পলা জেন একজন শ্বেতাঙ্গ আমেরিকান মহিলা। বয়স আনুমানিক তেতাল্লিশ। দেখতে শুনতে বেশ ভাল। থাকে মিনেসোটা রাজ্যের পশ্চিমের একটা শহরে। শহরের নাম সারটেল। লোক সংখ্যা মাত্র ষোল হাজার। শহরটি অবস্থান মিসিসিপি নদীর দুই তীর ঘেঁষেই। পলা পেশায় এমব্যামার অর্থাৎ বাংলায় বললে একজন শবদেহ সজ্জাকারিণী বা মৃত দেহের রুপকার।। এই লাইনে তার প্রায় আঠার বছরের অভিজ্ঞতা আছে। পলার মতো একজন সুন্দরী মহিলা যে শবদেহ সাজ-সজ্জা করানের মতো চ্যালেঞ্জিং কাজ করতে পারে তা ছিল কল্পনাতীত। সে তার বাবার কাছ থেক এই পেশায় আসার উৎসাহ পেয়েছে। এখন যে ফিউনারেল হোমে সে কাজ করে সেটা তার বাবার হাতেই প্রতিস্ঠিত।
পৃথিবীতে যে কত পদের কাজ ও পদবী থাকতে পারে তা বিভিন্ন দেশ ও দশের সাথে না মিশলে বোঝা যায় না। এক্ষেত্রে অবশ্য বাংলাদেশও কোন অংশে পিছিয়ে নেই। ঢাকার গুলিস্তান থেকে শুরু করে সদরঘাট পর্যন্ত যদি মানুষের পেশা ভিত্তিক জরিপ করা হয় তাহলে দেখা যাবে ওই কয়েক মাইলের মধ্যে কয়েকশত পদের অভিনব পেশা রয়েছে। তাদের মধ্যে মৃতদেহ জড়িত কিছু পেশা পাওয়া যাবে। যেমন বোরকা পরা এক মহিলা তার স্বামীর মৃতদেহ নিয়ে রাস্তার পাশে বসে আছেন। সে ওই দেহ দেশে নিয়ে যেতে পারছেন না। কিছু সাহায্য লাগবে। হৃদয়বান মানুষের এগিয়ে এসে কিছু টাকা দান করে দায়বদ্ধতা থেকে মুক্তি পাবেন। মৃতদেহটি সাদা কাপড়ে ঢাকা কিন্তু মুখখানি খোলা। দুই একটা মাছি সেখানে খেলাধুলা করছে। তা ছাড়াও কান-দাঁত পরিস্কার থেকে শুরু করে ক্যান্সারের ঔষধ আবিস্কারকও ওই রাস্তায় পাওয়া যাবে। বছর পাঁচেক আগে আমেরিকার ফ্লোরিডার উত্তরে তালাহাসি শহরের দিকের এক নির্জন উপ-শহরের গ্যাস স্টেশনে আর এক আমেরিকান লোকের সাথে আমার পরিচয় হয়। সে পেশায় একজন ডেণ্টিস্ট অর্থাৎ দন্ত চিকিৎসক। কিন্তু সে শুধু মাত্র ঘোড়ার দাঁতের চিকিৎসা করে থাকেন। ছোট বেলায় পড়েছিলাম ঘোড়ার ডাককে বলা হয় হ্রেষা। ইংরেজিতে বলে স্নরট (Snort). ঢাকার ধানমণ্ডিতে ওই ডাক্তার ভদ্র লোকের যদি কোন ক্লিনিক থাকতো তাহলে নিশ্চয়ই নাম হতো ‘হ্রেষা দন্তালয়’। নিচে লেখা থাকতো ‘যত্ন সহকারে ও সূলভ মুল্যে ঘোড়ার দন্ত চিকিৎসা করা হয়। বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ অনুগ্রহপূর্বক বিনা অনুমতিতে ঘোড়া নিয়ে ডাক্তারের রুমে ঢুকিবেন না’।
মূল প্রসঙ্গে ফিরে আসি। ইংরেজিতে ‘এমব্যামিং’ (Embalming)নামক শব্দটির অর্থ হচ্ছে শব বা মৃতদেহ স্বল্প বা দীর্ঘ সময়ের জন্য সুরক্ষাকরন বা সৌন্দর্যকরন প্রক্রিয়া। এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে শবদেহ কে একটা বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তরল পদার্থ (রক্ত, খাবার পানিয় ইত্যাদি) বের করে, সুরক্ষা, সুবাসিত বা সৌন্দর্যবর্ধন করা যাতে করে মৃত ব্যক্তিটিকে ফিউনারেলে সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করা যায় দর্শনার্থীদের জন্য। এই প্রক্রিয়াটি যে স্থানে হয়ে থাকে সেটাকে বলা হয় ফিউনারেল হোম। আর যারা এই কাজটি করে থাকেন তাদেরকে বলা হয় ‘এমব্যামার’(Embalmer)।
