নিস্তব্ধ রাতে,
যখন যান্ত্রিক জীবনের ব্যস্ততা শেষে
নগরের সকল মানুষের মধ্যে ক্লান্তির
অবসান ঘটিয়ে নামে নিদ্রার আভাস,
তখন নগরে একাকী জেগে আমি
আমার জীবনে নেমে আসে না,
ক্লান্তির শেষে একটুখানি তন্দ্রাবিলাস।
সারাদিনের ব্যস্ততা আর বেঁচে থাকার
সামান্য প্রয়াসে
মলিন হয়ে গেছে আমার মত
মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষের মুখের হাসি,
ভাবতে এখন কষ্ট হয়,
হায়!জীবন আমাকে যতটা না দিয়েছে
নিয়েছে তার চেয়ে অনেক অনেক বেশী।
মনে পড়ে বন্ধুদের
সাথে মাতিয়ে তোলা সে সব সন্ধ্যা
হঠাত্ হঠাত্ গেয়ে ওঠা অচেনা কোনো গান,
কখনো কখনো বিষাদে ভেঙ্গে পড়া
কখনো আবার কঠিন কোনো অভিমান।
নেই সেই আগের পাগলামো গুলো
নেই সেই আনন্দ বিষাদের সুরতহাল,
উল্লাসের সেই দিনগুলোকে
গ্রাস করেছে মহাকাল।
জীবনযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছি আমরা সবাই,
অতীতেরে আঁকড়ে ধরে পড়ে থাকার সময়
কই?
মাঝে মাঝে আনমনে হেঁটে যাই একলা পথে,
কোনো এক বন্ধুর দেখা পাওয়ার আশায়
চোখ মেলে রই।
ঘর সাজানোর স্বপ্ন ভুলে
ঘর বানানোর স্বপ্নে যখন
বিভোর আমার আঁখি,
ব্যয় বহুল এই জীবনযাত্রায়
নিজের খরচ মিটিয়ে তখন
ঋণের বোঝা টানতে থাকি।
ছিন্ন করে এই বন্দী শেকল
ছুটে যেতে ইচ্ছে করে অতীতের স্বপ্ন
রাঙা দিনে
যেখানে নেই কোনো ঋণের বোঝা,
নেই কোনো ধার কিংবা দেনা ;
পারি না যেতে অতীত পানে
পড়ে থাকি এই ইট কাঠের খাঁচায়,
যেখানে রোজ চলে লাখো মানুষের
স্বপ্ন বেচা-কেনা।
যেতে পারিনা আমি বর্তমান ছেড়ে
পারিনা লুকিয়ে রাখতে এই দীর্ঘশ্বাস,
শঙ্খনীল কারাগারে বন্দী আমি
শঙ্খের মধ্যেই সীমাবদ্ধ
আমার বসবাস।