অফিস থেকে মুখটা কালো করে বের হয়েছে মহুয়া। আজ একটু তাড়াতাড়ি বের হতে চেয়েছিল ও, কিন্তু হলো না। আজ নিলয়ের আসার কথা। হুট করে কেনো আজকে ও সিলেট থেকে ঢাকায় আসলো সেটা নিয়ে এখনও মহুয়া কনফিউজড। মহুয়া আর নিলয়ের সম্পর্কটা ওরা ছাড়া ওদের আশেপাশের আর কেউ জানে না। এত দূরে থাকে ওরা দুজন আর এত কম ওদের দেখা হয় যে ওরা নিজেরাও এখনও এই সম্পর্কের ভবিষ্যত জানেনা। তাই ওরা ইচ্ছা করেই গোপন রেখেছে ওদের কথাটা সবার কাছ থেকে।
নিলয়ের সাথে মহুয়ার পরিচয়টা সিলেটেই। ওরা আলাদা ডিপার্টমেন্টে পড়লেও কয়েকটা কমন ফ্রেন্ডের মাধ্যমে ওদের পরিচয়টা হয়। নিলয় একদম মহুয়ার বিপরীত মেরুর মানুষ। খুব চুপচাপ, শান্ত , চশমাপড়া, একটু বোকাটে চেহারার ছেলে । একদিন নিলয় মহুয়াকে ফেসবুকে রিকোয়েস্ট পাঠালো হুট করেই। তারপর ফেসবুকে কথাবার্তা, আর একসময় ওখানেই ওদের দুজনের সারাদিন চ্যাটিং চলতে থাকে। একসময় বুঝতে পারে ওরা দুজনই যে দুজনকে ছাড়া দুজনের আর চলছে না। মহুয়ার পড়াশোনা শেষ হয়ে গেলো আর ও চাকরি নিয়ে চলে আসলো ঢাকায়। আর নিলয় সিলেটে থেকে গেলো পড়া শেষ করার জন্য। তারপর মাঝে মাঝে হুটহাট করে ঢাকায় দেখা , একটু ঘোরা, সারাদিন চ্যাটিং আর স্কাইপে কথা বলা এভাবেই চলছে ওদের দিনগুলো।
"কখন আসলে?" "এইতো একটু আগে, তোমার আজ এত দেরী হলো যে?" "হুম, অফিসে আজ কাজ ছিল অনেক।" "চলো কোথাও বসি।" দুজনে একটা কফিশপে বসে কফির অর্ডার দিলো। "আমি আর পারছি না", নিলয়ই নীরবতাটা ভাংগল। "মানে??!!" মহুয়া অবাক হয়ে তাকিয়ে বলল। "মানে এভাবে কতদিন? আর আমি জানিই না যে এর ভবিষ্যত কি!!" মহুয়া ওর কথাটা শুনে চুপ করে থাকলো কয়েকমিনিট। কিছুক্ষণ বাইরের গাড়িদেখলো রাস্তার । তারপর নিলয়ের দিকে তাকিয়ে বলল," ঠিক আছে। আজকে থেকে আমাদের মাঝে আর কিছু নেই, আমরা শুধু বন্ধু।" নিলয় ওর দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে বলল, "তুমি খুশি? তোমার কি একটুও খারাপ লাগছে না?" "নাহ। ব্রেকআপই যখন হবে তখন এত ভেবে কি লাভ। আর ঐ টিপিক্যাল কান্নাকাটি করে ব্রেকআপ করাটা আমার পছন্দ না। তার থেকে দুজন হাসিমুখে আলাদা হবো।" কথাটা বলা শেষও হয়নি, মহুয়া দেখে নিলয় বাচ্চাদের মতো হাুউমাউ করে কাঁদছে। "আরেহ কাঁদছ কেনো?" মহুয়া নিলয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। নিলয় কান্নার দমকে কিছুই বলতে পারে না। শুধু ফোঁপাতে থাকে। মহুয়া হাসে। বলে,"আমাকে ছাড়া যখন থাকতেই পারবে না তাহলে বলো কেনো এসব? বোকা ছেলে!!!" নিলয় মহুয়ার হাতটা ধরে ফোলা ফোলা চোখ নিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে থাকে।
***অনেকদিন পর লিখলাম। নিলয় চরিত্রটার মত একটা মানুষকে ইদানীং দেখছি, তাই হুট করেই লিখতে মনে চাইলো!!! জানিনা কেমন হলো লেখাটা , একটু বেশিই ছোট হয়ে গেলো!!***