, এক গমগমে ভাব,নানা জনের নানা মতবাদ, নানারকম মনোভাবের ভেতরেও ঈদ আসে ঈদ যায়।
আমরা যে যেখানে যেভাবেই থাকিনা কেনো ঈদ মানে আনন্দ। সে সবারই জানা। ছোট থেকেই জেনে এসেছি সৃষ্টিকর্তা সবার জন্য একটা দিন সৃষ্টি করেছেন, সকলের আনন্দের একটা দিন।
ছোটবেলার মত করে ঈদ আর আসেনা যখন আমরা বড় হয়ে যাই, সেকথা সত্যি।তবুও ঈদ মানে আনন্দ তাই চাই অন্তত আমার আশেপাশে যারা আছে সবাইকে নিয়েই এই একটা দিনএকটু অন্যরকম আনন্দময় করে তুলতে।
সকালে উঠেই আমি কিচেনে ঢুকেছিলাম। আমি রাঁধতে খুব ভালোবাসি। এটা আমার একটা প্রিয় হবি। বিশেষ দিন গুলোতে নিজে হাতে রাঁধতেই ভালোবাসি। এই ঈদে তাই আমার রান্নার স্পেশাল মেন্যুগুলো ছিলো।
মুখরোচক পরোটা (প্রথম আলো থেকে শিখেছি)
মাংসের চাপ (সিদ্দিকা নানুর কাছে শেখা)
চিকেন কাবাব(দীপা আমিনের কাছে শিখেছি)
হাড়ি কাবাব( রীতা মুজিবের কাছে শেখা)
ফিরনী ( মায়ের কাছে শেখা)
জর্দা ( এটাও মা শিখিয়েছেন)
দইবড়া ( পাশের বাসার ইন্ডিয়ান আন্টির থেকে শিখেছি)
সালাদ ( আমাদের বাসায় একটা মেয়ে আছে, ঈদে যার আনন্দ ধরেনা সে বানিয়েছে। সাজিয়েছেও
সেমাই ( যা ছাড়া এই ঈদ হয়না)
তারপর বিশাল সাজুগুজু করে প্রথমেই গেলাম কলাবাগান নানুবাসায়।সবা খালা মামা কাজিনরা যারা দেশে আছে সব এখানে জড়ো হয়েছিলাম।অনেকদিন পর সবাই একসাথে খুব সুন্দর একটা সময় কাঁটালাম।ছেলেবেলার নানা রকম স্মৃতি , হাসি গানে মুখোরিত কিছু সময়।
বিকেলে বাসায় ফিরলাম। ফুপী সারাটাদিনে কোথাও বের হয়নি। দেখলাম কিছু আত্নীয়স্বজন পরিবেষ্টিত হয়ে ফুপী ভালোই সময় কাটাচ্ছেন।
আমি কিছুপরে অনলাইনে ঢুকলাম। অনেক অনেকদিন পরে আমার এক প্রিয় বন্ধুর সাথে মেসেন্জারে অনেকটা সময় কাটালাম, ঈদের দিনটায় সব রাগ দুঃখ অভিমান ভুলে। তখনই বুঝলাম রাগ দুঃখ ক্রোধ অভিমান আমাদের জীবনের কতখানি সুন্দর সময় নষ্ট করে দেয়।
রাত ১২টার দিকে ঈদের অনুষ্ঠানে দুইটা মজার নাটক দেখলাম। তারপর ঘুমপরী কখন চোখের পাতায় নেমে এলো মনে নেই।
আমার ঈদের দিনের শাড়ী( আমি কিনিনি কিন্তু। ফুপী দিয়েছেন।)
বিঃদ্রঃ- এই শাড়ী দেখে যেন উদাসী স্বপ্ন আমাকে ইভা রাহমান না বলে।
আমি শাড়ীটার ছবি সহেলীমনি আর নম্রতামনি এর বিশেষ অনুরোধে তাদের জন্য দিচ্ছি।
উদাসী স্বপ্ন চোখ বন্ধ রাখবে।X আর আমার সবুজ রঙের উদ্ভট নেইলপলিশ দেখেও যেন কিছু না বলে।
সব মিলিয়ে মনে হলো, ঈদের আনন্দগুলো নানারকম কর্মযগ্গগুলোও একিরকম থেকে যায় আজীবন। শুধু আমরা মানুষগুলোই পাল্টে যাই। বদলে ফেলি নিজেদেরকে।
ঈদের পরদিন শাড়ীর পাড়ের সাথে রঙ মিলিয়ে পরেছি নিজের বানানো বোতাম আংটি।
এইসব নিয়েই ছিলো আমার এবারের ঈদ।
আরো কিছু না বলা কথা ছিলো তবে সে শুধুই মনে হয় ধীবর ভাইয়া আর রাগ ইমন আপুনিকেই বলতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুন, ২০১০ বিকাল ৫:২২