টেবিলে মুখোমুখি দুজনে বসে। অনেকদিন পর এভাবে চোখের ওপর চোখ রেখে একসাথে এক টেবিলে বসা। অথচ আমরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি গত দুই বছর আগে! শুনতে অবাক লাগলেও এটাই ঠিক যে চরম ব্যস্ততা আর দুজনেরই চাকরীর সুবাদে কখনো নিজেদের প্রয়োজনে এভাবে মুখোমুখি টেবিলে বসা হয়ে ওঠেনি।
আজ বাহিরে আকাশটাও ঘোলাটে, এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গিয়েছে ক্ষানিক আগেই।
আমার ভেতরে প্রশ্ন তোলপাড় খাচ্ছে। যা জানতে চাই তা জানতে পারবো কিনা তোমার কাছে সেটা ভেবেই কপাল ঘেমে যাচ্ছে। আমার যে চাই সঠিক উওর। এমন এক পরিস্থিতির সামনে দুজনকে মুখোমুখি বসতে হবে কখনো ভাবিনি।
"আচ্ছা প্রিয়ন্তী, তুমিই বলো, আমি কি আজ পযর্ন্ত কোনদিন তোমার ব্যপারে সিরিয়াস ছিলাম না?"
"আমি কখনো বলিনি তুমি সিরিয়াস ছিলে না। তবে প্রিয়ম, একটা কথা কি জানো, নদীর ওপারে বসে এপারের খবর নেয়া আর এপারে থেকে এপারেরই খবর নেয়া, দুটি দুই জিনিস।"
"শোন প্রিয়ন্তী, সবকিছু ইমোশন দিয়ে চিন্তা করলে হয় না। বাস্তবতার মাঝে আমি যেমনটি আছি, তুমিও আছো। তাহলে এত দূরুত্ব কেন দেখছো?"
"আমি কোন অবাস্তব কথা বলিনি, তুমি কি কখনো খেয়াল রাখতে পেরেছো,আমি কখন একটু হাসি,কখন একটু কাঁদি?"
"প্রিয়ন্তী??? আজ তুমি বলছো এই কথা! আর খেয়ালের কথা বলছো,ওটা রাখার কখনো সময় দিয়েছো? দুজন একসাথে চাকরী করলে অনেক কিছুই মিস যেমন হয়ে যায়, আবার চাকরী না করলেও অনেক সুখের উরন মিস হয়ে যায়"
"প্রিয়ম শোন, অনেকবারই ছোট করেছি তোমার কাছে নিজেকে। একটা কথা বলি, আমি চাকরী করি আর নাই করি,আমার সবকিছু তোমাকেই কেন্দ্র করে। আমার কোন অবহেলা আজ অবধি তুমি মন থেকে পেয়েছো,তাহলে এভাবে বলছো কেন?"
"এমন কতদিন আমি তোমার জন্যে ছুটি নিয়ে ঘরে বসে ছিলাম কিন্তু তুমি পারোনি আমাকে সময় দিতে, প্রিয়ন্তী। তখন কি আমি কোন প্রশ্ন করেছিলাম? তাহলে আজ কেন করছি?"
"তুমি এভাবে বলছো কেন? তুমি তো আমাকে আমার নিজের চেয়েও অনেক ভালো চেনো। তাহলে আজ হঠাৎ আমাকে কেন চিনতে পারছো না?"
"আমি চেনা অচেনার কথা বলছি না, প্রিয়ন্তী। তোমার পাশে আমি আগেও ছিলাম,এখনও আছি কিন্তু মাঝে মাঝে যে আমি তোমাকে আমার পাশে পাই না! আমি বুঝতে পারছি তুমি ইচ্ছে করে হয়ত কিছুই করছোনা। কিন্তু সবকিছু ঠিকই থাকছে না তাহলে আমাদের এত ব্যস্ত থেকে কি লাভ? কি দরকার চাকরীর পিছনে ছুটে টাকার পাহাড় গড়ার?"
"তুমি তো এমন ছিলে না। হঠাৎ এরকমটা কেন করছো, প্রিয়ম?"
"তুমি আমাকে না জানিয়ে আমাদের বেবি এভোয়েশন কেন করালে,প্রিয়ন্তী?"
"প্রিয়ম, আমি একজন নারী। আমার মাঝে একজন মা-এর অস্তিত্ব আছে। আর এমন কোন নারী কি আছে যে নারী চায় না তার কোল জুঁড়ে সন্তান আসুক? আমার কাধে আজ একটি গুরুত্বপূর্ন দায়িত্ব আছে। আর আজ যদি আমি সেই দায়িত্ব অবহেলা করি তাহলে আমর সাথে সাথে আমার সন্তান জন্ম নিবে অনেক গুলো কাজের প্রতিকী অবহেলার অপবাদ নিয়ে! তাহল আমি তো আমার সন্তানকে কোন মেসেজ দিয়ে পৃথিবীতে আনতে পারলাম না, অপবাদ ছাড়া! আজ আমি একটি দায়িত্বে আছি, সুযোগ বুঝে আমি ধীরে ধীরে আমার দায়িত্ব থেকে সরে আসবো। তখন তো আমাদের হাতে অনেক সময় থাকবে।"
"তাহলে আমারই কি ভুল হয়েছিল তোমাকে চাকরী করতে দেয়া?"
