দেশের সম্ভাবনাময় তরুন-তরুনীদের অধিকহারে ব্যবসা-উদ্যমী উদ্যোক্তাতে পরিণত করার বিষয়টি এখন আমার প্রধান এজেন্ডাগুলোর একটি। এ নিয়ে আমার কিছু ভাবনা-চিন্তা আমি এখানে আর পত্রিকান্তরে প্রকাশ করেছি। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় বা তরুন-তরুনীদের সমাবেশে আমি এ কথাগুলো এখন বলি, বেশি বেশি। গেল সপ্তাহে মানিকগঞ্জে ইয়েস সমাবেশে আর ১০ তারিখে আইআইইউসির ঢাকার ক্যাম্পাসে এই বিষয়গুলো বলার চেষ্টা করেছি।
আজ প্রথম আলোতে একটি গুগল পাওয়ার তরে হাজার গুগল গড়ো নামে একটি নিবন্ধ লিখেছি। বলতে চেয়েছি আমাদের তরুনদের অনেক বেশি সুযোগ দিতে হবে। তাদের অনেকে সফল হবে একবারে, কাউক কাউকে কয়েকবার ‘সাকসেসফুলি ফেইলিওর’ হতে হবে। সাফল্যের সঙ্গে ফেল করার কথাটি আমি একটি বিশেষ দ্যোতণাতে বলি। এর মানে হল কোন উদ্যমই শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয় না। প্রতিটি ব্যর্থতা থেকে কিছু না কিছু শেখার আছে। যে একবার ফেল করে কিছু শিখলো তাকে পরের বারের সুযোগ দিতে হবে।
ব্যক্তিগত পর্যায়ে, যে সকল তরুন-তরুনী আমার সঙ্গে কাজে বা অন্য কোনভাবে যুক্ত তাদের সবাইকে আমি ব্যবসা করতে বলি। বেশ কটি উদ্যম এরই মধ্যে সফল হয়েছে, যদিও আমার তরফ থেকে হয়তো তেমন বেশি কিছু করতে পারি নি। এ সকল অভিজ্ঞতা থেকে এখন আমি নিশ্চিত যে, সুযোগ পেলে আমাদের তরুন-তরুনীরা (জেন্ডার নিরপেক্ষ থাকার জন্য আমার সব রচনায় আমি ছাত্র-ছাত্রী না লিখে শিক্ষার্থী লিখি। কিন্ত তরুন-তরুনীর সমার্থক একক শব্দ আমার জানা নেই।) যে কোন কাজ করতে পারে।
আমাদের শহুরে আর গ্রামের তরুন-তরুনীদের জন্য আমাদের অনেক সুযোগ তৈরি করতে হবে। কে করবে আল্লাহ মালুম। তবে, যার যা করার আছে করতে হবে এই আর কী।
রেজা সেলিম ভাইকে বলেছি কুমিল্লা বা বাগেরহাটে একটি উদ্যোক্তা পরিচর্যা কেন্দ্র করার জন্য। তাহলে হয়তো ঢাকার বাইরের তরুন-তরুনীদের ব্যাপারেও একটি সফল (কয়কেটি ব্যর্থ!) উদাহরণ তৈরি করতে পারবো আমরা।
তবে, আপাতত আমার কাজের এলাকা আইটি আর আইটিইএস সেবা। কারণ এটা আমি কিছুটা হলেও বুঝি। গ্রামের ব্যাপারে আর কাউকে পেলে হয়তো আরো কাজ করার সুযোগ হবে। সোনালি ব্যাংক ইতিমধ্যে গ্রামের তরুনদের জন্য একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এটি হলে প্রত্যেক ইউনিয়নে অন্তত ২ টি স্থাপনা গড়ে উঠবে যেখানে আইটি নির্ভর সেবা দেওয়া যাবে। তবে, এর বাইরেও আরো অনেক কিছু দরকার। নানান ধরণের সহায়তা/সুযোগ এসবের দরকার।
দেশে উদ্যমী উদ্যোক্তাদের সঙ্গে প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের কীভাবে যুক্ত করা যায় সেটিও কেন এতকাল সেভাবে ভাবা হয়নি তা বুঝি না। সিলেট যাওয়ার পথে পথে দেখা যায় কমিউনিটি সেন্টার আর হাওয়াখানার ছড়াছড়ি, জনশূন্য এবং কর্মকাণ্ডশূন্য। এ বিনিয়োগটা কী ভিন্নভাবে হতে পারতো না? হয়তো বা।
চেষ্টা করা যাক।
ভেঞ্চার ক্যাপিটালের মতো করে গ্রামীণ ফাণ্ডের কাজ শুরু হয়েছিল বলে জানি। তবে, রাব্বানী স্যারের বাইটেক অধিগ্রহণ ছাড়া আর কোন কাজ তেমন হয়েছে বলে আমি শুনি নি। নিশ্চয়ই আরো অনেক বিনিয়োগ হয়েছে।
আমি ঠিক জানি না, কেমন করে অনেক অনেক উদ্যোম, চেষ্টা আর ব্যর্থতার মধ্যে সমন্বয় হবে? আমি কেবল জানি থেমে গেলে চলবে না।
সবার সেকেন্ড ডিফারেন্সিয়াল নেগেটিভ হোক।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:০৭