ফ্রেন্ডলি ফ্রেন্ডলি খেলা অতঃপর......... পর্ব-১
ফ্রেন্ডলি ফ্রেন্ডলি খেলা অতঃপর......... পর্ব-২
এরপরের ঘটনা হচ্ছে কমলা সুন্দরী আমার খুব ভালো বন্ধু হইসিলো।ওরে দিয়া আমার প্র্যাকটিক্যালের সব খাতা রেডি করসিলাম।আমাকে আক্কেল আলীর দোকানে খাওয়াতো,এটা-সেটা উপহার দিতো আরো কতো কি।

পহেলা বৈশাখ
বন্ধুত্ব জমে উঠার সবচে ভালো উপলক্ষ পহেলা বৈশাখ।সুন্দরী আর আমার মধ্যে আগের দিন স্যারের বাসায় প্ল্যান হয়েছিলো যে যার ফ্রেন্ডদের বিদায় দিয়ে এক সাথে ঘুরতে বের হবো।ভালো কথা।আমি আমার মতো (আমি খুব রাফ এন্ড টাফ সবসময়।কেতাদুরস্ত হয়ে চলতে পারিনি আজ পর্যন্ত)কোনোরকম পান্জাবী পড়ে বের হইসি।
পোলাপানদের বুজুংবাজুং দিয়ে ঠিক ১১টায় প্যারেডে হাজির হলাম।সুন্দরীর জন্য বেশীক্ষণ অপেক্ষা করতে হলো না।আমি দেখলাম একটা ভয়ানক সুন্দর মেয়ে হাসিমুখে আমার দিকে আসছে।আমার যে কি লজ্জা লাগতেসিলো।কাউকে সেটা বলে বোঝাতে পারবোনা।এতো স্মার্ট,সুন্দর মেয়ের সাথে কথা বলার সাহস আমার নাই।শাড়ি পরলে বাঙ্গালী মেয়েদের যে ভয়ঙ্কর সুন্দর লাগে সেটা লাইফে প্রথমবার উপলব্দি করতে পারলাম।ও যখন আমার সামনে এসে দাড়িঁয়েছে তখন আমি হাটুঁতে জোড় পাচ্ছিলাম না।আমার হাত দুটো কোথায় লুকিয়ে রাখবো বুঝতে পারছিলাম।নিজেকে বড্ড বেখাপ্পা এবং অচল মনে হচ্ছিলো।কিছুক্ষণ পর স্বাভাবিক হওয়ার পর আমি বেকুবের মতো শুধু সুন্দরীর দিকে তাকিয়ে ছিলাম।বিকেল পর্যন্ত পাহাড়,সমুদ্র সব জায়গায় ঘুরে বেড়ালাম।সবাই আমাদের দিকে তাকিয়েছিলো।আমার অনেক লজ্জা লাগছিলো।সবার চাহনি দেখে মনে হচ্ছিলো ওরা মনে মনে ভাবছে "কি এক আনস্মার্ট,আগলি ছেলের সাথে কতো সুন্দর মেয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে"।
সেদিন সুন্দরীর চুড়ি পরা হাত ধরেছিলাম।
----আচ্ছা আমার হাতের চুড়ি গুলো কেমন হয়েছে?(হাত নাড়িয়ে চুড়ির রিনিজিনি শব্দ করে বললো)
----হুম!!অনেক ভালো।
----তোমার চুড়ি পরা হাত ধর্তে ইচ্ছে করে না?
----হুম করে।
----সুন্দরী হাত বাড়িয়ে দিলো।
-----সকালে সুন্দরীর সাথে দেখা হওয়ার পর থেকে আমি নরমাল অবস্থায় ছিলাম না।তাই নিজের অজান্তেই সুন্দরীর বাড়িয়ে দেয়া হাত ধরলাম।চুড়ি পরা হাত্ ধরতে অনেক ভালো লাগে।এই অনুভূতি ভাষা দিয়ে প্রকাশ করার নয়।সমুদ্র তীরে সুন্দরীর পাশে হাত ধরে বসেছিলাম।বাতাসে ওর চুলগুলো আমার মুখে এসে পড়ছিলো।সুন্দরীর চুল অনেক মিস্টি সুগন্ধীময় ছিলো।
সারাদিন বেড়ানোর পর এবার বাড়ীর ফেরার পালা।সুন্দরীর আবদার ওকে ফুল কিনে দিতে হবে।অনেক খুজেঁ একটা ফুলের দোকান থেকে গোলাপ ফুল কিনে দিলাম।
অতঃপর............
ফার্স্ট ইয়ার রেজাল্টে আমি সব সাবজেক্টে ফেল

আমার হিটলার আম্মাজান আমারে এমন দাবরানী দিসিলো কি আর বলবো সেকেন্ড ইয়ারে আমার পড়ালেখা ছাড়া উপায় ছিলো না।পুরা জেল খানায় বন্দী ছিলাম।অনেক কাহিনী করে সুন্দরী আমার সাথে দেখা করার জন্য আমার বাসায় এসে হাজির হইসিলো।আম্মাজান এমন দাবড়ানী দিসে

সুন্দরী চাপ্টার ক্লোজ হয়ে গেসে।

পরে শুনেছিলাম সুন্দরী ইন্টারে আশানুরুপ রেজাল্ট করতে না পারার জন্য আমাকে দায়ী করতো।কিছুদিন আগে রাশেদ আমাকে ফেসবুকে খুজেঁ বের করেছিলো।রাশেদ মনে করে আমি সুন্দরী মাথায় ভাই-বোন থিউরি বলে কয়ে ডুকিয়ে না দিলে হয়তো সুন্দরীর ভালোবাসা ওর পাওয়া হতো(মেসেজে রাশেদ বলেছে এই ব্যাপার নিয়ে কোনো আফসোস নাই জাস্ট কিডিং)।সুন্দরী এখন বিবাহিত।রাশেদ দেশের বাইরে থাকে।আর আমি এখনো সেই নষ্ট এবং নিঃসঙ্গ ছেলেটাই রয়ে গেছি।আমি সুন্দরীকে ভালোবাসতাম কিনা জানি না।আমি ওকে কখনো মিস করিনি।তবে রাশেদের সাথে এক ধরণের চ্যালেঞ্জ ছিলো (নিজের অজান্তে)।সুন্দরীর সাথে সময় কাটাতে ভালো লাগতো।আর কি বলবো জানি না।শুধু এটুকু জানি আমি আমার লাইফের একমাত্র মেয়ে বন্ধুটিকে এখনো মিস করি।ভার্সিটি লাইফে এসে শুনেছিলাম সুন্দরী আমাকে ভালোবাসতো।কিন্তু আমি তখন অন্যভূবনের মানুষ তাই কখনো ওর সামনে গিয়ে দাড়াঁনো হয়নি।দাড়াঁলেই বা কি!!!! আমি জানি না ওকে আমি লাইফ পার্টনার করার মতো ডিসিশন নিতে পারতাম কিনা?!
তবে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি ছেলে-মেয়ে আর যাই হোক বন্ধুত্ব হওয়া সম্ভব না।ছেলেমেয়ের রিলেসনশিপে একটাই ধ্রুব সত্যি ফ্রেন্ডলি ফ্রেন্ডলি খেলা অতঃপর.........
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৯