somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পায়ে হেঁটে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম- চতুর্থ পর্ব

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পায়ে হেঁটে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম- প্রথম পর্ব
পায়ে হেঁটে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম- দ্বিতীয় পর্ব
পায়ে হেঁটে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম- তৃতীয় পর্ব

হেল দ্য হাইওয়ে
চতুর্থ পর্বঃ ...আড়ালে

স্নিগ্ধতায় বিমুগ্ধতা নিয়ে চোখ মেললাম বাইরের মেঘলা আসমান পানে। আজ আমার অভিযাত্রার চতুর্থ দিন। সেই ‘কবে’ বেরিয়েছিলাম... কত দিন দেখি না কোন চেনা মুখ, শুনি না চেনা কণ্ঠের ধ্বনি। ‘ঘর ছাড়ার’ প্রায় হল ৭১ ঘণ্টা। হাঁটতে হাঁটতে এখন আমি নিজ জেলার শেষপ্রান্তে। একটু পরেই বিদায় নেবে কুমিল্লা। বৃষ্টিভেজা রাতের শেষে অর্ধসিক্ত মহাসড়কে যখন নামলাম তখন সকাল ঠিক সাড়ে ছয়টা। আমার পথের সব পুরাতন সঙ্গীরা আবার এসে জুটল। গতি দানবেরা, কঠিন অ্যাস্ফাল্ট, দু’ধারে পুরাকালের নীরব পাদপ, বা’পায়ের সেই নাছোড় যন্ত্রণা, মেঘের আড়ালের নীল আসমান... সব, সব এসে ভিড়ল আবার। সাথে আরো একজন আসলো আজকের ৩ জুনের বৃহস্পতিবারের সকালেই... ডান পায়ের হাঁটুর কুঁচকিতে মাসল পুল।

যাত্রা শুরুর দুই মিনিটের মধ্যে (৬:৩২) দিনের প্রথম কিলোমিটার পোস্ট থেকে জানলাম, ঢাকা ১৪০ কিলো তফাতে রেখে চট্টগ্রাম ১২২ কিলো সামনে অপেক্ষমাণ। একে তো বা’পায়ে যথারীতি ব্যথা; তার উপর একটু আগে যুক্ত হয়েছে ডান পায়ে মাসল পুল। ব্যাপারটা আমার মধ্যে কেন যেন কোন ভাবান্তর ঘটালো না। আগেরবারের মতো চোখে পানি আনালো না। অসহায়বোধ করালো না কিংবা “চট্টগ্রাম না, অমুক হবে আমার লক্ষ্য”- এমন কোন সান্ত্বনাবাণীও এবার আপ্তবাক্য করলাম না। ব্যাপারটাকে জাস্ট একটা মামুলি ফ্যাক্ট মনে করে হাঁটতে লাগলাম। প্রতিটা পদক্ষেপ যেন সময়ের গতিময়তায় আরো দৃপ্ত হতে লাগলো। আর এরকম একেকটা দৃপ্ত পদক্ষেপ নিয়ে নিয়েই এক সময় বিদায় দিলাম কুমিল্লাকে... প্রবেশ করলাম ফেনীতে। সময় তখন ৬টা বেজে ৪৮ মিনিট। কুমিল্লার পথে পথের সেই সব স্মৃতি মনে করলে আজো মাঝে মাঝে কেমন যেন হয়ে যাই। পিছনের পাতা উল্টানোর এই রোমন্থন আমাকে আবেগে আপ্লুত করে না; বরং অন্য রকম এক অনুভূতি তৈরি করে মনের মাঝে। কিভাবে যে বলি, “অন্য রকম” সেই অনুভূতির সংজ্ঞাটা...