এমব্যামিং করা একটি মৃতদেহ দর্শনার্থীর জন্য প্রস্তুত। ফটো সৌজন্যঃ গুগল
আমেরিকায় কেউ মারা গেলে বাড়িতে মৃতদেহ রাখবার নিয়ম নেই। মৃতদেহ হয় হাসপাতাল অথবা ফিউনারেল হোমে থাকতে পারে। সাধারনত মানুষ মারা গেলে মৃতদেহ বাসা বা হাসপাতাল থেকে সরাসরি ফিউনারেল হোমে নিয়ে যাওয়া হয়। একজন এমব্যামার যে কাজটি সব সময়ই করে থাকেন তা হচ্ছে মৃতদেহের ডান দিকের কলার বোনের কাছে অল্প কিছু অংশ কেটে তা থেকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় টিউবের মাধ্যমে রক্ত বের করে নিয়ে, ওখান দিয়ে শরীরে স্পেশাল ফ্লুইড ঢুকিয়ে, গোসল দিয়ে, পোশাক-আশাক, সাজ-সজ্জা করিয়ে, ক্যাসকেটে (বাক্স) ভরে অনেকটাই জীবিত মানুষের মতো করে উপস্থাপন করা। এই কাজের জন্য প্রয়োজন পড়লে দেহকে কাটা ছেঁড়া ও সেলাইয়েরও প্রয়োজন পড়ে। বিশেষ করে যে সমস্ত দেহ দুর্ঘটনার শিকার হয়। তছাড়া অনেক ধরনের ক্যামিকালও ব্যাবহার করা হয়। আমেরিকা সহ পশ্চিমা বিশ্বের অনেক দেশেই মৃত দেহকে ‘এমব্যামিং’ করতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে ‘এমব্যামিং’ করাটা বাধ্যতামুলক। তবে কোন দেশের অঙ্গ রাজ্যের নিজস্ব আইন ও ধর্মীয় বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে নিয়মের ব্যতিক্রম ঘতটে পারে। যেমন আমেরিকার অনেক রাজ্যে কেউ দুর্ঘটনায় বা আত্নহত্যা জনিত কারনে মৃত্যুবরন করলে দেহকে ‘এমব্যামিং’ করতে হয়। এক্ষেত্রে ইহুদী ও মুসলমানরা ধর্মীয় বিশ্বাসের কারনে এমব্যামিং প্রক্রিয়া থেকে দূরে থাকে। এই দুই ধর্মের অনুসারীরা বিশ্বাস করে মৃতদেহের প্রতিটি অংশ বা অঙ্গই দেহের সাথে কবরে যায়।
আমেরিকার ষোলতম প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিঙ্কন আততায়ীর হাতে মারা যান ১৮৬৫ সালের এপ্রিল মাসের ১৫ তারিখে। তার দেহকেও এমব্যামিং করে রাখা হয়। কারন তার দেহকে প্রায় বিশ দিনের ট্রেন যাত্রায় ওয়াশিংটন থেকে সুদূর শিকাগো শহর পর্যন্ত নিয়ে আসা হয়। যদিও দুরত্ব সাতশত মাইল কিন্তু তখনকার রেল যাত্রা এখনকার মতো সরাসরি ছিলনা। তাছাড়া পথিমধ্যে বিভিন্ন শহরে তার দেহ দর্শনার্থীদের জন্য প্রদর্শনীর জন্য এত বেশি দিন সময় নেয়া হয়।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে ধারনা করা হয়ে থাকে যে মৃতদেহ এমব্যামিং করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে সেই মধ্য আমেরিকান ইনকান ও মিশরীয় সভ্যতা থেকে যখন মৃত দেহকে মামিফাইড করা হতো। ইনকান হচ্ছে আজকের দক্ষিন আমেরিকার পেরু। এক্ষেত্রে ইউরোপিয়ানরা অনেক পিছিয়ে ছিল। ষোলশত শতাব্দির মাঝামাঝি সময়ে ইউরোপিয়ানরা কালে ভদ্রে কিছুটা এমব্যামিং করতো। তবে প্রাচীন চীনের হ্যান ডাইনাস্টির নাকি খুব সুনাম ছিল মৃতদেহ সুরক্ষা করার ব্যাপারে।
