আকাশ ঠিক পাতিলের তলার মত কালো।
ভাদ্র মাসের আকাশ এমন থাকার কথা নয়। কোথায় শুভ্র-শান্ত শাদা মেঘের দল এদিক-সেদিক একটু-আকটু উড়া-উড়ি করবে।
তা না; শ্রাবণ মাসের গম্ভীর মেঘ হয়ে বসে আছে।
রণ এর বাসা আজিমপুর গোরস্থানের পূর্ব পাশে, ভাঙ্গা দোতালার গলিটার মাথায়। ঢাকা শহরের রিক্সায়ালাদের নতুন অভ্যাস, আকাশে মেঘ দেখলেই রিক্সা বের করবে না। দু’ একটা যা বের করে তাও কাছে কুলে যাবে না।
মঙ্গল গ্রহে যাবে নয়তো শনি গ্রহে যাবে, এর বাহিরে কোথাও না।
রণ কানে হেড ফোন গুজে , ফেসবুকে ব্রাউজ করতে করতে হেঁটে যাচ্ছে। ফুলার রোডের কাছা-কাছি আসতেই গুড়ি-গুড়ি বৃষ্টি সাথে ঠাণ্ডা ভেজা বাতাস। টাচ স্কিনেও বৃষ্টির দু’ এক ফোটা পড়ল।
রণ বৃষ্টির মধ্যেই হাঁটছে, মাঝে মাঝেই পানির ঝাঁপটা মুখে এসে লাগছে। রণের চা খেতে ইচ্ছে করছে। লেবুর পাতা ছেঁচে দেয়া আগুন গরম লাল চা।
মাঝে মাঝে আলাদিনের দৈত্যরা মানুষের দুই একটা তুচ্ছ কিন্তু আকাঙ্ক্ষিত ইচ্ছা পূরণ করে দেয়। রণের মনে হচ্ছে আজকের দিনটি ঠিক তেমনি একটি দিন।
একটু সামনে গিয়েই মোটামুটি লেভেলের এক চা ওয়ালা মামা কে পাওয়া গেল। আয়েশ করে চা-এ এক চুমুক দিতেই একটু দূরে একটি বাস এসে একটু থেমেই আবার চলে গেল ।
নূপুরের রুন ঝুন শব্দ কানে আসছে।
রণ অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। একটি মেয়ে গুটিসুটি হয়ে বৃষ্টিতে ভিজে হেঁটে আসছে। শাড়ী পড়া, ফিরোজা রঙের শাড়ী।
রণের হঠাৎ মনে হল । এই সে যার জন্য পৃথিবীর সব কিছুকেই তুচ্ছ ভাবা যায় । সব কিছুই তাঁর সামনে মলিন বিবর্ণ।
রণ চোখ বন্ধ করল। বৃষ্টির ফোটা তাঁর মুখে পরছে। সে আকাশের দিকে আবার তাকাল।
মেঘের কালো অবয়বের সাথে মেয়েটির চোখের কতো মিল !
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ ভোর ৪:২৬