সাতটা বাজতে তখন আর মাত্র মিনিট পাঁচেক বাকি। আরেকটা কিলোমিটার পোস্ট চোখে পড়লো আর তাতে লিখা তথ্য পড়ে আমার চোখ কপালে উঠলো! চট্টগ্রাম আর ‘মাত্র’ ১০৩ কিলো দূরে! তাহলে যে একটু আগে দেখলাম যে সংখ্যাটা সেটা কি! মাত্র ২৩ মিনিটে আমি ১৯ কিলো পথ পাড়ি দিয়ে এসেছি!!! কেন এমন হল এটা বুঝলাম ফতেহপুর বিশ্বরোড রেলক্রসিং পার হবার কিছু পরে। আসছি সেই কথায়। উত্তর-দক্ষিণে আপাত চলমান মহাসড়ককে বায়ু-অগ্নিকোণে এসে দু’ভাগ করে দেওয়া ফতেহপুর রেলক্রসিং জায়গাটা অনেক সুন্দর। আমি থামলাম। রেলক্রসিঙের একপাশে একটা ছোট্ট পাকা ঘর। ওখানে থাকে এই ক্রসিঙের লাইনম্যান মোহাম্মদ মকবুল হোসেন। বসে বসে গল্প করছি এমন সময় হঠাৎ ঘণ্টা বেজে উঠলো। ট্রেন আসছে। মকবুল হোসেন বললেন, চাঁদপুর থেকে একটা আন্তঃনগর এক্সপ্রেস আসছে। মহাব্যস্ত মহাসড়ককে থমকে দেওয়া হয়েছে। দু’ধারে জমে গেছে গাড়ির সারি। সবার দৃষ্টি একটা নির্দিষ্ট দিকে। হাতে ক্রনিকল নিয়ে আমি বসে আছি রেললাইনের পাশের কাঠের একগাঁদা পাইলের উপর। ৭:৫৯ মিনিটে হর্ন বাজাতে বাজাতে আমাকে অতিক্রম করে চলে গেলো মেঘনা এক্সপ্রেস। গন্তব্য আমার মতোই- চট্টগ্রাম। দূর আড়াল থেকে এসে আবার দূর আড়ালেই মিলিয়ে গেলো সে।

ফতেহপুর রেলক্রসিংয়ে আমি প্রায় আধ ঘণ্টার মতো ছিলাম। ওহ, একটা কথা বলতে তো ভুলেই গেছি। সেই বিস্ময়মাখা ভূতুড়ে কিলোমিটার পোস্ট দেখার পরই আমি ঢুকেছিলাম এক হোটেলে, সকালের নাস্তা করবো বলে। সেখান থেকে জানতে পারলাম, এই হোটেলের পাশ দিয়ে আগে এক সড়ক ছিল। অনেক আগের সেই সড়কই নাকি আজকের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ছিল। কিলোমিটার পোস্টগুলি এই প্রাক্তন মহাসড়ককে ভিত্তি করে বসানো। কিন্তু এখন অনেকটা কমিয়ে আনা হয়েছে এই সড়কের দৈর্ঘ্য। আর যেখান থেকে এই নতুন পথের শুরু সেখানেই ছিল আমার দেখা সেই ভূতুড়ে কিন্তু সংশোধিত আসল কিলোমিটার পোস্ট। পরে আরো জেনেছিলাম, মহাসড়কের এই পুরাতন অংশটি ঐতিহাসিক ও বিখ্যাত শের শাহের গ্র্যান্ড ট্র্যাঙ্ক রোডের (GT Road) সাথে সংযুক্ত। ফতেহপুরের পরে একটা রোড ডিভিশন ছিল। মহাসড়ক থেকে বা’দিকে চলে যাওয়া সেই সড়কটিই আড়াই হাজার কিলোমিটারের ঐতিহাসিক প্রাচীন গ্র্যান্ড ট্র্যাঙ্ক রোডের কিছু অংশ যা পূর্বে বাংলাদেশের বন্দরনগরী চট্টগ্রাম থেকে শুরু হয়ে পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া, উত্তর ভারত ও পাকিস্তানের লাহোর দিয়ে সুদূর পশ্চিমে আফগানিস্তানের কাবুলে গিয়ে শেষ হয়েছে। আসলে দক্ষিণ এশিয়ার সাথে মধ্য এশিয়ার সংযোগকারী এই মহাসড়কেরই একটা অংশ আমার এই ট্র্যাক ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ে (N1)। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় পথের দৈর্ঘ্য কমানোর জন্য মূল ট্র্যাঙ্ক রোডকে জায়গায় জায়গায় বিচ্ছিন্ন করে আবার মেলানো হয়েছে। অতএব আমি হাঁটছি সুপ্রাচীন এক পথের উপর যা হাজার বছর ধরে অগণিত জনের পদচারণায় সমৃদ্ধ হয়ে আছে। ঐতিহাসিক এই উত্তরপথের কিছু অংশ সভ্যতার অগ্রযাত্রার খাতিরে আড়াল হয়ে গেলেও সিংহভাগ আজো রয়ে গেছে এবং থাকবে...

