somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছবি ব্লগ "ভ্রমণ" _____২

০৯ ই নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজকের ছবি ব্লগে থাকছে বিদেশ ভ্রমণের কিছু ছবি। সেই একই ক্যামেরা মানে আমার প্রিয় মোবাইল হ্যান্ডসেট।প্রত্যেকটা ছবি আমার নিজ হাতে তোলা। সাত দিনের সফরে সবচেয়ে ভালো লাগা জায়গাগুলোই নিয়েই আজকের ছবি ব্লগ।

বাস কিংবা প্রাইভেট কারে গেন্টিং হাইল্যান্ডে পৌঁছার প্রবেশ পথ ।
১)মেঘের রাজ্য গেন্টিং হাইল্যান্ড,মালয়শিয়া।



মালয়েশিয়ার রাজধানী থেকে ঘণ্টা দুয়েকের রাস্তা। ছয় হাজার ফুট উঁচু পাহাড়ের ওপর গেন্টিং হাইল্যান্ডকে মালয়েশিয়ার সবচেয়ে উঁচু জায়গা বলা হয়।মালয়েশিয়ার দামি-দামি শপিং মল, রেস্তোরাঁ ও ফাস্টফুড শপসহ নিত্য প্রয়োজনীয় সব কিছু আছে এখানে। এটি শিশুদের অন্যতম প্রিয় স্থান; কারণ এখানে শতাধিক প্রকারের রাইড আছে। রয়েছে গেন্টিং থিমপার্ক। রোলার কোস্টারসহ নানা ধরনের রাইড রয়েছে।এই শহরটি জুয়াড়িদের কাছে খুবই পরিচিত। বিশ্বের অনেক দেশ থেকে জুয়াড়িরা এখানে জুয়া খেলতে আসেন। গেন্টিং হাইল্যান্ডের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ক্যাসিনো। গেন্টিং হাইল্যান্ড গেলে দেখা যায় বিশ্বের সব দামি দামি গাড়ি, মালয়েশিয়ার অন্য কোথাও কিন্তু এই গাড়িগুলো সব সময় দেখা যায় না। এখানে আরেক মজাদার আকর্ষণ ভূতের আড্ডা। মানুষ ভূত সেজে ভয় দেখাচ্ছে।

গেন্টিং এর দামি-দামি শপিং মল।

Genting Skyway

বাসে করে পাহাড়ে উঠে গেন্টিং স্কাইওয়ের সামনে নামা যায় ।ক্যাবল কারে চড়তে হলে গেন্টিং স্কাইওয়ের সামনেই নামতে হবে। ক্যাবল কারে না উঠতে চাইলে অবশ্য সরাসরিও বাসে করে গেন্টিং হাইল্যান্ডে পৌঁছে যাওয়া যায়। এশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘতম এবং দ্রূততম ক্যাবল কার এটি।
মেঘের ওপরে মেঘ । মেঘের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসছে ক্যাব, আবার হারিয়ে যাচ্ছে মেঘের ভেতরে। ভয় না পেয়ে উপায় ছিলনা,হঠাত করে মেঘ এসে ঘিরে ফেলে, চার দিক শুধু সাদা আর সাদা,কিছুই দেখা যায়না। পথের দৈর্ঘ্য ৩.৩৮ কিলোমিটার। হাইল্যান্ডের একেবারে মাথায় ছয় হাজার ফুট উঁচুতে পৌঁছাতে সময় লেগেছিল প্রায় আধা ঘন্টা। মালয়শিয়া ভ্রমণের সবচেয়ে আকর্ষণীয় জায়গা ছিল এটি এই ক্যাবল কারের জন্য ।

২)মসজিদ পুত্রাজায়া।
মালয়েশিয়া ভাষায় পুত্রা মসজিদ। যা হলো মালয়েশিয়ার পুত্রাজায়ার প্রধান মসজিদ। ১৯৯৭ সালে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। শেষ হয় দুই বছর পর। এর উচ্চতা ৩৮১ ফুট। স্থপতি হলেন নিক মুহাম্মদ মাহমুদ । এর নির্মাণ শৈলীতে রয়েছে আধুনিক,ইসলামিক এবং মুরিশ স্থাপত্য।



