জরুরী দরকারে সকাল ৮ টার মধ্যে পাসপোর্ট অফিস যেতে হচ্ছে। তাড়াহুড়োয় পাঠাও কল করলাম। মিনিট দশেক চেষ্টার পরে রাইড পাওয়া গেলো। বাসার নীচে নেমে দেখি সুদর্শন এক যুবক স্কাই ব্লু শার্টের ওপর পাতলা কালো শাল জড়িয়ে বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মনে করার চেষ্টা করলাম আজ কার মুখ দেখে ঘুম থেকে উঠেছিলাম। বেরোনোর সময় রুমমেট কে কাঁথায় মুখ মাথা ঢেকে ঘুমোতে দেখে আসছি তার মানে ঘুম থেকে ওঠার পর এই সুদর্শন বাদে অন্য কারো মুখই দেখিনাই। আকাশের দিকে আড়চোখে একবার তাকিয়ে দেখার চেষ্টা করলাম সূর্য আজ দিক ভুল করেনি তো ! জীবনে আজ অব্দি পাঠাও-উবারের যতো রাইড নিয়েছি দেখা গেছে তাদের প্রত্যেকে হয় মধ্যবয়স্ক আংকেল অথবা ভুড়িওয়ালা প্রায় টাক পরে যাওয়া যুবক এবং আংকেল সমাজের মাঝামাঝি পজিশনের কেউ। সাত সকালে এই সুদর্শনের রাইড পাওয়ার পিছনে গ্রহ-নক্ষত্রের হাত নাই তো!
কিন্তু সুদর্শনের মনে হয় ভাব একটু বেশী, প্যাসেঞ্জার দাঁড়ায়া আছে দেখেও তার কোনো রা নাই। তা ভাব তার একটু বেশী হইতেই পারে, ভাব নেওয়ার মতোই সে। আমি গটগট করে তার সামনে গিয়ে গলার স্বর যথেষ্ট চড়া করে পাল্টা ভাব মাইরা বললাম, “আগারগাও যাবো, পাসপোর্ট অফিস- চেনেন তো নাকি?”
সুদর্শন আমার দিকে ভ্রু কুচকে চোখ ছোট করে কয়েক সেকেন্ড তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করলো আমি কি বলতে চাইতেছি। তারপর কঠিন মুখে বললো, “সরি আপু কি বললেন বুঝলাম না”
“রাইড নিয়ে দাঁড়ায়া আছেন আর বলতেছেন বুঝি না আজব” কথাগুলো সুদর্শনকে বলতে যাবো ঠিক সেই সময় ফোন বাজলো-
“আফা আপনার বাসার নম্বর তো খুঁজে পাইতেছি না, আপনে একটু কষ্ট কইরে মাঠের সামনে আইসে খাড়ান”
রাইডারের ফোন রেখে দেওয়ার পর মনে হলো এর থেকে বাজে সকাল আমার জীবনে আর আসে নাই।