দুই পায়েই যন্ত্রণার মাত্রা বেড়ে গেছে। কিন্তু ব্যাপারটাকে আমি সেরকম পাত্তা দিচ্ছিলাম না। সে কারণেই কিনা, মাত্রাটা সহনীয় পর্যায়ে ছিল; অথবা আমার সহ্য ক্ষমতা বেড়ে গিয়েছিল। আমার মধ্যে অন্যরকম এক নিষ্ঠুর ও বেপরোয়া ভাব চলে আসছিল এবং ক্ষণে ক্ষণে তা প্রকাশও পাচ্ছিল। এমনিতে তো মহাসড়কের মূল অংশ যেখান দিয়ে যানবাহন চলাচল করে তার এক কিনার দিয়ে পথ চলি আর মাঝে মধ্যে বাস-ট্রাকের জন্য পথ ছেড়ে নেমে আসি। কিন্তু আজ সেরকম কাজ একেবারেই করছিলাম না বলা চলে। একটা ছোট্ট উদাহরণ বড় করে দিই, সাধারণত পাঁট, পান ও কাঠবোঝাই ট্রাক সড়কের ঠিক মাঝখান দিয়ে চলে; তাদের চলতে হয় ভারসাম্য রাখার জন্য। এদের এই পদ্ধতিকে অন্য সবাই মেনে নিয়ে চলাচল করে। এইসব ট্রাককে ওভারটেক করা একটু কঠিন। বড় বড় বাসগুলো যখন এদের ওভারটেক করতে যায় তখন অনেক সময়ই বেশ ঝুঁকি নিয়ে কাজটা করে। এটা করতে গিয়েই বেশীরভাগ দুর্ঘটনাগুলো ঘটে। আমার পথচলার সাথে এই পান-পাঁটের উদাহরণ টানার কারণ হল- এইসব ক্ষেত্রে যে ডেয়ারডেভিল ওভারটেকিংগুলো হয় সেখানে অনেক সময় বাসগুলো এমনভাবে লেন পরিবর্তন করে যেটা রীতিমত পিলে চমকানোর মতো। সুমসাম নীরব মহাসড়কের নিরীহ বাঁক। হঠাৎ বলা নেই কওয়া নেই একই দিক থেকে দুই লেন জুড়ে দুইটা গতিদানব ছুটে আসছে আমার দিকে। মাতালের মতো একটা আরেকটাকে হারানোর চেষ্টায় দিশেহারা। অন্য সময় হলে দেখা যেতো যে, আমি আমার ট্র্যাক (Track) থেকে নেমে গেছি পাশের সরু মেঠো পথে; কিংবা থেমে গেছি তাদের মাতলামি দেখতে। কিন্তু আজ কোন থামাথামি ছিল না কোথাও। ওরা ওদের মতো মাতলামি করেছে আর আমি আমার মতো পথ চলেছি একটুও না নেমে। দেখা গেছে অনেক বাস-ট্রাকই আমার ঠিক এক ফুট কি দুই ফিট দূর দিয়ে চলে গেছে। সাথে এক রাশ দমকা বাতাস ক্ষণিকের জন্য আমাকে ধীর করে দিলেও থামিয়ে দিতে পারছিল না। পরিষ্কার বুঝতে পারছিলাম, আমি বদলে যাচ্ছি; এমনভাবে যেভাবে আমি আগে কখনোই বদলাইনি। নিজের চেহারাটা একবার আয়নায় দেখতে হবে। সেই যে বেরিয়েছি, এখন পর্যন্ত আয়নায় নিজেকে দেখতে পারিনি।

