ইতিহাস অতঃপর......
আরম্ভের আগেও আরম্ভ আছে । ছাব্বিশে মার্চের আগে একুশে ফেব্রুয়ারি । একুশে ফেব্রুয়ারির শুরু ১৯৪৭-৪৮-এর ছায়াছন্ন দিন গুলোতে ।
পাকিস্তানের সাথে পূর্ব বাংলার জনসাধারনের প্রথম সংঘাত বেধেছিল রাষ্ট্রভাষার প্রশ্নে । প্রথম পর্যায়ে অল্পসংখ্যক বুদ্ধিজীবী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সমাজ । ভাষা সম্পর্কে বাঙালি মুসলমান সমাজে উনিশ শতক থেকেই একটা সচেতনতার পরিচয় পাওয়া যায় , আরবি, ফারসি, উর্দু, ইংরেজি, বাংলা- সমাজজীবনে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে ।
রাষ্ট্রভাষা হিসাবে বাংলাভাষা স্বীকৃত দেবার দাবিতে কয়েকজন আধ্যাপক ও লেখকের রচনা-সংকলন প্রকাশ করে, প্রধানত এঁদের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ছাত্রাবাসে এ বিষয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয় । এবং রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়,
১৯৫২ সালের ১১-ই ফেব্রুয়ারি সারা প্রদেশে আন্দোলনের প্রস্তুতি দিবস এবং ২১ ফেব্রুয়ারি প্রদেশব্যাপী ধর্মঘটের আহ্বান জানানো হয় । ২০-ই ফেব্রুয়ারি বিকালে ১৪৪ ধারা জারি করা হয় । সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ ১৪৪ ধারা ভঙ্গ না করার সিধান্ত নেন । কিন্তু ২১ তারিখ কেউ এই সিদ্ধান্ত মেনে নেয়নি । ছাত্ররা সংগঠিত ভাবে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে । এবং পুলিশ প্রথমে লাঠি চার্জ পরে কাঁদুনি গ্যাস নিক্ষেপ করে ছাত্র ভঙ্গ করার চেষ্টা করে কিন্তু এতে কাজ হয়নি । এবং মেডিক্যাল কলেজ হোস্টেলের গেট দিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসতে চায় , পুলিশ গুলি চালায় ।
গুলিতে নিহত হন রফিক, সালাম, বরকত-সহ আরও অনেকে। শহীদদের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়ে ওঠে। শোকাবহ এ ঘটনার অভিঘাতে সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
ক্রমবর্ধমান গণআন্দোলনের মুখে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার শেষাবধি নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয় এবং ১৯৫৬ সালে বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি প্রদান করে। ২০০০ সালে ইউনেস্কো বাংলা ভাষা আন্দোলন, মানুষের ভাষা এবং কৃষ্টির অধিকারের প্রতি সম্মান জানিয়ে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে ।
বই রেফারেন্স- রক্তাক্ত বাংলা ।
কিছু তথ্য- উইকিপিডিয়া ।
ছবিঃ- উইকিমিডিয়া কমন্স ।
বিঃ দ্রঃ - "উইকিমিডিয়া কমন্স একটি মুক্ত লাইসেন্সযুক্ত মিডিয়ার ভান্ডার" ।