প্রোফেশনাল মাস্টার্স কোর্সে আমাদের সাথে "ডি" নামে একটা ছেলে পড়ত। সে ছিল বেশ মোটা আর কালো।
একদিন এক স্যার হঠাৎ তার কাছে জানতে চাইলেন তার এই স্বাস্থ্যের রহস্য। 'ডি' বলা শুরু করল তার স্বাস্থ্য এবং ত্বকের রং এর গুরু রহস্য কাহিনী। সে যখন অনেক ছোট ছিল একদিন গ্রামের বাড়ির পুকুরে সাঁতার কাটতে যেয়ে পানিতে ডুবে গেল। তার এক মামা একটু দুরে দাড়িয়ে ছিলেন, উনি লক্ষ্য করে আসতে আসতেই ডি পুরা পুরি পানির নিচে। একপর্যায়ে খেয়াল করল সে পুকুরের মাটি স্পর্শ করেছে। বাচাঁর জন্য যখন হাত পা নাড়া চাড়া করছে, কিছু পুকুরের মাটি খেয়ে মুখে ঢুকে গেল, যা তার গিলে ফেলা ছাড়া আর উপায় ছিলনা। এই যখন অবস্থা ঠিক তখন তার বীর মামা তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে ডাঙ্গায় আনতে সক্ষম হলেন। এই ঘটনার সময় ডি নাকি খুব হালকা পাতলা আর ফর্সা ছিল। কিন্তু পুকুরের মাটি খাবার পরবর্তি এফেক্ট হিসেবে সে মোটা হওয়া শুরু করল, যা এখনও হয়ে যাচ্ছে। সেই পুকুরের মাটি এতই উর্বর ছিল যার কার্যকারিতা এখনও তার শরীরে বিদ্যমান। আর তার শরীরের রং হয়ে গেল সেই পুকুরের মাটির রং। এই কাহিনী শুনে আমারে গিনিস বুক অফ রেকর্ডের কতৃপক্ষকে খবর দেবার তীব্র ইচ্ছা হয়েছিল কিন্তু ঠিকানা জানা না থাকায় তা আর হয়ে উঠেনি।
পাস করার পরপরি ডি বিয়ে করে। আমি, ডি সহ আরো তিনজন একি প্রাইভেট ব্যংকে জয়েন করি। একদিন ডি কে ফোন করলাম অফিসিয়াল কাজে। বিভিন্ন কথার পর তার কাছে জানতে চাইলাম বউয়ের খবর। সে তখন খুশি হয়ে বলল, সে প্ফাদার (ডি এর উচ্চারন এমনি ছিল) হয়েছে। আমি খুবি অবাক হয়ে জানতে চাইলাম, বিয়ে হয়েছে মাত্র তিন মাস আর এর মধ্যেই প্ফাদার!! তখন জানাল যে, সে অনুমান করছে তার ওয়াইফ কনসিভ করেছে কিন্তু এখনও ডাক্তারের কাছে সিওর হবার জন্য যায়নি। আমি আর জানিনা সত্যি সত্যি ডি সেবার প্ফাদার হয়েছিল কিনা, কারন আমি সেই ব্যাংকে বেশিদিন চাকরি না করায় তার সাথে আর যোগাযোগ হয়নি। কয়দিন আগে জানতে পারলাম ডিও ব্যাংক বদলে একটা বিদেশি ব্যাংকে জয়েন করেছে।
সেই প্রাইভেট ব্যাংকে থাকা কালীন একটা এক মাসের ফাউন্ডেশন কোর্স করেছিলাম। সেই মাসটাতে খুবি গরম ছিল আর এই গরমে ডি প্রতিদিন টাইট শার্ট (নাকি শরিরের কারনে টাইট) আর টাই পড়ে আসত। অর্ধেক ক্লাস যেতে না যেতেই দেখতাম ডি গরমে হাঁসফাঁস করছে, তাও টাই খুলতনা, হাজার হোক সে হল এছমার্ট বয়।
খুব জানতে ইচ্ছে হয়, এখনো কি ডি এমন সব অদ্ভুত গল্প করে যাচ্ছে!! আর এখন তো বিদেশী ব্যাংক, নিশ্চই গর্বের সাথে গলায় টাই ঝুলিয়ে অফিস করছে। ডি এর নতুন বলা গল্প কারো জানা থাকলে জানতে চাই ।