৯:০১ মিনিটে ফেনী সদরে পৌঁছলাম। জায়গার নাম মহীপাল। আমার ছোট ভাই রাশেদুলকে ফোন দিলাম। ওর বুদ্ধি নিয়ে মহীপাল বাসস্ট্যান্ডের চৌরাস্তার এক ফার্মেসি থেকে Moov অয়েন্টমেন্ট কিনলাম ডান পায়ের পাসল পুল সামাল দেওয়ার জন্য। কারণ Penrif দিয়ে এই ব্যথা কমানো যাচ্ছিলো না। ডাঃ তাপসকে ভয়ে আর ফোন দিইনি। একে তো ওনার সদুপদেশ না শুনে হাঁটা থামাইনি, তার উপর যদি শোনেন যে, ওনার প্রেসক্রিপশনের মধ্যে পেনরিফটা কেবল মনে ধরেছে তাহলে হয়তো উনি আমার উপর রাগান্বিত হতে পারেন। হয়তো সাজেশনই দিবেন না। ওনার মতে এবং ওনার এই মতটা আমিও মনে করি যৌক্তিক ছিল যে, এভাবে হাঁটাটা আমার জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু আমার ভিতর যে নেশা চেপে বসেছে, যে জেদের বীজ সাহসিকতার বৃক্ষ হয়ে ধীরে ধীরে মহীরুহ হচ্ছে তাকে দমাবে কে? কোন সে জন আছে যে আমার মনকে এখান থেকে ক্ষান্ত করে শান্ত করবে?

৩১ মিনিট ফেনী সদরের এদিক সেদিক ঘুরলাম। সবুজ নিসর্গের মাঝে নির্মেঘ নীলাকাশের নিচে হাইওয়ের অদূরে যে নিভৃত গ্রাম তার সাথে সদর কিংবা শহরতলীর কৃত্রিম কোলাহল ও শশব্যস্ততার অনেক তফাৎ। এখানে মানুষ আসে স্বার্থের নিরিখে অথচ ঐ দূর গাঁয়েই তার নিঃস্বার্থ বসবাস। অনেক বৈপরীত্য চোখে পড়ে মহাসড়কের ধারে কিনারে, আনাচে কানাচে, পথের বাঁকে, অজানায়, আড়ালে। ৯:৫৮ মিনিটে ফেনীর লালপুলে এসে পৌঁছলাম। চট্টগ্রাম আর মাত্র ৯৪ কিলোমিটার দূরে। একেকটা কিলোমিটার পোস্টের নীরস, নিরেট স্ল্যাব অতিক্রম করছিলাম আর আমার ভিতরের উত্তেজনা চক্রবৃদ্ধিহারে বাড়ছিল। সেই সাথে বাড়ছিল পথচলার গতি। প্রতি কিলোমিটার যেতে বারো কি তেরো মিনিট লাগছিল। সর্বাঙ্গের যন্ত্রণা চিন্তার এক কোণায় রেখে দিয়েছিলাম। এভাবেই হাঁটতে হাঁটতে চলে আসলাম লেমুয়ায় অবস্থিত সড়ক ও জনপথের পরিদর্শক বাংলোর কাছাকাছি। আমার ক্যাসিও ঘড়িতে তখন ১১ বেজে ২১ মিনিট। মিনিট চারেক পরেই খুব সুন্দর নামের এক নদী পার হলাম- কালীদাস পাহালিয়া। লেমুয়ায় সাত মিনিট বিশ্রাম নিলাম। আগেও বলেছিলাম এখনো বলছি, এটা আমার জীবনের প্রথম সলো এক্সপেডিশন ছিল। পথের অনেক ডিটেইলস আমার ক্রনিকলে আসেনি, অভিজ্ঞতার অভাবে আনতে পারিনি। মূলত আমি সীমাবদ্ধ ছিলাম কিলোমিটার পোস্টগুলির বর্ণনায়। যদিও দিনকে দিন আমার বিস্তারিত বর্ণনার মাত্রা বাড়ছিল; কিন্তু তাও নেহায়েত সামান্যই ছিল। অবশ্য এই সীমাবদ্ধতাগুলো আমার পরবর্তী এক্সপেডিশনগুলোতে শুধরে উঠতে থাকে। বর্ণনায় আসে পুঙ্খানুপুঙ্খতা। তবে একটা কথা নিরেট, নিখাদ সত্য- চট্টগ্রাম এক্সপডিশনে আমার অভিজ্ঞতার ঘাটতি থাকতে পারে; কিন্তু সততার ঘাটতি এক কণা পরিমাণও ছিল না।