পুত্রাজায়া। পরিচ্ছন্ন, সুপরিকল্পিত এক শহর। মালয়েশিয়ার প্রশাসনিক রাজধানী। আশির দশকে এ শহরের জন্ম। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মাহথির মোহাম্মদের হাতে এ শহরের গোড়াপত্তন। রাজধানী কুয়ালালামপুর থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরে আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন স্থাপনার এ শহর যে কাউকে মুগ্ধ করবে। প্রতিদিন শতাধিক দেশের হাজারো পর্যটক এ শহরের সৌন্দর্যে বিমোহিত হন।
উন্নত বিশ্বের মডেল এই সিটি বিদেশি পর্যটকদের কাছে অতি মাত্রায় আকর্ষণীয়। এখানে রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। মালয়েশিয়া সরকারের গুরত্বপূর্ণ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের কার্যালয়। রয়েছে সরকারি বেসরকারি ডজন খানেক বিশ্ববিদ্যালয়। রয়েছে দৃষ্টিজুড়ানো বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ করতে কৃত্রিম ভাবে তৈরি করা হয়েছে বেশকিছু লেক । লেকগুলোর ভেতরে ভবনের জন্য রয়েছে ছোট ছোট নৌযান ও বর্ণিল ঝর্নাধারা। যা পর্যটকদের বিশেষভাবে আকৃষ্ট করে। আর অনন্যসব স্থাপনাগুলো দেখতে বিশ্বের সব প্রান্তের মানুষ ছুটে আসছে।

পুত্রা মসজিদের প্রধান ফটক।

প্রধান ফটক পেরোনর পর ভিতরে ঢকার ফটকগুলি।

নামাজের স্থান পর্যন্ত ঢোকার আগে চারপাশ থেকে বারান্দার অংশগুলো।

মসজিদের রুমের কয়েকটা অংশ ।


একটা লেক এর কয়েক সাইড থেকে নেয়া ছবি, আরো লেক আছে,সবগুলো দেখার এনার্জি ছিলনা আমার।

পুত্রা মসজিদের এক পাশে এটা আরেকটা মসজিদ।

মসজিদটির সামনের একটি অংশ!

আন্ডারগ্রাউন্ডের একটি রেস্টুরেন্ট এর ভেতর থেকে নেয়া লেকের ছবি।

৩) কে,এল টাওয়ার,কুয়ালালামপুর ।


বুকিত নানস অরণ্য সংরক্ষণ জুড়ে চমৎকারভাবে উদীয়মান, কে.এল. টাওয়ার বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা টেলিকম টাওয়ারের মধ্যে অন্যতম রূপে মর্যাদা লাভ করেছে। এই আকাশ-চুম্বী টাওয়ারটির উপর একটি বাল্বের অবলম্বিত অবস্হান, মালয়েশিয়ার ঘূ্র্ণায়মান খেলনার প্রতিকৃতির অনুরূপ। কে.এল.টাওয়ারে একটি ঘূ্র্ণায়মান রেস্তোঁরা ও একটি পর্যবেক্ষণ ডেক আছে। এগুলি শহরের দৃশ্য পরিদর্শনের তারিফ করার জন্য শ্রেষ্ঠ স্থান। টাওয়ারটি ইসলামী টাইলসের আকারে ইসলামী ঐতিহ্য, পরম্পরাগত পূর্ণাঙ্গ নিদর্শন ও ইসলামের সারাংশ প্রতীকির ছাপ বহন করে।
কে.এল. টাওয়ার তিনটি পর্যায়ে নির্মিত হয়েছিল :
প্রথম পর্যায়ের কাজ ছিল জালান পূনচাকের সম্প্রসারণ ও নির্মাণ স্থল থেকে মাটির খনন। এটি 1991 সালের 4-ই অক্টোবর শুরু হয় এবং সম্পন্ন হয় 1992 সালের 15-ই আগষ্ট।
দ্বিতীয় পর্যায়টি 1992 সালের 6-ই জুলাই এবং 1993 সালের 15-ই এপ্রিলের মধ্যে সুসম্পন্ন হয়। টাওয়ারটির ভিত্তি স্থাপন করা হয়েছিল এবং টাওয়ারটির বুনিয়াদ নির্মিত হয়েছিল।
টাওয়ার নির্মাণের, তৃতীয় পর্যায়ের কাজটি 1994 সালের মে মাসে শুরু হয়। এই পর্যায়ে প্রধান বারান্দা এবং গম্বুজটি সংযুক্ত হয়।
কে.এল.টাওয়ারের নির্মাণকার্যের পর, 1994 সালের 13-ই সেপ্টেম্বর অন্তিম ছোঁয়া প্রদান করা হয়।

