দেশের একাধিক জাতীয় পত্রিকায় তার সংগ্রহশালা নিয়ে ফিচার ছাপা হয়েছে।
টিভি ও রেডিওতে প্রতিবেদন এবং সাক্ষাতকার নেওয়া হয়েছে। ইতিহাস এবং প্রত্নতত্ত্ব বিষয়ে দেশের ডাকসাইটে অনেক লেখক ও গবেষক তার কাছে ছুটে আসেন অনন্য রশদের আশায়।
দেশের একাধিক জাদুঘর ও প্রত্নতাত্ত্বিক মিউজিয়ামে তিনি তার সংগ্রহশালা থেকে প্রাচীন দোয়াত, কলম, মুদ্রা দান করেছেন, এখনো করে যাচ্ছেন।
নাম তার, নাজমুল হক মন্টু, অন্তরঙ্গ বন্ধু সাহেদের চাচা। তিনি একজন শখের আর্কাইভওয়ালা! তার বাড়ির নাম দোয়াত বাড়ি!
শত শত বছর ধরে এই দেশের মানুষ তাদের লেখালেখির কাজে বিভিন্ন ধরণের দোয়াত ও কলম ব্যবহার করেছেন। মাটি, তামা, রূপা, দস্তা, কাঠ...নানা উপকরণে তৈরি নানা ধাচ ও ছাচে গড়া শত শত দোয়াত ও কলম। এইসব দোয়াতের শরীরী গড়ন এবং শৈল্পিক উপকরণে রয়েছে নানা বৈচিত্র্য।
আজ সেই বৈচিত্র্যের সাগরে ডুব দিয়েছিলাম। প্রায় তিন ঘন্টা সময় নিয়ে মন্টু চাচা তার সংগ্রহশালার প্রতিটা জিনিস নিজ হাতে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখালেন।
এইগুলা সংগ্রহ করার জন্যে কীভাবে সারা দেশে ঘুরে বেড়াতে হয়েছে সেই গল্প করলেন।
শত শত বছরের পুরনো দোয়াত, কলম, পিলসুজ, কুপি বাতি, হুক্কা, তালাচাবি- কোনটা মাটির তৈরি, কোনটা দস্তা, রূপা, তামা সীসা কিংবা কাচের তৈরি।
একেকটার গায়ে খুদাই করা এরাবিক ক্যালিওগ্রাফি, একেকটা দেখতে বুদ্ধিস্ট প্যাগোডারর মতো, একেকটা আবার বিভিন্ন সনাতনী দেবদেবীর ও বাহনের ছবি সম্বলিত অপূর্ব ইতিহাসের স্মারক।
মন্টু চাচা বললেন, শুধু বাংলাদেশেই নয়, সমগ্র উপমহাদেশে তার মতো ঋদ্ধ দোয়াত ও কলমের ব্যক্তিগত সংগ্রশালা ৩টির বেশি নেই।
১৯৮১ সাল থেকে তিনি এইসব প্রত্ন নিদর্শন সংগ্রহ করতে শুরু করেন, এখনো এই ধারা অব্যাহত আছে
কোন ধরণের সরকারি বা বেসরকারি পৃষ্টপোষকতার আশা না করে শুধু মাত্র শখের বসে এই ঢাকা শহরে বসে তিনি যে ম্যাজিক আমাদের দেখিয়েছেন, তা সত্যিই বিস্ময়। এই বিস্ময়ের আবেশ নিয়েই আজ বাড়ি ফিরছি এবং শপথ করছি ফিরে ফিরে আসব!
ইতিহাস ভালোবাসি, ইতিহাস আমাকে ভালোবেসেছে- এই তো এক জীবনের শ্রেষ্ঠতম প্রাপ্তি!
© মুহম্মদ নিজাম
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:১৫