ফেনীর ফাজিলপুরে এখন আমি। ১২:২৫ মিনিট বাজে তখন। মহাসড়কের বা’দিকে নেমে একটা ছাউনির নিচে গিয়ে বসলাম। বসে আছি, জুতা খুলে পায়ের অবস্থা দেখছি। পায়ের পাতায় আর আঙুলের ফাঁকে ফাঁকে কয়েক জায়গায় পানি জমে গেছে, কোথাও কোথাও সেটা ফেটে চামড়া ছড়ে গেছে। চলার সময় এই ব্যথাগুলো কম অনুভূত হয়, এখন যেটা মারাত্মকভাবে বহুগুণে বেড়ে গেছে। এই ক্ষত হয়ে যাওয়া জায়গাগুলোতে না কোন মলম লাগানো যাবে, না যাচ্ছে ব্যান্ডেজ বাধা। এখন কেবল একটাই কাজ- যন্ত্রণা মেনে, সহ্য করে হেঁটে যাওয়া। সামনের সময়গুলোর হিসাব মেলাচ্ছিলাম এমন সময় মোটর বাইকে করে এক যুবক বয়সী ছেলে আসলো। স্থানীয় আওয়ামী লীগের উঠতি নেতা। নাম আরিফ। আমাকে দেখে গতানুগতিক প্রশ্ন করলো এবং আমার কাছ থেকে স্বভাবসুলভ উত্তরও পেলো। কিন্তু উত্তর পেয়ে বেচারার মুখের পিকচার বদলে যেতে লাগলো। সন্দেহের চোখে বিস্ময় জাগতে লাগলো। কঠিন মুখে শিশুসুলভ আগ্রহ প্রকাশ পেলো। উঠতি নেতা সুবোধ ভক্তে পরিণত হল। আমি এখনও যখন তাকে ফোন দিই সে সেই আগের মতো উচ্ছ্বাস নিয়ে আমাকে তার ওখানে একবারের জন্য হলেও ঘুরে যাবার অনুরোধ করেন। আমার এই পথের বন্ধুদের সংখ্যা যেমন অনেক, তেমনি তাদের বৈচিত্র্যময় ধরণও ব্যাপক। সেনা অফিসার থেকে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, জমিদার থেকে পথের ফকির, ছাত্র থেকে শিক্ষক, পুলিশ অফিসার থেকে বিচ্ছিন্নতাবাদী চরমপন্থি- সবাই আছে আমার এই বিশেষ বন্ধুত্বের তালিকায়।

ফেনীর যে অংশ দিয়ে এখন হাঁটছি সেটা রেল লাইনের সমান্তরালে চলছে। জায়গাটা ফাজিলপুরের আলীনগরে। হাঁটছি সামনে কিন্তু দৃষ্টি পাশের রেল লাইনে। এমন সময় হঠাৎ শুনি এক বিকট শব্দ। সামনে তাকিয়ে দেখি, পিছন থেকে এক ট্রাক সামনের একটা বাসকে সজোরে ধাক্কা মেরেছে। ভাগ্য ভালো যে, ধাক্কাটা মুখোমুখি লাগেনি। ঘটনার সূত্রপাত মুহুরী ব্রিজের একটু আগে। এমনিতে ফাঁকাই ছিল মহাসড়ক। ধাক্কা লাগার পর কোথা থেকে যেন একগাঁদা লোক দৌড়ে যাচ্ছে ঘটনাস্থলের দিকে। আর আমার তো ওদিকেই যেতে হবে কারণ ঐ পথেই তো আমার পথ। মিনিটের মধ্যে পৌঁছে গেলাম ঘটনাস্থলে। পিছন থেকে ধাক্কা মেরে ট্রাকের নিজেরই সামনের চাকা খুলে গেছে। সাথে লাপাত্তা তার ড্রাইভার ও হেলপার। ঢাকা মেট্রো ব ১৪-০৮২৩ নম্বর প্লেটের শাহী পরিবহনের বাসটির তেমন কোন ক্ষতি হয়নি। প্রাণহানি ছাড়াই কেটে গেলো একটা ফাঁড়া। আমি যখন ঘটনাটির বর্ণনা তুলছিলাম তখন অনেকেই আমাকে সাংবাদিক মনে করেছিল। কিভাবে কি হল, কার দোষ কত, কি লিখবো আর কি লিখা ঠিক হবে না- এইসব ব্যাখ্যা করছিল কেউ কেউ। বাকিরা ছিল নিজেদের মধ্যে ফিসফিসে ব্যস্ত। সোয়া একটায় ঘটা এই দুর্ঘটনা পিছনে ফেলে ১:২১ মিনিটে আমি মুহুরী নদীর উপর নির্মিত সেতুতে উঠলাম। তিন মিনিটে পার হলাম নাতিদীর্ঘ সেতুটি।

