মিরপুর ২ নং বাস স্ট্যান্ড ও পুরবী বাস স্ট্যান্ড এ আওবস্থিত । আমার কাছে এদের ব্রেড আর কেক মিরপুরের কুপার্স থেকে অনেক বেটার মনে হয় ।
মিরপুর ২ এর টা থেকে পুরবীর টাতে বসার স্পেস বেশি ও ডেকরেশনও ভালো ।
২. বৈকালীঃ
মিরপুর পূরবী বাসস্ট্যেন্ড এ অবস্থিত বৈকালী রেস্টুরেন্ট এক কথায় এখানকার ঐতিহ্যবাহির কাতারে পরে । এক সময় বাসার প্রতি সকালের নাস্তা এ রেস্টুরেন্ট থেকেই নেয়া হতো । তবে সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে এর টেষ্ট এখন আর অতটা আগের মতো নেই । তারপরেও ওরা আগের মতোই আন্তরিক আর মিষ্টভাষি এবং এখানকার শিক-কাবাব কিন্তু এখনো জিভে জল আসার মতো । আসলে অবশ্যই একবার ট্রাই করবেন কিন্তু ।
৩. California Fried Chicken :
এটা মিরপুর ১০ থেকে ১৩ দিকে যেতে হাতের ডান পার্শে পরবে । গার্লস আইডিয়ালের অপজিটে আর একটু সামনে যেয়ে ।
এখানে যদি ঢুকেন তবে এর লাচ্ছিটা খেয়ে দেখতে পারেন । অন্তত এই গরমে ভাল লাগবেই ।
৪. Cherish :
মিরপুর অরিজিনাল ১০ এ হলমার্কের পাশেই এই (ফালতু) চেরিশ । এই খানে কিছু খাইতে ঢুকলে আপনাকে হতে হবে Perish. হলমার্কের সামনে আড্ডা দেয়া জোরা কৈতররা অতিশয় বাব দেকাইতে আগে এইখানে ডুকতো । আর বাফের ট্যাকায় ওই ফুলা মাইয়াগোরে খাওয়াইয়া ফুটানি করতো । তবে এখন আর আগের মতো নেই । কারন এখন পুলাপাইনের লজ্জা বালাই নাই বললেই ছলে । এখন আর পুলাপাইন রেস্টুরেন্টে যাওয়ার লাইগা অপেক্ষায় থাকে না । পকেটে ট্যাকা না থাকলে মাইয়া লইয়া রাস্তাতেই আড্ডা মারতে বইসা ফরে ।
৫. City Lounge :
মিরপুর সারে-১১ বাস স্ট্যান্ডের একটু আগেই পরবে সেতারা জনভেনশন হল । ঐ বিল্ডিং-এর ৩য় তলায় এটা । খাবারের মান ও দাম দুটোই হাতের নাগালে । তবে এ জাতীয় রেস্টুরেন্ট গুলার মূল টার্গেট বিয়ে টাইপের অনুষ্টান বিধায় এরা ছুটা কাস্টমারদের নিয়ে অতটা বদার না । তবে আপনি গার্ল-ফ্রেন্ড নিয়ে যান, তখন আবার কুত্তার মতো (শেষে ভালো টিপস পাওয়ার আশায়) দৌড়ায়া আসবো গু চাটার লাইগা ।
৬. Cooper's :
পুরবী বাস স্ট্যান্ডের AFC'র নিচে অবস্থিত । এর ব্যাপারেআপনারা ভালই অবগত থাকলেও জীবনে কোন দিন এই ব্র্যাঞ্চ থেকে কিছু কিনবেন না । প্রথমত এখানে যে সব ব্রেড ও অন্যান্ন ফুড আইটেম থাকে তার মান নিয়ন্ত্রনে শালারা চোখ-কান খোলা রেখে ঘাপলা করে ।
আমি একবার ব্রেড কিনতে যেয়ে এর প্যাকেটে দেখলাম ইদুরে কাটার মতো করে ফুটা এবং তা সাথে সাথে সেলস ম্যান কে দেখালে সেলস ম্যান বলে "এই টা কোনো ব্যাপার না, কোন সমস্যা হবে না ।" কথা কাটাকাটির পরে ম্যানেজারের নাম্বার চাইলে ওই সেলস ম্যান তার নিজের নাম্বার দিয়ে বলে এইটা ম্যানেজারের নাম্বার । পরে বাসায় এসে যখন ফোন করে দেখলাম এইটা ওই ছেলেরই নাম্বার, তখন ওই বদমাইশটা বলে "ম্যানেজারের নাম্বার নিয়ে আপনি কি করবেন ?"