কে,এল টাওয়ার লেক।

৪) IIUM (International Islamic University Malaysia) ।

“আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় মালয়েশিয়া”টি “আই.আই.ইউ.এম” নামেও পরিচিত। উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে খ্যাতিমান এই বিশ্ববিদ্যালয়টি আন্তর্জাতিক বিশ্বে বিশেষ স্থান দখল করে আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুন্দর পরিপাটি বিশাল ক্যাম্পাস, সাজানো গোছানো দালানকোঠা, মসজিদ, লাইব্রেরী ইত্যাদি রয়েছে। এটি একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় । ১৯৮২ সালে ও আই সি (ঙওঈ) সম্মেলনে ডক্টর মাহাথির মুহাম্মদ সর্বপ্রথম এ ধরনের একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। ২৩ মে ১৯৮৩ ইংরেজি তারিখে মাত্র ১৫৩ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি তার যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে প্রতি বছর এই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৩ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়টির মূলমন্ত্র হচ্ছে “জ্ঞান ও গুণের বাগান” । বিশ্ববিদ্যালয়টির চ্যান্সেলর হচ্ছেন পদাধিকার বলে পাহাং এর সুলতান আহমদ শাহ্। প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন ডঃ রাইস ইয়াতিম। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টি ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাং কিং এ ৭ম স্থান অধিকার করে আছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি কুয়ালালামপুরের পাহাং রাজ্যের সেলাঙ্গন এর গোম্বাকে সাতশ একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত। বর্তমানে তাদের একাধিক ক্যাম্পাস আছে , যে গুলো গোমবাক , গ্যামবাং, পেতানলিং জায়া, পারসিয়ারাং, কুয়াংতাং এবং কুয়ালালামপুর ক্যাম্পাস।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক ।



ভেতরের কয়েকটা সাইড।

ভেতরে রয়েছে অসাধারণ একটা লেক ।

লেকের উপরের ব্রীজ।

বিশ্ব বিদ্যালয়টির বাহির দিক পুরোটা জুড়ে রয়েছে রিং রোড। রিং রোড এর বিভিন্ন পাশ থেকে নেয়া এই ছবিগুলো।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ২:২৫
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮


পেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাছে থেকে আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৪৬

আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

২০০১ সালের কথা। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটা আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশ গ্রহণ করে আমার কোম্পানি টেকনিক্যাল অফারে উত্তীর্ণ হয়ে কমার্শিয়াল অফারেও লোয়েস্ট হয়েছে। সেকেন্ড লোয়েস্টের সাথে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সংস্কারের জন্য টাকার অভাব হবে না, ড. ইউনূসকে ইইউ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত ইইউর রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার এবং সফররত এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের পরিচালক পাওলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নারী বুকের খাতায় লিখে রাখে তার জয়ী হওয়ার গল্প (জীবন গদ্য)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৩২



বুকে উচ্ছাস নিয়ে বাঁচতে গিয়ে দেখি! চারদিকে কাঁটায় ঘেরা পথ, হাঁটতে গেলেই বাঁধা, চলতে গেলেই হোঁচট, নারীদের ইচ্ছেগুলো ডিমের ভিতর কুসুম যেমন! কেউ ভেঙ্গে দিয়ে স্বপ্ন, মন ঢেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×