আজ সারাটা সকাল মোটামুটি মেঘাচ্ছন্নই ছিল। হঠাৎ কোথা থেকে যেন একরাশ ঠাণ্ডা বাতাস আসা শুরু করলো। মুহূর্তে আমার সব কষ্ট মিলিয়ে গেলো সর্বাঙ্গ জুড়ে থাকা ঘামের সাথে। পথ চলছিলাম সেই গতিতে। মাথার উপর দিয়ে কালো মেঘ এসে ঢেকে দিচ্ছিলো উপরের শুভ্র আসমানকে। এক অসামান্য সুন্দর দৃশ্য। আমি হাঁটছি আর আমারই সাথে সাথে আমার সমান্তরালে দৌড়ে যাচ্ছে কালো মেঘের দল। কেন যেন মনে হল, নিসর্গের এই অপার সৌকর্য কোথাও স্থির হয়ে না বসে দেখলে অনেক বড় কিছু মিস হয়ে যাবে। রাস্তার বা’দিকের এক ফিলিং স্টেশনে গিয়ে বসলাম। প্রকৃতির ফটোশপে সহসাই কমিয়ে দেওয়া হয়েছে যেন দিনের উজ্জ্বলতা; সাথে দিয়ে দেওয়া হয়েছে ঝিরি ঝিরি বৃষ্টির ধারা। না, এখন আর বসে থাকা যাচ্ছে না। বৃষ্টির বেগ বাড়ছে ধীরে। একসময় তা মুষলধারে রূপ নিলো। আমি রাস্তা পার হয়ে স্থানীয় এক ইট ভাঁটার অফিসে আশ্রয় নিলাম। পুরোই ভিজে গেছি। চুপচাপ বসে আছি অফিসে। পরিষ্কার, শুদ্ধ বাংলায় আমার পরিচয় জানতে চাইলেন সেই ইট ভাঁটার ম্যানেজার গোছের পরিপাটি চেহারার চশমা পরা লোকটি। দুপুরে খেয়েছি কিনা জানতে চাইলে আমি উপরে-নিচে মাথা নাড়লাম। ভিতরের রুমে দুপুরের খাবারের আয়োজন চলছে। কয়েকজন শ্রমিক সেই নিয়ে ব্যস্ত। বাইরে সেই ঝুম বৃষ্টি। কড় কড় করে মেঘ ডাকছে। হঠাৎ ভিতর থেকে এক কিশোর বয়সী ছেলে এসে আমাকে তাদের সাথে খাওয়ার অনুরোধ করলো। তার অনুরোধে ছিল এক করুণ সুর, “ভাইইই, আসেন, আমাদের সাথে অল্প কয়ডা খাবেন। আপনি খাইলেও আমাগো ভাগে কম পড়বো না।” আমি সবিনয়ে ডানে-বায়ে মাথা নেড়ে আমার অসম্মতি জানালাম। ব্যাপারটা যদি এখন হতো, আমি যদি এখন আবার চট্টগ্রাম যেতাম পায়ে হেঁটে আর পথে এমন ঝুম বৃষ্টির মাঝে আশ্রয় নেওয়ার পর কেউ যদি আমাকে এভাবে ভাত খেতে সাধতো তাহলে আমি ভরপেট থাকলেও খেতাম তাদের সাথে। এগুলো অনেক বড় অভিজ্ঞতা যা আমি অভিজ্ঞতা না থাকার কারণে নিতে পারিনি সেই সময়। কিন্তু পরবর্তীতে এই ভুল আর করিনি কোথাও। বৃষ্টির গতি কমে আসছিল ক্রমশ। বাইরে কু ঝিঁক ঝিঁক ট্রেন চলে গেলো মহাসড়কের সমান্তরাল ধরে। জানালা দিয়ে দেখলাম তাকে। আমাকেও চলে যেতে হবে। বৃষ্টি থেমে গেছে। আবার যখন পথে নামলাম বেলা তখন তিনটা। ইট ভাঁটার ঠিকানা বলবো? ফয়সাল (কিংবা ফয়সল) ব্রিকস, নতুন মুহুরীগঞ্জ, ছাগলনাইয়্যা, ফেনী। সিক্ত মহাসড়ক ধরে হাঁটতে গিয়ে কেন যেন খুব উদাস লাগছিল, মেঘলা বাদল দিনের আড়ালে থাকা সূর্যের মতো বিষণ্ণ লাগছিল মনটা।

