তুমি জানো নাই, তুমি জানো নাই, তুমি জানো নাই
তার মূল্যের পরিমান।
জীবনপাত্র! খুব সহজ কিন্তু কি পরিমান কঠিন একটি শব্দ কবিগুরু লিখে ফেলেছিলেন অবলীলায়।অনেকবার ভেবেছি, জীবনপাত্র বলতে তিনি ঠিক কি বুঝাতে চেয়েছেন? সেকি আমাদের এই বেঁচে থাকবার আয়ূস্কাল? নাকি হৃদয়পট? কাকে বলে জীবনপাত্র?
তবে গানের এই লাইনটা যতবার শুনেছি আমার কাছে কেনো যেন মনে হয়েছে এই জীবনপাত্রটি আমারই এই ছোট্ট, অতি ক্ষুদ্র হৃদয়পট, হৃদয়ের পাত্রখানি।
আমার জীবনপাত্র উচ্ছলিয়া মাধুরী করেছো দান,
হুম ঠিক এই লাইনটির মত করেই একদিন আমার হৃদয়খানি যেন উছলে উপচে পড়েছিলো।ঠিক যেন টইটুম্বুর জলে ভরভর একটি পাত্র।সেপাত্রখানি আমার এই হৃদয়। আর জল, সেতো তোমারই ভালোবাসা। সে কতখানি, কি তার পরিমান তুমি কখনই তা জানতে পাওনি। কি এক অকারণ অভিমানে, আমি তা কখনও জানতে দেইনি তোমাকে। লুকিয়ে রেখেছিলাম সযতনে।
রজনীগন্ধা অগোচরে, যেমন রজনী স্বপনেভরে সৌরভে
তুমি জানো নাই, তুমি জানো নাই, তুমি জানো নাই,
মরমে আমার ঢেলেছো তোমার গান।
রাতের ঐ তীব্র সৌরভে সুরভীত রজনীগন্ধা,সেতো কখনও জানতে পায় না সে তার অগোচরে সারা পৃথিবকে কি সৌরভে জড়ায়! ছড়িয়ে দেয় তার পরশটুকু পরশহীন স্পর্শে। তুমিও তেমনি সৌরভে ভরিয়েছিলে আমার এই হৃদয়।
তোমারি সৌরভে সুরভীত আমি তাই গেয়েছিলাম গান। লিখেছিলাম কবিতা। সেসবই তোমারি অজান্তে তোমারি অবদান। তুমি ছাড়া রচীত হতনা আমার কিছুই।হয়তোবা সত্বাহীন কোনো এক খুব সাধারণ প্রাণীতে পরিনত হতাম এই আমি। আমাকে অসাধারণ করে তুলেছিলে তুমি আমার নিজের কাছেই, তেমনি ধারনা আমার।
বিদায় নেবার সময় এবার হলো,
প্রসন্ন মুখ তোলো মুখ তোলো মুখ তোলো।
জেনেশুনে বিদায়, কেউ কি পারে এইভাবে বিদায় নিতে? সে হয়তো শুধু আমার পক্ষেই সম্ভব। তাই তো করেছিলাম আমি। তবে কবিগুরু শতবর্ষ আগেও কি লিখেছিলেন আমারি কথা? হাহাহা, হাসি পায় আমার। নিজেকে সর্বশ্রেষ্ঠা ভাবাটা আমার আর গেলোনা। ঠিকই বলতে তুমি।
বিদায়, আবারও কঠিন বিষাদময় একটি শব্দ। যতখানি না বিদায় দেওয়া, তার থেকে শতগুণ বেশী বিষাদময় বিদায় নেওয়াটা। সে আমার মত আর কে জানে? তবুও চাই সারাটাজীবন তোমার প্রসন্ন মুখখানিই স্মৃতিপটে গেঁথে রাখতে। তুমিও হয়তো সেটাই চেয়েছিলে। পারলাম না আমি। ক্ষমা নেই আমার সে জানি, তাই চাইনাও ক্ষমা, এই আমি তোমার কাছে।
মধুর মরণে পূরণ করিয়া সপিয়া যাবো প্রাণ চরণে
যারে জানো নাই যারে জানো নাই যারে জানো নাই
তার গোপন ব্যথার নীরব রাত্রী হোক আজি অবসান!!
গোপন ব্যাথা,
কি আমার গোপন সেই ব্যাথা? তুমি কি কখনও জানতে পেরেছিলে? না, সেও আমি জানতে দেইনি কখনও তোমায়, একটা দিনের তরেও। আমার গোপন ব্যাথা, আমারি করে রেখে দিলাম আমি। শেষদিনটি পর্যন্ত জানতে দেবোনা।
জানবে শুধু ঐ দূর আকাশ আর নীরব রাতের তারারা, আমার গোপন ব্যাথার সাক্ষীরা। তোমার চরণেই সঁপেছিলাম আমার এই প্রাণ।
(আবার হিমালয়ের ভাষায় বুক রিভিউ এর মত গান রিভিউ করলাম।
http://www.youtube.com/watch?v=MVmDVRPWRi0
এই গানটা শুনে শুনে চোখের পানিতে বুক ভাসিয়ে।)
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ১:২৭