রাতে প্রকাশক জানালেন, আমার ৩য় বই “ ঋদ্ধি” ছাপা হয়ে গেছে , কিন্তু বাধাইখানায় আটকে আছে। তাই, পূর্ণপ্রেক্ষাগৃহে বইমেলা ২০১৭ তে শুভমুক্তির আরও ২ দিন বাকী । বিরতিতে আকর্ষনীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে দর্শক ধরে রাখতে হয়। তাই , বিরচিত লেখাই দিলাম।
-------------------
এক বক্তৃতা সভায়, বক্তা তার জীবনের নানা গল্প শোনাচ্ছিলেন। এক পর্যায়ে
তিনি বলছিলেন,
: এত বছর পরে, লুকানোর আর কিছুই নেই। আমি জীবনের সবচেয়ে মধুর দিনগুলো এমন এক নারীর সাথে কাটিয়েছি, যে আমার স্ত্রী নয়!
বলেই বক্তা চুপ !!
উপস্থিত দর্শকরাও হতভম্ব!
দীর্ঘ নীরবতা ভঙ্গ করে বক্তা বলে উঠলেন,
‘সেই নারী ছিলেন আমার মা।’
এই অভূতপূর্ব ব্যাখ্যা শুনে সারা হল হাততালিতে ফেটে পড়ল। আমার চোখ
দিয়েও জল বেরিয়ে এল। আহা!!! অনুপ্রাণিত হলাম।
বাড়ি ফিরে গ্লাস নিয়ে বসলাম। চার পেগ খাবার পর বক্তার ওই কথাগুলো মনে পড়ল।
ভাবলাম, বউকে চমকে দেবার এর থেকে ভালো সুযোগ আর হবে না!
বউ জানুক আমিও সমঝদার এক ব্যক্তি। আমার কথারও মারপ্যাচ আছে।
টলায়মান অবস্থায় রান্নাঘরে গেলাম।
আমাকে ঢুকতে দেখে রান্না করতে করতে ঘেমে নেয়ে একাকার স্ত্রী একবার
তাকালো আমার দিকে। কোনোরকম ভণিতা না করে আমি বলে উঠলাম, ‘এত বছর পরে, লুকানোর আর কিছুই নেই। আমি আমার জীবনের সবচেয়ে মধুর দিনগুলো এমন এক নারীর সাথে কাটিয়েছি, যে আমার স্ত্রী নয় ‘
পরের লাইনটা আর মনে পড়ল না । মনে পড়ল না তো পড়লই না। নেশা চড়ে গেছিল।
বউ দেখলাম স্থির দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। ঘাবড়ে গিয়ে বিড়বিড় করলাম,
‘আমার ঠিক মনে পড়ছে না নারীটা কে ছিলো!’
-----
পরের দিন হাসপাতালের বেডে হুঁশ ফিরেছিল। সারা গায়ে ব্যান্ডেজ। বেলন
দিয়ে মারের চোটে হাত, পা, চোয়াল ভেঙে গেছিলো। গরম ডাল পড়ে মাথার চুল উঠে গেছিলো।
প্রাণে যে বেঁচে গেছি, এই অনেক।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৭