বিকাল ৩:৩৪ মিনিটে আবার থামলাম বৃষ্টির হানায়। টিনঘরের এক দোকানে গিয়ে বসলাম। তিহান নামের এক ছেলের সাথে পরিচয় হল। ও দেখতে কেমন ছিল, জানেন? ড্যানি বয়েলের স্ল্যামডগ মিলিওনিয়ার দেখেছেন না? ওখানে ছোটকালের জামাল মালেকের মতো দেখতে ছিল ফেনীর এই ছোট্ট তিহান। তিহানের সাথে বেশিক্ষণ থাকলাম না। মিনিট পাঁচেক পরই বেরিয়ে পড়লাম। ঝিরি ঝিরি বৃষ্টির মধ্যেই পার হলাম ফেনী নদীর উপর নির্মিত ধুমঘাট ব্রিজ। সড়ক সেতুর বা’দিক দিয়ে চলে গেছে ট্রেন ব্রিজ। অসম্ভব সুন্দর এক প্রতিবেশ চারিদিকে। আর এভাবেই বৃষ্টি মাথায় নিয়ে বিকাল ৪:০১ মিনিটে প্রবেশ করলাম বন্দর নগরী চট্টগ্রামে। দিনে দিনেই বিদায় দিলাম জহির রায়হানের জন্মজেলা ফেনীকে। ফেনী নদী পার হলেই চট্টগ্রাম। দুই জেলার অলিখিত সীমারেখা যেন এই ধুমঘাট ব্রিজ।

মীরসরাই উপজেলার অন্তর্গত বারৈয়ারহাট পৌরসভা দিয়ে মহাসড়কের চট্টগ্রাম অংশের শুরু। কিছুকাল আগের বিষণ্ণ মন এখন অনেক প্রসন্ন। মনের আনন্দে গান গাইতে লাগলাম। আমি বেশীরভাগ সময় নিজে নিজে গান বানিয়ে সেটা গাই। লিখে না রাখার কারণে আবার ভুলেও যাই। কিছুটা স্বভাব গায়ক টাইপের। বৃষ্টি পড়া থেমে গেছে অনেক আগেই। আমার পিছনে ডানদিকের আকাশ ভয়ানক সুন্দর করে সেজে বসে আছে। আমি বার বার পিছন ফিরে তাকে দেখছিলাম। ৪:৩৮ মিনিটে একটা কিলোমিটার পোস্ট থেকে জানতে পারলাম, সীতাকুণ্ড উপজেলা ৩৩ কিলো সামনে। কিন্তু চট্টগ্রাম কত? এটা জানলাম ৫:০৮ মিনিটের আরেক পোস্ট থেকে... চট্টগ্রাম আরো ৬৯ কিলোমিটার দূরে; অন্যদিকে ঢাকা ফেলে এসেছি ১৯৪ কিলোমিটার পিছনে। ওহ, এই কিলোমিটার পোস্টের দশ মিনিট আগে (৪:৫৮) যে পিছনে ফেলে আসি বারৈয়ারহাটকে এটা বলতে ভুলেই গেছিলাম। আসলে লিখতে লিখতে প্রতিবারই আমি চলে যাচ্ছি সেই বহুকাল আগের স্মৃতির পাতায়, যেন আবারো হাঁটছি মহাসড়কের সেই কঠিন পীচে।

বারৈয়ারহাট অবশ্য আমার মধ্যে এক ঋণাত্মক অভিব্যক্তি তৈরি করে। এখানকার রাস্তাঘাট একটু বেশি নোংরা। বৃষ্টির কারণে সেটা আরো বহুগুণে বিবর্ধিত হয়েছে কোথাও কোথাও। তবে এটা আমার সেই সময়ে দেখা থেকে লিখা। সূর্য উঠেছে আমার পিছন দিকে, দিবাভাগের শেষ কিরণমালায় আলোকিত করে রেখেছে আপ্রাণ প্রচেষ্টায়। মহাসড়ক এখানে কিছুটা সুমসাম মনে হল। হঠাৎ পিছন থেকে এক সিএনজি ড্রাইভার এসে আমার পাশে দাঁড়ালো।
-ও ভাই, কই যাবেন? চলেন আপনাকে পৌঁছে দিই।
---
-বলেন কি! আপনি এখান থেকে হেঁটে চট্টগ্রাম যাবেন!
---
-ঢা... আপনি ঢাকা থেকে এ পর্যন্ত পায়ে হেঁটে এসেছেন!!!
---
-ভাই, আপনি আমার সিএনজিতে ওঠেন, প্লিজ। আপনার থেকে আমি পয়সা নেবো না।
---
-না, ভাই। আপনি না উঠলে আমি মাইন্ড করবো। কিছুটা পথ আমার গাড়িতে করে যাবেন। এটা আমার অনুরোধ। ভাই, আপনাকে নিতে পারলে আমি খুব খুশি হতাম।
---