"প্রিয়ম, এখানে ভুল কিছু নয়। সব মানুষই চায় একটু স্বাধীনতা। আর তুমি আমাকে সেই স্বাধীনতা দিয়েছো, তুমি আমাকে দায়িত্ব নিতে শিখিয়েছো আর আজ তুমিই বলছো সেই দায়িত্ব অবহেলা করে দূরে সরে যেতে!?"
"আমি সেটা বলিনি, আমি বলেছি যদি সবকিছু ম্যানেজই করতে নাই পারো, তাহলে দায়িত্ব নিয়ে লাভ কি?"
"প্রিয়ম, আমি তো বলিনি ম্যানেজ করতে পারছি না। তুমিই বলো সব কিছুর তো একটি সময় আছে, নাকি? আমি জানি, আমি কখনোই চাকরী আর আমার সন্তানকে সঠিক সময় দিতে পারবো না একসাথে। তাই আমাকে তো সবকিছুর সঠিক সময় নির্ধারন করতে হবে, তাই না? আমি চাই আমার সন্তান আমার কাছ থেকে পূর্ণ সময়, পূর্ণ ভালোবাসা, পূর্ণ স্নেহ পাক। আর এজন্য আমি একটু সময় চাচ্ছি। আমি চাই না ও অবহেলায় বেড়েঁ ওঠোক।"
"কিন্তু আমাকে তো সবকিছু জানাতে পারতে, প্রিয়ন্তী?"
"কষ্ট হয়ত বেশি পেতে তাতে, আমাকে ভুল বোঝ না। তুমি তো জানোই আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি, কতটা শ্রদ্ধা করি.............. প্লীজ, এসব বাদ দিয়ে আমার চোখে একটু চোখ রাখো না......প্লীজ, প্রিয়ম।"
"কিভাবে রাখবো, চোখের চশমাটা তো অন্তত খোল............"টেবিলে মুখোমুখি দুজনে বসে। অনেকদিন পর এভাবে চোখের ওপর চোখ রেখে একসাথে এক টেবিলে বসা। অথচ আমরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি গত দুই বছর আগে! শুনতে অবাক লাগলেও এটাই ঠিক যে চরম ব্যস্ততা আর দুজনেরই চাকরীর সুবাদে কখনো নিজেদের প্রয়োজনে এভাবে মুখোমুখি টেবিলে বসা হয়ে ওঠেনি।
আজ বাহিরে আকাশটাও ঘোলাটে, এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গিয়েছে ক্ষানিক আগেই।
আমার ভেতরে প্রশ্ন তোলপাড় খাচ্ছে। যা জানতে চাই তা জানতে পারবো কিনা তোমার কাছে সেটা ভেবেই কপাল ঘেমে যাচ্ছে। আমার যে চাই সঠিক উওর। এমন এক পরিস্থিতির সামনে দুজনকে মুখোমুখি বসতে হবে কখনো ভাবিনি।
"আচ্ছা প্রিয়ন্তী, তুমিই বলো, আমি কি আজ পযর্ন্ত কোনদিন তোমার ব্যপারে সিরিয়াস ছিলাম না?"
"আমি কখনো বলিনি তুমি সিরিয়াস ছিলে না। তবে প্রিয়ম, একটা কথা কি জানো, নদীর ওপারে বসে এপারের খবর নেয়া আর এপারে থেকে এপারেরই খবর নেয়া, দুটি দুই জিনিস।"
"শোন প্রিয়ন্তী, সবকিছু ইমোশন দিয়ে চিন্তা করলে হয় না। বাস্তবতার মাঝে আমি যেমনটি আছি, তুমিও আছো। তাহলে এত দূরুত্ব কেন দেখছো?"
"আমি কোন অবাস্তব কথা বলিনি, তুমি কি কখনো খেয়াল রাখতে পেরেছো,আমি কখন একটু হাসি,কখন একটু কাঁদি?"
