একটা ছোট্ট গল্প দিয়ে শুরু করছি।তার আগে বলুন এক গ্লাস পানির ওজন কত?
-হয়ত জানেন না।বাংলা হাব থেকে পড়া একটা গল্প পড়ুন আগে তারপর আমার কথায় আসছি-
"একজন মনোবিজ্ঞানী স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট পড়ানোর সময় রুমে চারপাশে হাঁটতে হাঁটতে এক সময় শ্রাতাদের সামনে এক গ্লাস পানি উপর করে তুলে ধরলেন। তখন সবাই ভেবে ছিল হয়তো তিনি গ্লাস অর্ধেক খালি না অর্ধেক ভর্তি এই প্রশ্নটি করবেন। কিন্তু তিনি তা করলেন না। তিনি হাসিমুখে প্রশ্ন করলেন ” এই এক গ্লাস পানি কত ভারী”। উত্তর আসল আট আউন্স থেকে বিশ আউন্সের ভেতর।
তিনি বললেন এর আসল ওজন এখানে কোন ব্যাপার না। ব্যাপার হলো আমরা এটাকে কতক্ষন ধরে রাখছি। ওজনটাও তার উপর নির্ভর করছে।
যদি আমি এটাকে এক মিনিটের জন্য ধরে রাখি, তবে কোন সমস্যা হবে না। যদি এটাকে এক ঘন্টা ধরে রাখি তবে আমার হাতে ব্যাথা অনুভূত হবে। আর যদি একদিনের জন্য এভাবে ধরে থাকি তবে আমি অসাড় এবং পক্ষঘাতগ্রস্থ বোধ করব। প্রতিটা ক্ষেত্রে এর আসল ওজনে কোন পরিবর্তন হয় না। কিন্তু ধরে রাখার সময় বাড়ার সাথে সাথে এটি ভারী থেকে ভারী লাগতে শুরু করে।
তিনি আরো বিশদে গিয়ে বলেন আমাদের জীবনের চাপ এবং উদ্বেগগুলো এই গ্লাসের পানির মত। যা নিয়ে কিছুক্ষন ভাবলে তেমন কোন কিছু হবে না। কিন্তু এই চাপ আর উদ্বেগ যদি আমরা সারাদিনের জন্য ধরে রাখি, মনে রাখি ।তবে তা আমাদের কোন কিছু করার সামর্থ্যটা কেড়ে নিতে পারে। তাই চাপ কখনো সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত টানতে যাবেন না। এটাকে সব সময় ছেড়ে দিতে হবে। অর্থাৎ গ্লাস নামিয়ে রাখতে হবে মনে করে।"
.
আমাদের সবচেয়ে বড় শিক্ষক হলো সময়।সময়ে সাথে আসা ১০ মিনিটের পরিস্থিতি বাস্তবজীবনের যে শিক্ষা দেয় তা গত ১০ বছর ধরে পড়া পাঠ্য সে শিক্ষা দিতে পারে-মাদার তেরেসা এমনই একটা কথা বলেছিলেন। হয়ত শুনে থাকবেন,লোকে বলে, "সময় পাল্টিয়েছে।" আসলেই কি সময় পাল্টায়?
কখন না,আগেও ২৪ ঘণ্টায় দিন তো এখনও হয়। শুধু দেখার ভঙ্গি বদলিয়েছে একসময় সূর্য দেখে সময় হিসাব করতে হতো,তারপর আসল অ্যানালগ আর এখন তো ডিজিটাল।কিন্তু ২৪ ঘণ্টায় একদিন এটা বদলায়নি।
তেমনি,কোনোকিছু যদি খারাপ লাগে তাহলে দোখার ভঙ্গিই বদলিয়ে ফেলুন।যেমন: ৪ বছরের রিলেশনে ছেলেটা হঠাৎ অন্য কোনো মেয়ের সাথে রিলেশনে গেলো।ব্যাপারটা আপনার বোধগম্য হচ্ছে না,আপনি ভাবছেন আপনার হয়ত কোনো ভুল ছিল বা আপনার খুঁত ছিল তাই সে চলে গেছে। এমনও তো হতে পারে,আপনি একটু বেশিই যোগ্য ছিলেন বা আপনার উপযুক্ততা পরিমাপ করার ক্ষমতা তার হয়নি। এটা ছেলে বা মেয়ে দুজনের ক্ষেত্রেই হতে পারে। আপনার চোখে যেটা ভালো সেটাই ভালো,আপনার ইথিকস বা নীতি যেটা বলবে সেটাই আপনার জন্য উপযুক্ত।আপনার জীবন থেমে থাকবে না,রাতে যদি পুরাতন স্মৃতি মনে পড়ে তখন ভবিষ্যৎ -এ কেমন স্মৃতি আশা করেন সেটা নিয়ে ভাবুন।আপনার শক্তি আপনি নিজেই,আবেগের বশে অন্যকে নিজের শক্তি বানিয়ে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার না করলেই ভালো।
.
আজকাল আশেপাশে বিচ্ছেদ এর গল্পই বেশি অর্থাৎ আজকাল লোকে বিচ্ছেদ বা ইমোশনাল গল্প গিলছে তা নাহলে ক্লোজ আপ 'কাছে আসার অসমাপ্ত গল্প' বের করত না।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:৪১