দুনিয়াতে, দুই ধরনের মেহনত হিসেবে মানুষকে দুই ভাগে বিভক্ত করা যেতে পারে। এক হল তারা, যারা আমার সুন্দর বানাতে চায়। আমার জামাকাপড় সুন্দর আমার ঘরবাড়ি সুন্দর, আমার খাওয়া দাওয়া সুন্দর, আমার শহর সুন্দর, আমার দেশ সুন্দর, আমার! এদেরকে বলা হয় দুনিয়াদার। এর মোকাবেলাই, আল্লাহ তায়ালা আম্বিয়া আলাইহিসসালাম কে পাঠিয়েছেন, মেহনত করতে নিজের উপর যেন আমি সুন্দর হই। আল্লাহ দৃষ্টিতে। এক হল আমার সুন্দর, আর এক হল আমি সুন্দর। আমি সুন্দরের জন্য যে মেহনত ঐটার নামে নেক আমাল। নেক আমালের দারা মানুষ নিজে সুন্দর হয়। তার ঘরবারি সুন্দর হয় না, জামাকাপড় সুন্দর হয়না, নিজে সুন্দর হয়। নেক আমল ওয়ালা আল্লাহর কাছে প্রিয়, কারন আল্লহ তায়ালা নেক আমলকে ভালবাসেন।
ইন্নাল্লহা জামিল উহিব্বুল জামাল…………………………………………..!!!
আল্লাহ সুন্দর, সুন্দরকে ভালবাসেন। আলাহ তায়লার বহুত বড় এহসান, অনুগ্রহ মানুষের উপর,যে আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সুন্দর রুচি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। আল্লহ তায়ালা যেমন সুন্দর কে ভালবাসে, মানুষও সুন্দর কে ভালবাসে। সে জন্য আল্লাহর কাছে যে প্রিও, সে মানুষের কাছেও প্রিও। কারন, যে কারনে আল্লাহ তায়ালা তাকে ভালবাসেন; আচরণের সৌন্দর্য্য, চারিক্রিক সৌন্দর্য্য। ঐ একই কারনে সে মানুষের কাছেও সে প্রিয় হয়। কারন আল্লাহ তায়ালা মানুষকে নিজ রুচি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন।
আমি আর আমার বলতে কি বোঝায় এর পার্থক্য বোঝার জন্য ছোট্ট একটা গল্পজাতিও কথা। একজন মহিলা তার সংসার আরম্ভ করেছে খুব অভাব অনটনের মধ্যে। তার স্বামী অল্প উপার্জন করে। প্রায় গরিব মানুষ বলা যায়। ছোট্ট একটা ঝুপড়ির মধ্যে থাকে। জানালা জাতিও কিছু নেই। চটের কাপড় দিয়ে কোনরকম পর্দা করে থাকে। কিন্তু তার শখ; সবার থাকে- সুন্দর বাড়ি হবে, বড় বাড়ি হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। সবার যেমন শখ থাকে। ক্রমেই আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে সচ্ছলতা দান করলেন। ঝুপড়ি ছেড়ে পরবরতিতে বড় বাড়ির অধিকারি হল। আর যেখানে চট ঝুলানো হল সেখানে হাজার টাকা দামের পর্দা ঝুলে আছে। ভাল কার্পেট, ভাল সোফা, জামাকাপড় ভালো। একদিন; এর মধ্যে অনেক বছর চলে গেছে, ড্রেসিং রুমে, ড্রেসিং টেবিলের সামনে,ভালো ড্রেসিং টেবিল, অনেক রকমের কসমেটিক্স ইত্যাদি আছে। দাড়িয়ে তার চার পাশে, দামি সুন্দর পর্দা, ভালো ফার্নিচার, ভালো কার্পেট- এই সব কিছু দেখে খুব মুগ্ধ হচ্ছে আর এক ধরনের বড় তৃপ্তি । কোথায় ছিলাম আর কোথায় এসেছি। আগের সাথে তুলনা করে বড় ভালো অবস্থা দেখছে। এই কথা ভাবতে ভাবতে আয়নার সামনে তার নিজের চাহারা চোখে পড়ল। তখন আবার মন খারাপ হয়ে গেল। সে যখন ঝুপড়িতে থাকতো, অল্প বয়স, অতি সুন্দরি এক মহিলা ছিল। এখন সে বড় বাড়িতে থাকে। এখন সে বৃদ্ধা। ঐ সৌন্দর্য্য যে কোথায় হারিয়ে গিয়েছে, আর ওটা কোথাও খুঁজে পাওয়ার নেই। তখন দীর্ঘশ্বাস টেনে বললো, একসময় আমি সুন্দর ছিলাম আমার কিছুই সুন্দর ছিল না, এখন আমার সবই সুন্দর হয়েছে কিন্তু আমি আর সুন্দর নেই।
দুটোর মধ্যে একটাকে বেছে নিতে হয়। দুনিয়ার এই যে দৈহিক সৌন্দর্য্য এইটা তো ধরে রাখবার নয়। কেউ রাখতে পারেনি, পারবেও না। কিন্তু আভান্তরিন সৌন্দর্য্য, ঐটা যদি কেউ চায়, চর্চা করে; উন্নত করতে পারে। আর যদি কেও অবহেলা করে, তবে আস্তে আস্তে ঐটা একাবারে খারাপও হয়ে যেতে পারে। আল্লাহ তায়ালা আম্বিয়া আলাইহিসসালাম কে পাঠিয়েছেন দুনিয়ার মানুষকে ঐ মেহনত দিয়ে, যে তাকে সুন্দর বানায়। তার মধ্যে তাকে বেছে নিতে হবে।
বাকিটুকু পরবর্তী অংশে........
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৩:৪১