ওরে পরে ঘারায়া সুজা বানায়া দিসিলাম ।
৭. CP Fried Chicken :
মিরপুর সারে ১১ তে অবস্থিত । এর ব্যাপারে সবাই কম বেশি জানেন । অনেকে এর ফ্রাইড চিকেন ভালো বললেও আমার কাছে অতটা টেষ্টি মনে হয় না ।
৮. Cafe Express :
ক্যাফে এক্সপ্রেসের খবর হয়তো মিরপূর বাসিরাই জানে না । না জানারই কথা, তবে এখানে এলে হায়দ্রাবাদি বিরিয়ানি টা কখনোই মিস করবেন না। আমি খাশির মাংস খেতে একদম পছন্দ করি না, কিন্তু এই রেস্টুরেন্টের হায়দ্রাবাদী বিরিয়ানী আমাকে খাশির মাংস খেতে শিখিয়েছে।
অরিজিনাল ১০ এ অবস্থিত ।
৯. Fortuna Fried Chicken FFC :
FFC'র কথা অনেকেই জানেন । সো, এর খাবারের ব্যাপারে বলার তেমন কিছুই নেই । এটা ১১ নং বাস স্ট্যান্ড-এ অবস্থিত ।
১০. গ্রামীন রেস্তরাঃ
আগে প্রতি সাপ্তাহেই একবার/দুবার করে যাওয়া হতো গ্রিল খেতে । এর গ্রিল আর সাথে যে মেয়োনেস টা দেয়, অনেক মজার । একের আগের ওয়েটার গুলো চেইঞ্জ হওয়াতে নতুন গুলা চিনে না আর তাই টিপস দিয়ে ওদের কাছে ভিয়াইপি হওয়ারও কোন ইচ্ছা হয় না । তবে খাবারের মান ভালো ।
১০ নং গোল চক্করে অবস্থিত ।
১১. Hot Cake :
সারে ১১'র পিৎজা হাটের পাশে অবস্থিত । এখানে আপনি ভাল মানের কেক ও ব্রেড আইটেম অপেক্ষাকৃত কম দামে পাবেন । সো, কুপার্সে জুতা মারেন আরেক বার ।
১২. মোঘল পার্টি সেন্টারঃ
মোঘল আমলে এখানে পার্টি না হলেও আপনি নিজেকে মুঘুল বাদশা মনে কইরা এর গ্রিল খায়া কইলাম বিদিশা হয়া যাইতারেন।
সারে ১১ তে অবস্থিত ।
১৩. পিয়াং কিং :
১০ ও ১৩ নং এর মাঝামাঝি এই চাইনিজ রেস্টুরেন্ট টি পরে । এখানকার পরিবেশ টা ভালই, তবে একটু পুরোনো বিধায় অনেকে এখন আর আগের মতো তেমন ভিড় করে না । তবে আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি, এখানকার খাবারের মান দাম অনুযায়ী অনেক ভালো । অন্তত মিরপুরে থাকা ফালতু জিনজিয়ানের থেকে ভালো ।
১৪. উয়াং বিং :
এটা পিয়াং কিং এর পাশেই অবস্থিত ।
এর ব্যাপারে বিস্তারিত না বলে এক কথায় বলিঃ "জাস্ট কিক দেম অল"। এখানে ওয়েটার থেকে শুরু করে ম্যানেজার পর্যন্ত নাম্বার ওয়ান বদমাইশ। এদের কথা বলার স্টাইলই অভদ্রের মতো । স্পেইস একেবারে ছোট আর এদের মেন্টালিটি তারচে ছোট । জীবনে এখানে কেউ গেলে সাথে ৮-১০ জন নিয়ে যাবেন, না হয় আপনার গায়ে কথায় কথায় হাতও তুলে দিতে পারে । ম্যানেজার বদমাইশ টা হুদাই সামনে একটা কোরান-শরীফ খুইলা রাখে আর কাস্টমার আসলে ওইটা খোলা রেখেই শুরু করে ।
শালার পুতেরা এখানে মনে হয় রেস্টুরেন্টের বিজনেস টা ভোগাস । দুই নাম্বার বিজনেস আছে শিওর ।
১৫. Quick Bite :
অনেকে বলে এর খাবার নাকি ভালো । কোন আক্কেলে বলে আমার বুঝে আসে না । এর খাবার যেমনই বিশ্রি, তেমনই চরা দাম । আর ইদানিং গেলে এই বদ গুলা কারেন্ট থাকলেও ঠিক মতো এসি ছাড়ে না । বললেও নানা কজ দেখায় । গরমে বাইরে থেকে যেয়ে বসে একটু আরাম না করে আপনি ওখানে চরা দামে কষ্ট কিনছেন ! তবে ভাগ্য ভালো যে এর অপজিটে "চন্দ্রবিন্দু" ও "সী-প্যালেস" দুইটা রেস্টুরেন্ট হয়ে গেছে । তাই এর মুখে ঝাটা ।
