হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা বাংলাদেশের ইতিহাসে ভয়াবহতম ঘটনাগুলোর একটি। এর আগেও একাধিক জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশে। কিন্তু কোনো একটি হামলায় একসঙ্গে এত বিদেশি নাগরিক হত্যাকাণ্ডের শিকার এর আগে হয়নি। এমনকি জিম্মি ঘটনারও কোনো নজির নেই আমাদের দেশে। হোলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার ঘটনাটি বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি ঘটনা। সারাবিশ্বেও আলোচিত হয়েছে এই হামলা। এ ঘটনার পর দেশি-বিদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তার বিষয়ে সরকারকে বহু প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে। বিভিন্ন দেশ তাদের নাগরিকদের চলাচলে সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দিয়েছে। বিদেশি নাগরিকদের অনেকেই দেশ ছেড়েছেন। পাশাপাশি এই ঘটনা সামাজিকভাবে চাঞ্চল্য ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিয়েছে। দেশের অর্থনীতিতেও বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। এসব প্রভাবের সবকিছুই ধীরে ধীরে কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চলছে। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আগের চেয়ে জঙ্গিবিরোধী অভিযান ও তৎপরতা জোরদার করেছে। কঠোরভাবে জঙ্গি দমনে কাজ করে যাচ্ছে তারা। সূচী ১
পেশাগত দায়িত্বের সূত্রে হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার ঘটনাটি খুব কাছ থেকে প্রত্যক্ষ করার অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে। ১ জুলাই, ২০১৬ তারিখের ভয়াল সেই রাতের পুরোটা সময় ৭৯ নম্বর সড়কের চৌরাস্তায় অবস্থান করতে হয়েছিল আমাকে। সে এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতা। এখানেই শেষ নয়, ওই হামলা-পরবর্তী সময়ে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) তদন্তকালে এ সংক্রান্ত অনেক প্রতিবেদন তৈরি করতে হয়েছে আমাকে। পেশাগত এসব দায়িত্ব পালনের মধ্যেই হঠাৎ একদিন হোলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার বিষয়টি নিয়ে গভীরতর অনুসন্ধান করার বিষয়টি আমার মাথায় আসে। বিশেষ করে অভিযানে অংশ নেওয়া পুলিশ কর্মকর্তা, ভেতরে জিম্মি হওয়া মানুষগুলো আর সেইসঙ্গে আমার নিজের অভিজ্ঞতাগুলো মানুষকে জানানোর তাগিদ অনুভব করি। সেই তাগিদ থেকেই পাঠকের সামনে বই আকারে হোলি আর্টিজানকে তুলে ধরার পরিকল্পনায় স্থিত হই।
ওই পরিকল্পনা থেকেই নেমে পড়ি কাজে। কিন্তু কাজ করতে গিয়ে আমি দিশেহারা হয়ে পড়েছিলাম। এই ঘটনাটি এত বিস্তৃত ও জটিল যে মাত্র ছয় মাসের অনুসন্ধানে এর সব দিক তুলে আনাটা ছিল অসম্ভব। এ ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত প্রতিটি বিষয়ের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ তুলে ধরার জন্য আরও অনেক সময় প্রয়োজন। এই বাস্তবতা থেকেই আমি সুনির্দিষ্ট কয়েকটি বিষয় নির্বাচন করে তার ওপর নিবিড়ভাবে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিই। সূচী ২
যেহেতু এটি একটি তথ্যবহুল লেখা, কখনো কখনো সামান্য একটি তথ্য সংগ্রহ করতেই আমাকে দিনের পর দিন চেষ্টা করতে হয়েছে। তথ্য সংগ্রহ করতে ছুটতে হয়েছে নানা জায়গায়। কোনো কোনো তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে আমার সাংবাদিক পরিচয়কে পর্যন্ত সামনে আনতে পারিনি। নানা ধরনের তথ্যের মধ্যে আমি সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছি প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিজ্ঞতার ওপর। হোলি আর্টিজানের জঙ্গি হামলার ওই রাতে কর্তব্যরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল, ভেতরে যারা জিম্মি হয়ে আটকা পড়েছিলেন তারা প্রতিটি মুহূর্ত কিভাবে পার করেছেন। এসব অভিজ্ঞতাই আমি বিস্তারিত আকারে তুলে আনার চেষ্টা করেছি।
এছাড়া আগাম গোয়েন্দা তথ্যে কি ছিল? নব্য জেমএবি তাদের কার্যক্রম শুরু করে কখন? আইএসের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক কি? তামিম চৌধুরী কখন এবং কিভাবে দেশে এলো? কিভাবে সে অন্যতম মাস্টারমাইন্ড হয়ে উঠলো। এসবও রয়েছে এই বইয়ে।
বইয়ের নাম: হোলি আর্টিজান- একটি জার্নালিস্টিক অনুসন্ধান
প্রকাশক: অন্বেষা প্রকাশন (প্যাভিলিয়ন ১২, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশ)
প্রচ্ছদ: সোহেল আশরাফ খান
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ২৫৬
মূল্য: ৪০০ (২৫% কমিশনে ৩০০)
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:৫৭