........রাত ১২:৪০ মিনিট,নাম না জানা একটি অথিতিশালায় জৈনিক ব্যক্তি ও একজন পতিতার আলাপ:
ব্যক্তি: তোমার নাম কি?
পতিতা: কি দরকার? যে কাজ করতে আইছেন সেইটা করেন।
ব্যক্তি: আহা! এখনই এতো রাগ দেখাচ্ছো কেন?
পতিতা: আপনি কি এইখানে টাকা দিয়া আসেন নাই,নাকি মাগনা আইসেন?
ব্যক্তি: তা কেন হবে, গুনে গুনে ২০০০টাকা দিছি সারা রাতের জন্য।
পতিতা: তাইলে সময় নষ্ট করতাছেন ক্যান ?
ব্যক্তি: সে আমি বুঝবো। নামটা কি তোমার? সেটা আগে শুনি.........
পতিতা: পাতা...............................
ব্যক্তি: পাতা! ! ! ! ! ! ! ! ! ! ! ! ! এ আবার কেমন নাম?
পতিতা: ক্যান,ভালা না? আমার জীবনের সাথে তো মিল খায়।
ব্যক্তি: মানে?
পতিতা: এই যেমন ধরনে আমি বাশঁগাছের পাতা, যা কিনা ছাগল খায়,গরু খায়, মানুষ কেটেঁ নিয়া শুঁকিয়ে আগুন জ্বালায়. . . . . . . . . . . . . .
ব্যক্তি: বাশেঁর পাতার সাথে তোমার সম্পক কি?
পতিতা: আমরেও তো কতজনে ভাড়া নেয়, কখনো নেশাখোঁর,কখনো বড়লোকের পোলা,বস্তির পোলা, আমারেও তো সবাই খায়। কুকুর যেমন হাড্ডি খায়! ! !.......কিন্তুএই প্রথম মনে হয় আমারে ভাঁড়া করলো বেহুদা বকবক করা একটা মানুষ!
ব্যক্তি: আমাকেই মানুষ মনে হলো,নিজেকে না?
পতিতা: কে,আমি? আমি কি মানুষ? হাত-পা থাকলেই কি সবাই মানুষ হয়???
ব্যক্তি: কেন হবে না, তুমি কি কষ্ট পাইলে কাঁদো না,হাসি পাইলে হাসো না, তোমার কি অনুভূতি নাই?
পতিতা: তাতে হইছেটা কি? আমার কষ্ট-হাসির আর কি কইলেন 'অনুভূতি', ওই গুলোর মূল্য এইখানকার ম্যানেজারের কাছে নাই . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . .
ব্যক্তি: তুমি এইখানে কতদিন ধরে আছো?
পতিতা: দেড় বছর,ক্যান?
ব্যক্তি: কিভাবে আসলা এই ভয়ংকর জায়গায়?
[পাতা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠলো...........]
ব্যক্তি: কাঁদো ক্যান?
পতিতা: আমি একটা মানুষকে খুব ভালোবাসতাম। আমি ভাবতাম সেও আমাকে খুব ভালোবাসে,কিন্তু..................
ব্যক্তি: "ভাবতাম" এইটার মানে কি?
পতিতা: ওই আমারে এইখানে আইনা বিক্রি কইরা দিছে...........
ব্যক্তি: কি!!!!!!!!! তোমার ভালোবাসার মানুষ???
পতিতা: হ-হ-হ, ৬০ হাজার টাকায়। আমি ক্লাস নাইনে পড়তাম। ক্লাস এইটে বৃওি পাইছিলাম।
ব্যক্তি: বলো কি? তুমি পড়াশোনা করতে?
পতিতা: আমারে একদিন ঘুরতে নিয়া যাবার কথা বইলা এইখানে ওই পিচাশটা রাইখ্যা চইলা গেলো। আমি কত কাঁদলাম চিৎকার করে, আমার চিৎকার কেউ কানে নিলো না!!!!
ব্যক্তি: থামো,থামো, আর কেঁদো না। একটু পানি খেয়ে নাও।
পতিতা: বাপ-মার জন্য মনটা খুব কাঁদে। কতদিন ধইরা দেখিনা...........................
ব্যক্তি: তোমার বাড়ি কোথায়?
পতিতা: দরকার নাই আপনার জানার. . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . .
ব্যক্তি: তুমি এখন কি চাও?
পতিতা: আমার ঘুম ধরার আগেই আপনি আপনার বকবক বন্ধ করেন।
ব্যক্তি: মুক্তি চাও?
পতিতা: মানে?
ব্যক্তি: এই জীবন থেকে মুক্তি চাও?
পতিতা: আপনার কি ধারনা,আমি বন্দি?
ব্যক্তি: এটাকে কি মুক্ত জীবন বলে?
পতিতা: আমি ভালো আছি। একটা কথা কি জানেন, জাইনা শুইনা কষ্ট পাওয়া সহ্য করা যায় কিন্তু না জাইনা শুইনা কষ্ট পায়লে, সে কষ্ট সহ্য করা কঠিন।
ব্যক্তি: মানে?
পতিতা: আমার ভালোবাসার মানুষ আমারে কষ্ট দিতে পারে এইটা আমি কোনদিনই ভাবি নাই, তবুও দিছে। এইটা আমি আজ পযন্ত মানতে পারিনি। তাই এইখানে জাইনা শুইনা কষ্ট নিই, অজানায় থাকতে চাই না......................
ব্যক্তি: অনেক হয়েছে, যাও লাইটটা বন্ধ করো।
[পাতা লাইটটা বন্ধ করে দিলো]
পতিতা: কই যান, ওঠেন ক্যান?
ব্যক্তি: চলে যাচ্ছি,লাইটটা বন্ধ করতে বললাম যেন কেউ না দেখে।
পতিতা: কি কন? আপনার কাজ করবেন না? আপনে তো ট্যাকা দিছেন ম্যানেজার রে.........
ব্যক্তি: আমি পিচাঁশ নই. . . . . . . . . . . . . . . . . . .
পতিতা: আপনি সত্য করে বলেন তো, আপনি কে?
ব্যক্তি: আমি লেখক. . . . . . . . . জীবনের বাস্তব ঘটনা থেকে ছোট ছোট অবাস্তব ঘটনা লিখি। কিন্তু আজ বাস্তব জীবন থেকে বাস্তব ঘটনাই লিখবো।
পতিতা: তা ঠিক আছে কিন্তু আমি এখন সারা রাত একা থাকমু?
ব্যক্তি: হাহা-হাহা-হাহা-হাহা-হাহা-হাহা...........দরজাটা লাগিয়ে দাও। বাহিরের কাউকে বুঝতে দিও না যে, ভিতরে তুমি একা আছো। দেখি তোমার জন্য কিছু করতে পারি কিনা। ভালো থেকো, জলদি সুস্থ জীবন ফিরে পাবে।
পতিতা: দাড়াঁন, একটা কথা শুনেন।
ব্যক্তি: কি, কথা?
পতিতা: আমার আসল নাম, "মারিয়া"............................... আপনার নামটা কি?
ব্যক্তি: সেটা আগামীকাল খবরের কাগজ থেকেই জানতে পারবা, যদি খবরের কাগজ পড়ো...............!
[এরপর মারিয়ার হাতে একটি কাগজে পএিকার নামটি লিখে দিয়ে বের হয়ে গেল জনৈক ব্যক্তি]
[মারিয়া একা ঘরে বসে রইলো...............]