এরকম খোলা পায়খানা একসময় গ্রামে গঞ্জে সচরাচর দেখা যেত। খালের পাড়ে, পুকুরের পাড়ে, নদীর কিনারের এ টয়লেটগুলোতে বিশেষ বৈশিষ্ট্য থাকতো, এগুলোর ময়লা নিষ্কাসনের নালা খাল, নদী কিংবা পুকুরে নামিয়ে দেয়া হত। কখনও কখনও কাঁচা এসব টয়লেটের ভেতরে কারও কারও পরে যাওয়ার ঘটনা শোনা যেত, আগেকার দিনে। এসব দুর্ঘটনায় পতিত হয়ে কোন কোন সময়ে মানুষ মারা পর্যন্ত না কি যেত! কিন্তু কোন নবী রাসূল পায়খানায় ডুবে মারা গেছেন, এমন ন্যাক্কারজনক কথা ভাবা যায় না। কিন্তু ভূয়া নবী দাবীদার গোলাম আহমদ কাদিয়ানীর কথা ভিন্ন। তার পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়ার ঘটনাটি অত্যন্ত জঘন্য। এইরকমেরই এক কাঁচা পায়খানায় ডুবে তিনি গু-মূত্র পান করে দুনিয়া ত্যাগ করেন জনশ্রুতি রয়েছে। আল্লাহ পাক নিশ্চয়ই ন্যায়বিচারক।
এখন অবশ্য সেই দিন নেই। আলহামদুলিল্লাহ, বিজ্ঞানের আশির্বাদে সমাজ বদলে গেছে। মানসিকতায়ও উন্নতি এসেছে মানুষের। মাশাআল্লাহ, মানব স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি এই ধরনের ঝুঁকিপূর্ন স্যানিটেশন ব্যবস্থা এখন নে্ই বললেই চলে। সবাই এখন স্বাস্থ্যসম্মত পাকা পায়খানা ব্যবহারে অভ্যস্ত। এটা সভ্যতার প্রকাশ। এটা অনেক আনন্দের।
মির্জা গোলাম আহমদের নবী রাসূল হওয়ার দাবী সম্বলিত কয়েকটি উক্তি
বুরূজী বা যিল্লী বা ছায়া নবী হওয়া সম্পর্কে তার কয়েকটি উক্তি:
মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী ছায়া নবী হওয়ার দাবীর সপক্ষে যেসব বক্তব্য দিয়েছে, তার কয়েকটি উদ্ধৃতি নিম্নে পেশ করা হল। তবে তিনি যিল্লী নবীর সাথে সাথে নিজেকে উম্মতী নবী বলেও দাবী করেছেন।
১) 'ছায়া স্বরূপ যার নাম দেয়া হয় মুহাম্মাদ ও আহমদ তার (মসীহে মাওউদ) নবুওয়াতের দাবী সত্ত্বেও আঁ-হযরত সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাতামুন্নাবিয়্যীন থাকবেন। কেননা এই দ্বিতীয় মুহাম্মদ ঐ মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এরই রূপ এবং তাঁরই নাম।' সূত্র: এক গলতি কা এযালাহ, মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী, পৃষ্ঠা-০৬।
২) 'আমি রাসূল ও নবী, অর্থাত, আমি পূর্নাঙ্গ ছায়া হিসেবে। আমি এমন আয়না যার মধ্যে মুহাম্মদী আকৃতি ও মুহাম্মাদী নবুওয়াতের পূর্নাঙ্গ প্রতিবিম্ব পড়ছে'। সূত্র: মুবাহাসাহ রাওয়ালপিন্ডি, মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী, পৃষ্ঠা-১৩৪।
৩) 'আল্লাহ তাআ'লা নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে নবুওয়াতের সীল মোহর দিয়েছেন। অন্য কথায় কামালিয়াতের ফয়েজ দানের ক্ষমতা দিয়েছেন, যা আর কোন নবীকে দেয়া হয় নি। সে জন্য তাঁর নাম হয় খাতামুন্নাবিয়্যীন। অর্থাত, তাঁর আনুগত্য নবুওয়াতের কামালিয়াত দান করে। তার রূহানী তাওয়াজ্জুহ (দৃষ্টি) নবী সৃষ্টি করে। এ পবিত্র ও ঐশ্বরিক শক্তি আর কোন নবীকে দান করা হয় নি।' সূত্র: প্রাগুক্ত, পৃষ্ঠা-১৪১।
