রাষ্ট্র এবং জনগণের প্রয়োজনে সংবিধানে নেই বলে কোন কথা নেই।
একটি রাষ্ট্টের জন্য সংবিধান হচ্ছে রাষ্ট্র পরিচালনার গাইডবুকের মত। এই গাইডবুকটি রাষ্ট্রের আইণ প্রণেতারা তৈরি করেন এবং আইণ প্রণেতারা রাষ্ট্রের জনগণ দ্বারা নির্বাচিত হোন। আইণ প্রণেতারা যেহেতু জনগণের ভোটে নির্বাচিত হোন তাই তাঁরা জনগণের প্রয়োজনে এবং জনস্বার্থে আইন প্রণয়নে বেশী মনোযোগ দিয়ে থাকেন। দেশের জন্য এবং জনগণের সুখ, শান্তি, নিরাপত্তা এবং সুশাসনের নিশ্চয়তা দেবার দিকেই এদের চিন্তা বেশী থাকে।
এই সংবিধান বা রাষ্ট্র পরিচালনার গাইডবুকটি অবিনশ্বর কোন জিনিস নয়, এটা কোন আসমানী কিতাবও নয়, বা কোন লেখকের কপিরাইট করা কোন বইও নয় যে পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংযোজন, বিয়োজন বা সময়পোযুগী করা যাবে না।
সংবিধান যেহেতু মানুষের জন্য এবং রাষ্ট্রের জন্য সেহেতু মানুষের কথা ভেবে, রাষ্ট্রের সুবিধা বা নিরাপত্তার কথা ভেবে পরিবর্তন, পরিবর্ধন, বিয়োজন বা সংযোজন করার সুবিধা সর্বদাই বিরাজমান। সময়ের প্রয়োজনে বা জনগণের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে সংবিধানে নেই বলে কোন সরকার গণদাবীকে বা জনগণের চাহিদাকে এড়িয়ে যেতে পারে না। যদি যায় তাহলে দায়িত্ব অবহেলার সমতুল্য হবে এবং মানুষের কাছে পরবর্তী নির্বাচনে এর খেসারত দিতে হবে।
সংবিধান আল্লাহর প্রদত্ত পবিত্র কোরআন নয় যে সংশোধন করা যাবে। ভবিষ্যত অনিশ্চয়তা দূর করার জন্য সময়মত সংশোধন করা রাষ্ট্রের আইন প্রণেতাদের গুরু দায়িত্ব। এই দায়িত্ব অবহেলার কোন সুযোগ নেই। রাষ্ট্র পরিচালনা করার জন্য যে দল বা গোষ্ঠী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করে সেই সরকারের কখোনই জনগণের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে সংবিধানে নেই বলে দায় এড়াতে পারে না। কেননা জনগণ তাদের জন্য বা তাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনে যা যা করণীয় সেটার অধিকার তাদেরকে ভোটের মাধ্যমে দিয়ে রাখে। সুতরাং একজন নির্বাহী প্রধান সংবিধানে নেই বলে গণদাবীকে উপেক্ষা করতে পারে না। আর যদি করে সেটা জনগণকে অবজ্ঞার শামিল, যার পরিণাম ভয়াবহ। আশা করি বর্তমান বাংলাদেশের নির্বাহী প্রধান এই গুরুত্বটি অনুধাবন করতে সক্ষম হবেন এবং দেশের মানুষকে সাম্ভাব্য সহিংসতা থেকে রক্ষা করবেন, শান্তিপূর্ণ সহবাস্থানের দিকে নজর দিয়ে মানুষের মনে প্রশান্তি আনবেন।
রাষ্ট্র এবং জনগণের প্রয়োজনে সংবিধানে নেই বলে কোন কথা নেই। না থাকলে সংযোজন করা সরকারের এবং আইন প্রণেতারদের দায়িত্ব।
আমরা সাধারণ জনগণ বিচক্ষণ রাষ্ট্র প্রধানের কাছে, আইণ প্রণেতাদের কাছে, বিরোধী রাজনীতিবিদদের কাছে এবং দেশের আইণ শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে একটা সুন্দর পরিবেশে চাই, অনিশ্চয়তার কালো মেঘ আর দেখতে চাইনা। লগি বইঠার আন্দোলন সমাজে শুধু রক্ত উপহার দেয়, আর সমঝোতার রাজনীতি সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করে। মানুষকে স্বাভাবিক জীবন যাপনের পরিবেশকে নিশ্চিত করে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সত্য উপলব্দি করার মন ও মানসিকতা প্রদান করুন। আমীন, সুম্মা আমীন।