অনেক কষ্টে সিএনজি ড্রাইভার রহমত উল্লাহকে বুঝালাম যে, তার মন ভালোর আবদার আমার মন খারাপের কারণ। বেচারা আমার কথা শুনে বেশ মন খারাপ করলো। আমাকে শুভকামনা জানিয়ে উল্টো ঘুরে চলে গেলো বারৈয়ারহাটের দিকে।

৫:২০ মিনিটে বা’দিকে একটা ট্রেন দেখলাম। কেন যেন দার্জিলিঙের টয় ট্রেনের মতো লাগছিল সেটাকে। বাতাসা কিনলাম। মুখে দিতেই চুপসে এতটুকু হয়ে গেলো সেটা। ধীরলয়ে সন্ধ্যা নেমে আসছে চট্টগ্রামের আকাশে। ৫:৫১ মিনিটে মীরসরাই উপজেলার জোয়ারগঞ্জের সোনা পাহাড় আনসার ক্যাম্প পার হলাম। এখন রাতে থাকার ক্যাম্প খুঁজতে হবে আমাকে। রাত্রিযাপনের ডেরা খুঁজতে খুঁজতে আরো দুইটা কিলোমিটার পোস্ট পেরিয়ে আসলাম। শেষ কিলোমিটার পোস্ট (সন্ধ্যা ৬:১১) জানিয়ে দিল... চট্টগ্রাম ৬৫, সীতাকুণ্ড ২৭ আর অন্যদিকে ঢাকা ১৯৮, ফেনী ৩০। আরো নয় মিনিট হাঁটলাম। ৬:২০ মিনিটে সেদিনের মতো ক্ষান্ত দিলাম সোনা পাহাড় সিএনজি স্টেশনে। থাকার অনুমতি পেতে একটু বেগ পেতে হল। ওরা আমার ব্যাগ চেক করলো। এক সময় বুঝলো আমার ক্লান্তিমাখা মুখের আড়ালে কোন অলীক কিছু নেই, অবসন্ন শরীরের আড়ালে লুকিয়ে নেই অসততা। ফিলিং স্টেশনের নামাজ ঘরে গিয়ে বসতেই সারা শরীর ব্যথায় টনটন করে উঠলো। এতক্ষণের আড়ালে রাখা সব যন্ত্রণা এখন একবারে এসে ভর করেছে... কিন্তু মনের ভিতর চিরজাগরূক যে স্বপ্ন তাকে ক্লান্ত করবে কে?

(চলমান...)

..................................................................................
লিখাটা হয়তো একটু জটিল, দুর্বোধ্য আর বড় হয়ে গেছে। প্রথম দুইটা সমস্যা আশা রাখি সামনে কাটিয়ে উঠতে পারবো। কিন্তু শেষেরটার সমাধান একটু কঠিন হবে বৈকি। /:)
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখানে সেরা ইগো কার?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪






ব্লগারদের মাঝে কাদের ইগো জনিত সমস্যা আছে? ইগোককে আঘাত লাগলে কেউ কেউ আদিম রোমান শিল্ড ব্যবহার করে,নাহয় পুতিনের মত প্রটেকটেড বুলেটপ্রুফ গাড়ি ব্যবহার করে।ইগো আপনাকে কোথায় নিয়ে গিয়েছে, টের পেয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবং আপনারা যারা কবিতা শুনতে জানেন না।

লিখেছেন চারাগাছ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮

‘August is the cruelest month’ বিশ্বখ্যাত কবি টিএস এলিয়টের কালজয়ী কাব্যগ্রন্থ ‘The Westland’-র এ অমোঘ বাণী যে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এমন করে এক অনিবার্য নিয়তির মতো সত্য হয়ে উঠবে, তা বাঙালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×