একজন বৃদ্ধ আমেরিকান মুসলিম তার নাতির সঙ্গে পূর্ব কেন্টাকির পর্বতে একটি খামারে বসবাস করত। প্রত্যেক প্রভাতে বৃদ্ধ মুসলিমটি খুব ভোরে উঠে রান্নাঘরের টেবিলে বসে কোরান তেলাওয়াত করতো। তার নাতিও সর্বদা তার মতো হতে চাইতো এবং সর্বদা তার অনুকরণ করতে চাইতো।
একটি দিন নাতি জিজ্ঞাসা করল, ” দাদা ! আমি আপনার মত কোরান পড়তে চেষ্টা করি, কিন্তু আমি কি পড়ছি তার বেশীরভাগই বুঝিনা, এবং আমি যতটুকুই বুঝি তা কোরান বন্ধ করার পর শীঘ্রই ভূলে যাই। তাহলে কোরান পড়ে আমার কি ভাল হল?”
চুল্লিতে কয়লা তোলা বন্ধ করে দাদা বলল, “এই কয়লার ঝুড়িটি নিয়ে নদীতে যাও এবং দয়াকরে আমার জন্য এটা ভর্তি করে পানি নিয়ে আস।”
দাদা যা বললো নাতী তাই করলো, কিন্তু নাতি ঘরে ফেরার পূর্বেই সব পানি ঝুড়ির ফাঁক দিয়ে বের হয়ে গেল। দাদা মুচকি হাসলো এবং বললো ” তোমাকে এবার একটু দ্রুত দৌড়ে চলতে হবে” বলে তাকে আবার নদীতে পাঠিয়ে দিল। এবার ছেলেটি দ্রুত দৌড়াতে লাগলো, কিন্তু এবারও ঘরে ফেরার পূর্বেই তার ঝুরিটি খালি হয়ে গেল। দীর্ঘশ্বাস ফেলতে ফেলতে ছেলেটি তার দাদাকে বলল যে, ঝুড়িতে করে পানি আনা অসম্ভব একটি কাজ এবং সে এবার একটি বালতি আনতে গেল।
বৃদ্ধ লোকটি বলল ” আমি এক বালতি পানি চাই না, আমি এক ঝুড়ি পানি চাই, তুমি একান্তভাবে চেষ্টা করছো না।” অতঃপর বৃদ্ধটি দরজা দিয়ে বের হয়ে তার নাতির চেষ্টা করছে, তা দেখতে থাকলো।
যদিও এই মুহূর্তে ছেলেটি জানে যে এটা একটা অসম্ভব কাজ, তবুও সে তার দাদাকে দেখানোর জন্য খুব দ্রুত দৌড়ে ঝুড়ি থেকে সব পানি পড়ে যাবার আগেই ঘরে ফেরার আপ্রান্ত চেষ্টা করতে থাকে। একপর্যায়ে ছেলেটি হাফাতে হাফাতে বলল ” দাদা, এটা একটা অর্থহীন প্রচেষ্টা”।
“তাহলে তুমি মনে কর, এটা একটি অর্থহীন প্রচেষ্টা”, বৃদ্ধটি বলল ” তকিয়ে দেখ তোমার ঝুড়ির দিকে।”
ছেলেটি ঝুড়ির দিকে তাকাল এবং প্রথমবারের মত সে বুঝতে পারলো যে ঝুড়িটি অন্য রকম লাগছে। এটা একটা নোংরা পুরনো কয়লার ঝুরি থেকে এখন একটা ভেতরে ও বাইরের পরিচ্ছন্ন ঝুড়িতে রূপান্তরিত হয়েছে।
বৃদ্ধটি বলল, “বেটা, যখন তুমি কোরান পড় তখন এমনই ঘটে। যদিও তুমি অনেক কিছুই বুঝনা, অনেক কিছুই মনে রাখতে পার না, কিন্তু যখন তুমি কোরান পড়বে তখন তোমার মধ্যে পরিবর্তন আসবে, পরিবর্তন আসবে তোমার ভিতরে ও বাহিরে। সেটা হল, জীবনের সকল কর্মে আল্লাহর নির্দেশ মেনে চলা।”
ফেসবুক থেকে সংগ্রীহিত।