অনিরুদ্ধ ফিরে এসেছে , না অবনিকে ভালোবাসেনি কোনদিন অনি ।আজ সেই সত্যটা জানাতেই অনির ফিরে আসা ।কিন্তু অবনি ঠিক আগের মতোই ভালোবাসে অনিরুদ্ধকে । না ; কোন ক্ষোভ নেই ,অভিযোগ নেই ,নেই কোন অনুযোগও ।অনি যে জীবনে আরো একবার যোগাযোগ করবে অবনির সাথে সেটা অবনির কল্পনার বাইরে ছিল । অবনি আজ তাতেই খুশি ।
অনিরুদ্ধ চলে যাবার পর অবনি তার জীবনের সব লক্ষ্য ভূলে গিয়েছিল । সব হাসি আনন্দের ইতি টেনেছিল সেদিন,সারাদিন ঘরে বসে থাকা আর গুমরে গুমরে কাঁদাই যেন ছিল অবনির নিত্যনৈমিত্তিক কাজ । এতো কষ্টের মধ্যে থেকেও অবনি কখনো পরিবারের সদস্যদের বুঝতে দেইনি যে কতটা ব্যাথা নিয়ে সে দিন যাপন করছে ।সবসময় পরিবারের সদস্যদের কাছে তার নিয়মিত হাসিটাই উপহার দিত । এতো কিছুর পরও যথেষ্ট পরিমাণ ধৈর্য নিয়ে বেঁচেছিল অবনি ।পরিবারের মানুষগুলি তাকে এতোটা ভালোবাসে যে তার কষ্টের কথা শুনলে তারাও সবাই কষ্ট পাবে,তাই ভেবে অবনি সদা হাস্যোজ্জল থাকতো । সবসময় মুখে এক চিলতে হাসি লেগেই থাকতো অবনির । তাকে দেখে বুঝার কোন উপায়ই নেই যে তার মন কতটা হাহাকার করছে অনিরুদ্ধের জন্য ।
আজ অনিরুদ্ধের ফোনকল পেয়ে অবনি সত্যিই চমকে গেল । কিন্তু অনি আজ আর আগের মতো ফোন করে ই বলেনি "রিমঝিম সোনা ,কেমন আছ তুমি ?তোমাকে ভীষণ মনে পড়ছে "।আজ অনি ফোন করেছে পুরোটাই তার নিজের স্বার্থে ।
অনিরুদ্ধ লাবণীকে ভালোবাসে । লাবণীর সাথে তার মাত্র কয়েকমাসের সম্পর্ক , শুরুটা ফেসবুকের মাধ্যমে হলেও সম্পর্কটা কেবল মোবাইল পর্যন্ত গড়িয়েছিল । বিভিন্ন প্রতিকূলতার জন্যে এর থেকে বেশী দূর এগুনো সম্ভব হয়নি তাদের ।এসব প্রতিকূলতা অতিক্রম করে আরো সামনে যেতে পারতো অনি ,কিন্তু যায়নি পাছে লাবণীর কোন ক্ষতি হয় তাই ।আজ অনেকদিন হয় লাবণীর সাথে কথা হয়না অনির ।কিন্তু সে লাবণীকে কথা দিয়েছে ,সুযোগ মতো তার সব সমস্যার সমাধান করে ঘরে প্রস্তাব দেবে ।আর এই জন্য অবনিকে প্রয়োজন পড়েছে আজ অনিরুদ্ধের ।অবনিকে প্রচণ্ড বিশ্বাস করে অনি ,আর এটাও ভালো করে জানে যে অবনি তাকে কতোখানি ভালোবাসে ! যতোখানি ভালোবাসলে অবনি এরকম একটা কঠিন কাজ করতে পারে অনির জন্য । অনি তাতে মোটেও বিচলিত না ,বরং আজ সে অনেক খুশি । অনি জানে ,অবনি এ কাজে সফল না হওয়া পর্যন্ত ক্ষান্ত হবার পাত্রী না ।
অবনি অনির একটা ফোনকলেই খুশি । সে কি চাইল এ নিয়ে অবনির কোন ভাবনা নেই। অবনি জানে ,একদিন অনিরুদ্ধ ঠিকই বুঝবে যে সে কি ছিল তার জীবনে ।অবনি তার যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে অনির স্বপ্ন পূরণ করার জন্যে । হয়তোবা অবনির পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির উপর নির্ভর করছে সে কতোটা উপকার করতে পারবে অনির ।কিন্তু সে মোটেও ক্লান্তু না এ কাজ করাতে । যেদিন লাবণীকে অনির হাতে তুলে দিতে পারবে সেদিন হয়তো একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবে অবনি ।অনাকাঙ্কিত কিছু কারণে অবনির কাজের গতি আজ অনেকটা কমে এসেছে ।এ নিয়ে অনির উদ্বিগ্নতা ,অস্থিরতা ,অভিমান ,অভিযোগের কোন শেষ নেই ।যে অনির এতো বিশ্বাস অবনির প্রতি ,সেই অনি হঠাৎই আবার ভরসা হারিয়ে ফেলে অবনির উপর ।
যে লাবণী অনিরুদ্ধ কে ভূলে গিয়ে আজ দিব্যি সূখী জীবন যাপন করছে সেই লাবণীর জন্যে অনি কেন এতোটা পাগলপ্রায় তা আজও জানা হয়নি অবনির ।হয়তো কখনো আর জানতেও চাইবেনা এ জীবনে ।যাক ! অবনি আজও স্থিরভাবে বসে নেই । অবনি এখন শুধু সেই দিনটির অপেক্ষায় আছে যেদিন লাবণীকে অনিরুদ্ধের হাতে তুলে দিতে পারবে ।
অবনির পথচলাও সেদিন হয়তো শেষ হবে ,স্বপ্নও সেদিন পুরণ হবে ।সে আবার তার গন্তব্যহীন পথে পা বাড়াবে এক কদম দু'কদম করে . . . . . . . . . . . . . . . . . . !