যাহোক, পলা জেন আমার প্রতিবেশী জনের গার্ল ফ্রেন্ড ছিল। ওদের বন্ধুত্বের বয়স দশ বছরেরও বেশি কিন্তু তখনও ওরা বিয়ে করেনি। জন পেশায় একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের রাত্রিকালিন ম্যানেজার। আর তার গার্ল ফ্রেন্ড পলা জেন যে কিনা এমব্যামার বা মৃতদেহ সাজ-সজ্জাকারিণী। খাটি বাংলায় মরার বিউটিশিয়ান।
জনের সাথে আমের ভাল বন্ধুত্বের সুত্র ধরেই পলা জেনের সাথেও পরিচয় ঘটে। থাকতামও পাশাপাশি। অধিকাংশ সময়ই আমি পলাকে তার কাজের বিষয়ে নানা রকম প্রশ্ন করতাম। সেও উত্তর দিত দ্বিধাহীন ভাবে। একবার তাকে আমি একটা অনুরোধ করলাম এই বলে যে যেভাবেই হোক আমি একদিন তার সাথে ফিউনারেল হোমে গিয়ে তার কাজ সারেজমিনে দেখতে চাই। প্রথমবার সে আমার অনুরোধের ধরন দেখে হকচকিয়ে গেল। আমেরিকায় আর যাই হোক প্রকৃত এমপ্লয়ী ছাড়া অন্য কেউ কারও কোন কর্ম ক্ষেত্রে কারন ছাড়া ঢুকতে পারে না। এসব ক্ষেত্রে আইন খুবই পরিস্কার। এসব জানার পরও আমি পলাকে আরও কয়েকবার একই অনুরোধ করলাম। তার কারন ছিল একটাই যে পলা তার ফিউনারেল হোমের ডিরেক্টর কাম এমব্যামার। সুতরাং কেউ যদি আমাকে কখনও এমব্যামিং দেখবার সুযোগ দেয় সেটা পলা ছাড়া অন্য কারো দ্বারা সম্ভব নয়।
এক বুধবার দুপুর বেলা আমার মোবাইল ফোন বেজে উঠলো। ওপার থেকে পলার কণ্ঠস্বর ‘তুমি যদি এমব্যামিং দেখতে চাও তাহলে এক ঘণ্টার মধে চলে আসো। আজকে আমি তোমাকে একটু সময়ের জন্য ঢুকাতে পারব। আজ শুধু আমি একা কাজ করবো। ঠিকানা ‘হোয়াইট ফিউনারেল হোম, সতের নর্থওয়েস্ট ড্রাইভ, সারটেল, মিনেসোটা, যুক্তরাষ্ট্র। আমি অফিসে ছিলাম। তখন চারটা বাজতে দশ মিনিট বাকি। দ্বিতীয়বার না ভেবে শুধু বললাম, আমি যথাসময়ে ওখানে থাকব। অফিস থেকে বের হয়ে সোজা রওনা দিলাম হোয়াইট ফিউনারেল হোমের দিকে। ভাগ্য ভাল যে সেদিন রাস্তায় খুব বেশি ট্রাফিক ছিল না তবে আকাশ ছিল মেঘলা আর মাঝে মধ্যে টিপটিপ বৃষ্টি। আবহাওয়াটা অনেকটাই ছিল ভুতুরে।
যথাসময়ে আমি ফিউনারেল হোম খুঁজে পেলাম। বাইরে দাড়িয়ে সদর দরজায় বেল টিপলাম। পলা বের হয়ে এলো। হোয়াইট ফিউনারেল হোমটি মূল শহর থেকে অনেকটাই বাইরে। খুব একটা কোলাহল নেই। একপাশে একটা রাস্তা সোজা চলে গেছে আরও উত্তরের দিকে। অন্যপাশে মাইটি নদী মিসিসিপির ভিউ। সাদা রঙের একটা কাঠ কাম ইটের দেয়াল দেয়া বিল্ডিং। ছাদের উপর অনেক উঁচু পর্যন্ত একটা চিমনি। এক পাশে একটা দরজা ছাড়া বিল্ডিংটির খুব বেশি আর দরজা বা জানালা চোখে পড়ল না। খুব সম্ভবত এভাবেই ফিউনারেল হোম বানাতে হয়। আশে পাশে সূউচ্ছু পাইন গাছ দিয়ে বিল্ডিংটি ঘেরা। সামনে বিরাট করে সাইন বোর্ডে ইংরেজিতে লেখা হোয়াইট ফিউনারেল হোম। ১৯৬৮। মনে হল অনেক পুরাতন একটা ফিউনারেল হোম।
