আমি আর কোনো গ্রীষ্ম চাইনা ;
খরা শেষের বৃষ্টিও চাইনা ,
কালবৈশাখী ঝড় চাইনা,
জৈষ্ঠের রোদ ঝলসানো
সোনাঝরা দিন চাইনা।
আমি আর কোনো বর্ষা চাইনা;
ঘরদোর, প্লাবিত হয়ে যাক
হাস-মুরগি, গরু-মহিষ
ভাসিয়ে নিয়ে যাক
তা আর চাইনা,
বর্ষার প্রবল বর্ষণে
নির্জনে ভালোবাসার সাধ জাগেনা,
চিত্তচাঞ্চল্য বেড়ে উঠেনা।
আষাঢ়ের রিমঝিম বৃষ্টির
ছন্দও আর শুনতে চাইনা।
সারা রাত ধরে শ্রাবণের ধারে
আর ভিজাবোনা সকল সাজ।
আমি আর কোনো শরৎ চাইনা;
শরতের কাশফুল আমার জন্যে
ফুটেনি কোনোদিন
আর শরতের শিশির শুভ্র
শাপলা দেখে অবাক হতে চাইনা।
বেদনাঘন আশ্বিনী জ্যোৎস্নাময়
রাতও আমি আর চাইনা।
আমি একটা হেমন্ত চাই
মাঠে মাঠে নবান্নের উৎসব দেখতে চাই,
সেই সাথে ঘাস ও ধান গাছের ডগায়
জমতে শুরু করা
শিশিরের বিন্দু দেখতে চাই।
কৃষকের মুখে এক অনাবিল
সুখের হাসি দেখতে চাই।
ঘরে ঘরে সোনালী ফসল তোলার
মহা-আয়োজন দেখতে চাই ।
কার্তিকের রাতে ঝরতে থাকা
হিম হিম কুয়াশা আর
বাতাসে শীতের স্পর্শ পেতে চাই।
মাঠে-মাঠে ফসল কাটার ধুম,
ধানের আঁটি কাঁধে নিয়ে কৃষকের
পথচলার চিরায়ত দৃশ্য দেখতে চাই।
কুয়াশার আঁচল সরিয়ে ভোরে ওঠা
কোমল রোদ পোহাতে চাই।
আমি একটা শীতকাল চাই
কুয়াশাচ্ছন্ন শীতের সকালে
কৃষকের লাঙ্গল-জোয়াল কাঁধে নিয়ে
মাঠে চলে যাওয়া দেখতে চাই।
সকাল বেলার মিষ্টি রোদে বসে
ছেলেবেলার মতো ছোটবড় সবার
সাথে রোদ পোহাতে চাই,
সন্ধ্যায় শুকনো পাতা আর খড়
পুড়িয়ে আগুন পোহাতে চাই।
নদীর পারের বালুচরে ফুলকপি,
মুলা, লাউ, পাতাকপি, ধনেপাতা,
শালগম, গাজর, টমেটো,
মাষকলাই এসবের বাগানে ঘুরে
আসতে চাই।
বাগান থেকে নিজ হাতে শসা
কুড়িয়ে খেতে চাই।
ফসল কাটার পরে খালি ঐ মাঠে
গোল্লাছুট,ব্যাডমিন্টন খেলতে চাই,
মা-খালদের হাতে বানানো ধোঁয়া ওঠা
গরম ভাপাপিঠা খেতে চাই
আমি সত্যিই এমন একটা
হেমন্ত আর শীত চাই।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০১