"প্রিয়ন্তী??? আজ তুমি বলছো এই কথা! আর খেয়ালের কথা বলছো,ওটা রাখার কখনো সময় দিয়েছো? দুজন একসাথে চাকরী করলে অনেক কিছুই মিস যেমন হয়ে যায়, আবার চাকরী না করলেও অনেক সুখের উরন মিস হয়ে যায়"
"প্রিয়ম শোন, অনেকবারই ছোট করেছি তোমার কাছে নিজেকে। একটা কথা বলি, আমি চাকরী করি আর নাই করি,আমার সবকিছু তোমাকেই কেন্দ্র করে। আমার কোন অবহেলা আজ অবধি তুমি মন থেকে পেয়েছো,তাহলে এভাবে বলছো কেন?"
"এমন কতদিন আমি তোমার জন্যে ছুটি নিয়ে ঘরে বসে ছিলাম কিন্তু তুমি পারোনি আমাকে সময় দিতে, প্রিয়ন্তী। তখন কি আমি কোন প্রশ্ন করেছিলাম? তাহলে আজ কেন করছি?"
"তুমি এভাবে বলছো কেন? তুমি তো আমাকে আমার নিজের চেয়েও অনেক ভালো চেনো। তাহলে আজ হঠাৎ আমাকে কেন চিনতে পারছো না?"
"আমি চেনা অচেনার কথা বলছি না, প্রিয়ন্তী। তোমার পাশে আমি আগেও ছিলাম,এখনও আছি কিন্তু মাঝে মাঝে যে আমি তোমাকে আমার পাশে পাই না! আমি বুঝতে পারছি তুমি ইচ্ছে করে হয়ত কিছুই করছোনা। কিন্তু সবকিছু ঠিকই থাকছে না তাহলে আমাদের এত ব্যস্ত থেকে কি লাভ? কি দরকার চাকরীর পিছনে ছুটে টাকার পাহাড় গড়ার?"
"তুমি তো এমন ছিলে না। হঠাৎ এরকমটা কেন করছো, প্রিয়ম?"
"তুমি আমাকে না জানিয়ে আমাদের বেবি এভোয়েশন কেন করালে,প্রিয়ন্তী?"
"প্রিয়ম, আমি একজন নারী। আমার মাঝে একজন মা-এর অস্তিত্ব আছে। আর এমন কোন নারী কি আছে যে নারী চায় না তার কোল জুঁড়ে সন্তান আসুক? আমার কাধে আজ একটি গুরুত্বপূর্ন দায়িত্ব আছে। আর আজ যদি আমি সেই দায়িত্ব অবহেলা করি তাহলে আমর সাথে সাথে আমার সন্তান জন্ম নিবে অনেক গুলো কাজের প্রতিকী অবহেলার অপবাদ নিয়ে! তাহল আমি তো আমার সন্তানকে কোন মেসেজ দিয়ে পৃথিবীতে আনতে পারলাম না, অপবাদ ছাড়া! আজ আমি একটি দায়িত্বে আছি, সুযোগ বুঝে আমি ধীরে ধীরে আমার দায়িত্ব থেকে সরে আসবো। তখন তো আমাদের হাতে অনেক সময় থাকবে।"
"তাহলে আমারই কি ভুল হয়েছিল তোমাকে চাকরী করতে দেয়া?"
"প্রিয়ম, এখানে ভুল কিছু নয়। সব মানুষই চায় একটু স্বাধীনতা। আর তুমি আমাকে সেই স্বাধীনতা দিয়েছো, তুমি আমাকে দায়িত্ব নিতে শিখিয়েছো আর আজ তুমিই বলছো সেই দায়িত্ব অবহেলা করে দূরে সরে যেতে!?"
"আমি সেটা বলিনি, আমি বলেছি যদি সবকিছু ম্যানেজই করতে নাই পারো, তাহলে দায়িত্ব নিয়ে লাভ কি?"
"প্রিয়ম, আমি তো বলিনি ম্যানেজ করতে পারছি না। তুমিই বলো সব কিছুর তো একটি সময় আছে, নাকি? আমি জানি, আমি কখনোই চাকরী আর আমার সন্তানকে সঠিক সময় দিতে পারবো না একসাথে। তাই আমাকে তো সবকিছুর সঠিক সময় নির্ধারন করতে হবে, তাই না? আমি চাই আমার সন্তান আমার কাছ থেকে পূর্ণ সময়, পূর্ণ ভালোবাসা, পূর্ণ স্নেহ পাক। আর এজন্য আমি একটু সময় চাচ্ছি। আমি চাই না ও অবহেলায় বেড়েঁ ওঠোক।"
"কিন্তু আমাকে তো সবকিছু জানাতে পারতে, প্রিয়ন্তী?"
"কষ্ট হয়ত বেশি পেতে তাতে, আমাকে ভুল বোঝ না। তুমি তো জানোই আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি, কতটা শ্রদ্ধা করি.............. প্লীজ, এসব বাদ দিয়ে আমার চোখে একটু চোখ রাখো না......প্লীজ, প্রিয়ম।"
"কিভাবে রাখবো, চোখের চশমাটা তো অন্তত খোল............"