৪) 'যে সমস্ত জায়গায় আমি নবুওয়াত বা রিসালাত সম্পর্কে অস্বীকার করেছি তা শুধু এই অর্থে যে, আমি স্বতন্ত্র কোন শরীয়ত নিয়ে আসি নি এবং পৃথক কোন নবীও নই। তবে এই অর্থে আমি রাসূল এবং নবী যে, আমি স্বীয় পথপ্রদর্শক রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অদৃশ্য বা আধ্যাত্মিক ফায়েজ ও শক্তি লাভ করে এবং নিজের জন্য সেই নাম গ্রহন করে তাঁরই মধ্যস্থতায় আল্লাহর পক্ষ থেকে ইলমে গায়েব পেয়েছি। কিন্তু নতুন শরীয়ত ছাড়া আমাকে নবী এবং রাসূল বলে আহবান করেছেন। সুতরাং এখনো আমি এ অর্থে নবী এবং রাসূল হওয়ার কথা অস্বীকার করি না।' সূত্র: প্রাগুক্ত, পৃষ্ঠা-১৪২।
যিল্লী বা ছায়া নবী হওয়ার দাবীটি একটি উদ্ভট, অযৌক্তিক ও অবৈজ্ঞানিক দাবী। এটা অনেকটা হিন্দু ধর্মের পুনর্জন্মের আকিদার নামান্তর। গোলাম আহমদ কাদিয়ানী যেসব কথার মারপ্যাঁচে নিজেকে যিল্লী বা ছায়া নবী বলেছেন হিন্দুরা অনুরূপভাবে বলতে পারে যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই- মুসলমানদের এই আকিদার সাথে আমাদেরও কোন বিরোধ নেই। আমাদের সব খোদা হল যিল্লী খোদা বা ছায়া খোদা।
স্বতন্ত্র নবী হওয়া সম্পর্কে তার কয়েকটি উক্তি:
১) 'আমি সেই আল্লাহর শপথ করে বলছি, যার হাতে আমার প্রান, তিনিই আমাকে পাঠিয়েছেন এবং তিনিই আমার নাম নবী রেখেছেন।' সূত্র: প্রাগুক্ত, পৃষ্ঠা-১৪৫।
২) 'আমি সেই আল্লাহর শপথ করে বলছি, যার হাতে আমার প্রান, তিনিই আমাকে প্রেরন করেছেন, তিনিই আমার নাম নবী রেখেছেন। তিনিই মাসীহে মাওউদ নামে আমাকে ডেকেছেন। তিনিই আমার সত্যতা প্রমান করার জন্য বিরাট নিদর্শন পেশ করেছেন, যার সংখ্যা তিন লাখ পর্যন্ত পৌঁছেছে।' সূত্র: বারাহীনে আহমদিয়াহ, গোলাম আহমদ কাদিয়ানী, পৃষ্ঠা-৫৯।
উল্লেখ্য, তিনি যেসব প্রমানের কথা বলেছেন, তার মধ্যে রয়েছে তার মনি অর্ডারের মাধ্যমে বা বিভিন্ন উপায়ে টাকা-পয়সা বা হাদিয়া-তোহফা আগমনের সংবাদ। অথচ এটা কৃত্রিম কৌশলের মাধ্যমেও বলা যেতে পারে। যেমন তিনি বলেছেন: 'আমার ব্যাপারে আল্লাহ তাআ'লার নিয়ম হল, প্রায়শই নগদ টাকা-পয়সা যা আসে বা যা হাদিয়া-তোহফা আসে তা পূর্বাহ্নেই এলহাম কিংবা স্বপ্নযোগে আমাকে অবগত করানো হয়। এ ধরনের নিদর্শন হবে পঞ্চাশ হাজারের উর্ধ্বে।' সূত্র: কাদিয়ানী মাজহাব, পৃষ্ঠা-৩৩৩।
৪) 'এটা অত্যন্ত পরিষ্কার যে, এইসব এলহামের মধ্যে আমার সম্পর্কে বারবার বলা হয়েছে যে, এ ব্যক্তি আল্লাহর প্রেরিত, আল্লাহর আদেশপ্রাপ্ত, খোদার বিশ্বস্ত এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে আগত। যা কিছু সে বলে তার প্রতি তোমরা ঈমান আনয়ন কর। তার শত্রুগন জাহান্নমী।' সূত্র: কামালাতে ইসলাম, গোলাম আহমদ কাদিয়ানী, পৃষ্ঠা-৪২৩।
৫) মসীহ মাওউদ (গোলাম আহমদ কাদিয়ানী) নিজেকে স্পষ্টভাবে আল্লাহর নবী ও রাসূল হিসেবে পেশ করেছেন। এবং নিজেকে নবী রাসূলদের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত বলে উল্লেখ করেছেন। সূত্র: প্রাগুক্ত।
এই ভ্রান্ত গোষ্ঠীসহ যাবতীয় বাতিল মতবাদ এবং এসবের প্রবক্তা ও অনুগামী-অনুসারীদের কুমন্ত্রনা থেকে আল্লাহ পাকের কাছে পানাহ চাই।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:১৬