অন্তহীন আলোকের পথের যাত্রী আমি-
আলোকিত আলয়ে সদা বসবাস আমার
আমি আলমে আরওয়াহায় কাটিয়েছি দীর্ঘ দীঘল আলোকিত জীবন
সেখানে কোনো রাত ছিল না
মুঠি মুঠি শীতের শ্বেত কুয়াশার মত শুভ্রতা গোটা শুন্যতাজুড়ে-
সেই অসীম নিস্তব্দ শুন্যতায় ছিল আমার ভিন্ন জীবন
সেখানে তমসা নেই
তমসার কোনো স্থান নেই
রাত নেই কুহেলিকা মরিচিকা নেই অপ্রাপ্তির বেদনা নেই
কান্নার শব্দ নেই ব্যথার ঢেউ নেই ভাঙ্গনের শব্দ নেই
অত:পর একদিন-
সব ছেড়েছুড়ে চলে এলাম মাতৃজঠরে-
সেখানেও আমি ছিলাম চিন্তাহীন-
কষ্টের কোনো ছোঁয়া আমাকে স্পর্শ করেনি
সুরক্ষিত নিরাপদ ছোট্ট একটি জগত আমাকে ধারন করেছে
কোনো ক্লেশ কোনো আসক্তি আমাকে কাবু করেনি
তারপরে পথপানের সে যাত্রাবিরতি শেষে-
সুদূরের পানের দূরন্ত নাবিক ভাসতে ভাসতে চলে এলাম নতুন এক আলয়ে-
মর্ত্যলোকে-
অন্য এক কোলাহলময় ব্যস্ত জীবনে-
যে জীবন ভিন্নতর
প্রতিক্ষন রং পাল্টানো যার স্বভাব
স্বাদের আবিলতায় যে নিজেই নিজেকে ভুলে যায়
বন্ধু কখন যে শত্রু হয়ে দাড়ায় জীবন জানে না
জীবনের মানে খুঁজতে এখানে এক জীবন পার করে দেয় কেউ কেউ
তবু কি তা পায়? পাওয়া যায়?
পায়, কেউ কেউ পায় হয়তো
পৃথিবীর মাটি পাথর জল জোছনায় হেটে
সাগর মোহনা গিরি কন্দরে ছুটে
মেঘ সরোবর অথৈ বারিধি ঘেঁটে
ঝর্না ফুল পাখিদের কলকাকলি দেখে
অনেকেই ভুলে যায়- সফরের অনেকটাই বাকি এখনো
এতো সূচনা মাত্র!
সূচনাকে শেষ ভেবে গন্তব্যে না পৌঁছেই থেমে যাওয়া
পথিমধ্যেই কোলাহলে মজে যাওয়া
আসলেই কি বুদ্ধিমানের কাজ?
পথ তো রয়ে গেছে
অন্তহীন বাকি পথ আমাকে পাড়ি দিতে হবে একাকি
পৃথিবীর এই কর্দমাক্ত পথে যখন পা রাখি প্রথম
আমি ছিলাম স্রেফ শুভ্রতায় আকির্ন নিষ্পাপ এক হিরকখন্ড
আলো বিকিরনের ক্ষমতা ছিল আমার
আমার ভেতরে আলো ছিল-
শুভ্রতার অনি:শেষ আধার ছিল
আমার ভেতরের সেই শুভ্রতাগুলো আস্তে আস্তে ধুসর আকার ধারন করছে না তো?
আমি কি আজ
যাত্রাবিরতির শেষলগ্নে সাহসে ভর করে সকলকে একথা বলতে পারবো-
'আমার হৃদয় চিড়ে দেখো কোথাও কোনো আঁধার নেই
দাগ নেই আঁচড় নেই ক্লেদ নেই দুর্বোধ্যতা দুর্বলতার লেশ নেই'
-এ কথাগুলো বলতে পারাটা আমার অনেক কাঙ্খিত যে!
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০১৯ সকাল ৮:৫৬