এটা অরিজিনাল ১০ এ অবস্থিত ।
১৬. রাব্বানী হোটেলঃ
মিরপুর ১০ এর ১ নং বেনারশি পল্লীর রোডে এটি অবস্থিত । মিরপুরের খাবারের ঐতিহ্য একে বললে ভুল হবে না । এখানে বিরিয়ানি, চাপ-পরোটা ব্যাপক ।
১৭. সৌদিয়া ক্যাটারিং এন্ড রেস্টুরেন্টঃ
রাব্বানির ঠিক পাশেই নতুন হওয়া এটি খাবার ও দামের দিক থেকে ভালোই ।
১৮. উপভোগ কাবাব ঘরঃ
এখানে কাবাবের থেকে আমার কাছে এদের চাপ পরোটা টা বেশি ভালো লাগে ।
মিরপুর অরিজিনাল ১০ এ অবস্থিত । কুইক বাইটের নিচে ।
১৯. Yamme Yamme :
ইয়াম্মি ইয়াম্মির কেক ও ব্রেড আইটেমের ব্যাপারে বলার কিছু নাই । তবে এখানে ফাস্ট ফুড আইটেমের মধ্যে আমার কাছে প্রিয় হলো, চিকেন (কম্বো) নাগেট । যা অন্য কোথাও ভালো লাগে নাই বাট, এদের টা অনেক ডিলিশাস ।
অরিজিনাল ১০ এ বুক-প্যলেস এর পাশে অবস্থিত ।
২০. পূর্ণিমা রেস্তরাঃ
মিরপুর ২ নাম্বার স্টেডিয়ামের ঠিক ডান পার্শেই এই রেস্তরা টির গ্রিল একেবারে অসাম টাইপের । না খেলে মিস ।
২১. ঝালঃ
গতকাল এটা দেখে খাওয়ার জন্য ঢুকছিলাম আর সাথে থাকা এক জুনিয়র বললো যে এখানে ওপেনিং সুন লেখা ।
চালু হয়া নেক সবার আগে আমিই খামু
পুরবী বাস স্ট্যান্ডের বৈকালী রেস্তরা এর পাশে অবস্থিত ।
কেমন লাগলো, জানাবেন ? নেক্সট পর্বে মিরপুরের সব ঐতিহ্যবাহী খাবারের রেস্টুরেন্ট/দোকানের নাম দিবো ইনশাল্লাহ । তখনকার কুপানিটা দেইখেন।
..............................................................................................
এখন আমি একটু শর্টে আমার এই ভোজন-রসিক হওয়ার কাহিনী টা বলি, (গত পর্বে পাঠকের কিছু প্রশ্নের বিপরিতে)।
আমি রাস্তায় দাঁড়িয়ে নরমালি আড্ডা মারি না আর মারতেও তেমন একটা পছন্দ করি না । যারা আড্ডা মারে তাদেরকে কোন রকম নেগেটিভ মিন করছি না । এটা আমার ব্যাক্তিগত ইচ্ছা যে আমি রাস্তায় দাড়িয়ে বা বসে আড্ডা মারবো না ।
আর তাই কোন রেস্টুরেন্টে ঢুকে একটু ভারি টাইপের কোন আইটেম অর্ডার দিয়ে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয়া শুরু করি । আর এভাবে আপনি অনায়াসে ২-ত ঘন্টা আড্ডা দিতে পারবেন । তাছাড়া রাস্তায় ধুলাবালি মেখে আড্ডা দেয়ার চেয়ে সুন্দর ও গুছানো পরিবেশে, এসির মধ্যে বসে আড্ডা মারার মজা কোথায় পাবো । (আড্ডা মারার প্লেস যদি থাকে তবে অন্য কথা) ।
এভাবে এলাকার কোনো নতুন রেস্টুরেন্ট হলেই ওখানে একটু বেটার বিহ্যাব(সমাদর) ও খাবার পাওয়ার লোভে যেয়ে আড্ডা মারি । এটার দ্বারা আমার খাদ্য-বিলাশের চেয়ে আমার দৃষ্টভঙ্গি টাই বেশি দায়ি । খাই খাই টাইপের মানুষ হলে আমার স্বাস্থের এ অবস্থা থাকতো না কখনই ।
................................................................................
আগের পর্বঃ
ঢাকা-মিরপুরের সকল খাওয়ার (ব্র্যান্ড ও ননব্র্যান্ড) রেস্টুরেন্ট সমুহ । পর্বঃ- ১
এই পর্বের পরের পর্বঃ
ঢাকা-মিরপুরের সকল খাওয়ার রেস্টুরেন্ট সমুহ ও ঐতিহ্যবাহী খাবার । শেষ-পর্ব ।