আমাকে দেখেই পলা খুব দ্রুত একটা ব্রিফিং দিল যে ভিতরে ঢুকে কি কি করনীয় আর কি কি করনীয় নয়। যা বুঝলাম তা হল ভিতরে আমার স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অল্প কিছুক্ষন তার কাঁটাছেঁড়া দেখা ছাড়া খুব বেশি একটা কিছু করতে পারব না। ডেডবডি সমন্ধে কিছু জানতে চাইলে সে বলল যে ভেতরে দুইটা ডেড বডি রাখা আছে। সে এখন যেটার কাজ করবে তা হচ্ছে পঞ্চাশের কাছাকাছি এক ভদ্রলোকের দেহ যে কিনা গতকাল এক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। তার পরিবারের ইচ্ছানুযায়ী ফিউনারেল হোমে তাকে দর্শনার্থীর জন্য রাখা হবে পরের দিন। অন্য ডেড বডিটার কাজ হবে পরের দিন।
আমাকে গ্লাভস, এপ্রন, গ্লাস দেয়া হল। কিছুটা সংশয় কিছুটা উত্তেজনা নিয়ে আস্তে আস্তে ওইগুলো পড়ে নিলাম। আফটার অল, মৃত ব্যক্তির কাছাকাছি যাওয়া মানে মৃত্যুকে কাছাকাছি দেখা। আমেরিকার মানুষকে মৃত্যু নিয়ে আলাপচারিতা করতে খুবই কম শুনেছি। কারো মৃত্যু হলে ফিউনারেল হোমের লেকচার বা শেষ বিদায় ভাষণে তারা কথা বলে মৃত ব্যক্তির জীবনের প্রাপ্তিগুলো নিয়ে। বিলাপ করে কান্নাকাটি করে বিদায় দেয়ার সময় ও মন মানসিকতা আমেরিকান সোসাইটির নেই। উপরন্ত নেচে-গেয়ে অনেক সময় আপনজনের সুখের স্মৃতি বা জীবনী নিয়ে গল্প করে বিদায় জানায়। কালচার টু কালচার পৃথিবীতে যে কত রকমের ভেদাভেদ আছে।
আমি ভিতরে ছিলাম অল্পকিছুক্ষন। প্রায় বিশ মিনিটের মতো হবে। যতটুকু দেখার দেখলাম। দেহকে অত্যন্ত যত্ন ও শ্রদ্ধা সহকারে নাড়াচাড়া করা হয়। রুমটার ভেতর মার্বেল পাথরের দুইটা বড় বড় টেবিল। দেয়ালে একটা হোয়াইট বোর্ডে কিছু নামধাম লেখা। দুইপাশের দেয়ালে দুইটা শেলফ। তাতে অনেক পদের ক্যামিকালের বোতল রাখা। সিলিংয়ের এক কোনায় ফ্যান। দুই কোনায় দুই রকম পানির কল, বেসিন, দুইটা ড্রাম। দেয়ালে বায়ো পয়জনিংয়ের উপর কিছু নির্দেশনা। একপাশে পর্দা দিয়ে ঘেরা যা দিয়ে অন্য রুমে যাওয়া যায়। খুব সম্ভবত পাশের রুম হচ্ছে হিমঘর যেখানে কাজ শেষে দেহকে ফ্রিজে রাখা হয়। পলা তার কাজ কিছুটা ব্যাখ্যা করলো। যেমন মৃতদেহকে সাধারানত শক্ত হয়ে যায়। তাকে বেশ রিলাক্স মুডে নিয়ে আসতে হয়। এর জন্য মিছু মাসাজের প্রয়োজন হয়। সাথে বিশেষ ক্যামিকাল দিয়ে স্কিন পরিস্কার করতে হয় যাতে করে তা উজ্জ্বল দেখায়। প্রায় সময়ই মুখের ভেতরে সেলাই করে তার ভেতরে কটন বা তুলা ভরে দিতে হয় যাতে করে মুখ হা হয়ে না থাকে এবং হাসি হাসি একটা ভাব থাকে। চোখের পাতা যাতে খোলা না থাকে টার জন্য এক ধরনের গ্লু ব্যাবহার করা হয়। শেভ করানো থেকে শুরু করে মাথায় শাম্পু দিয়ে বেশ পরিপাটি করে পরিবারের পসন্দসই পোশাক পরানো হয়। তারপর ক্যাস্কেটে ভরে দর্শনার্থীর জন্য তৈরি রাখা হয়। এই কাজগুলো করতে কমপক্ষে আধা ঘণ্টা থেকে শুরু করে চার ঘণ্টা পর্যন্ত লাগতে পারে। তবে অধিকাংশ সময় তার দুই জন সহকারী ছোট খাট কাজগুলো করে এগিয়ে রাখে। ...(চলবে)
-জামাল সৈয়দ
মিনেসোটা, যুক্তরাষ্ট্র
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ২:৩১