সর্ম্পক বা রিলেশান এমন একটি বিষয় যা মানুষের মাঝে রক্তের বন্ধন তৈরি করে ও মানুষকে সমাজের সাথে খাপ খাইয়ে চলতে সহায়তা করে, আর এ রক্তের বন্ধন ও আত্নীয়তার সর্ম্পক তৈরি করার জন্যেই মহান আল্লাহ তায়ালা মানুষকে পুতপবিত্র, সুনিয়ন্ত্রিত,বৈশিষ্ট্যমন্ডিত, ভদ্র, সুরুচিপূর্ন ও স্বচ্ছ রাখতে বিয়ে -শাদীর ব্যবস্থা রেখেছেন । একজন মানুষ যেনো তার মাতৃপরিচয় দিতে পারে সেজন্য মহান আল্লাহ তায়ালা বিয়ে-শাদীর মাধ্যমে পরিবার প্রথা চালু রেখেছেন। এই প্রথাকে সর্ম্পূণভাবে ভেংগে চুরমার করে দিচ্ছে স্বাধীন যৌন ভোগ। ছেলে হয়ে যাচ্ছে যেনাকার,আর মেয়ে হয়ে যাচ্ছে যেনাকারীণী। সন্তান হয়ে যাচ্ছে ব্যভিচারী অসৎ লোকের সন্তান। মানুষের ভেতর মহান আল্লাহ সৎ হওয়ার প্রবণতা সৃষ্টি করে রেখেছেন। তাই সকল সন্তান স্বাভাবিকভাবে চায় একজন সৎ বা সতী মা-বাবার পরিচয়ে পরিচিত হতে। তার হোক একজন সতী স্ত্রী, হোক সতী মা বা বোন । অন্যদিকে একজন স্ত্রী চায় একজন সৎ স্বামী । তাহলে কেন অবৈধ্যভাবে যৌনকর্ম সম্পাদানে মানুষ পা বাড়ায়?ব্যভিচার বা যেনা হচ্ছে একটি ছেলে ও একটির মেয়ের মধ্যে অবাধ যৌনচার।
তাই আল্লাহ এ সর্ম্পকে বলেন যে, 'আর তোমরা ব্যভিচারের কাছে যেয়ো না, নিশ্চয় তা অশ্লীল কাজ ও মন্দ পথ' ( ( সূরা বানী ইসরাঈল-৩২ )।
আমরা যদি পাশ্চ্যাতের দিকে বা পশ্চিমা বিশ্বের তাকাই তাহলে আমাদের এ বিষয়টা আরো পরিস্কার হয়ে যাবে যে, ব্যভিচার বা যেনা কিভাবে আত্নীয়তার সর্ম্পক নষ্ট করে দেয়। পশ্চিমা বিশ্বে বা পাশ্চ্যাতে বিয়ে-শাদীর বিষয়টি খুবই কম চোখে পড়ে এরা বন্ধু-বান্ধব তৈরি করে সর্ম্পক সৃষ্টি করে এবং অবাধভাবে মেলামেশা করে থাকে । এসব অমুসলিম খৃষ্টানরা আত্নীয়তার সর্ম্পক তৈরির চেয়ে বন্ধু-বান্ধবের সাথে সর্ম্পক তৈরিতে বিশ্বাসী । এসব দেশের ছেলে মেয়েরা বছরে ৫২ সপ্তাহে ৫২ জন বয়ফ্রেন্ডের সাথে মেলামেশা করে থাকে এবং ছেলেরাও তাই করে। এতে করে এদের মধ্যে শুধু বন্ধু-বান্ধব সূলভ আচরণ তৈরি হয় ভালোবাসার বন্ধন তৈরি হয় ঘনিকের জন্যে । ভালোবাসা ফুরিয়ে গেলে এরা আর সর্ম্পক ধরে রাখেনা আবার এরা অন্য একজনের সাথে সর্ম্পক তৈরি করে, এভাবেই এদের জীবন শেষ হয়ে যায়। এরা জীবনের শেষ সময়ে এসে খুবই একাকীত্ব অনুভব করে তাদের তো আত্নীয় স্বজন খুব নেই। তারা তো শুধু বন্ধু-বান্ধব আর বয়ফ্রেন্ড-গার্লফ্রেন্ড এ বিশ্বাস করার কারনেই শেষ বয়সে হয় তারা কোনো বৃদ্ধাশ্রমে নতুবা তাদের নিজের বাড়িতেই কুকুর বিড়ালের সাথে জীবন কাটাতে হয়। তারা যদি কোনো পার্টির আয়োজন করে তাহলে সেখানে শুধুই বন্ধু-বান্ধবরা থাকে কারন তাদের তো আত্নীয় স্বজন বলতে কিছুই থাকে না। তাদের মামা-মামি, খালা-খালু, ফুফু-ফুফা, চাচা- চাচি নেই বললেই চলে। কারন এরাতো এদের জীবনটা শুধুই বয়ফ্রেন্ড আর গার্লফ্রেন্ডদের সাথে নিয়ে পার করেছে । এদের নিজের ছেলে মেয়েদের প্রতিও কোনো মায়া মমতা থাকে না,আর এরা আত্নীয়তার সর্ম্পকই বা বুঝবে কিভাবে ? তখন বৃদ্ধাশ্রমই তাদের একমাত্র বেঁচে থাকার অবলম্বন হয়ে থাকে।
আজ আমাদের দেশেও এসব যেনা বা ব্যভিচার আস্তে আস্তে দিনে দিন বেড়ে চলছে । এতে করে আমাদের দেশেও দেখা যাচ্ছে মানুষ আত্নীয়ের প্রতি আস্তে আস্তে সর্ম্পক নষ্ট হয়ে যাচ্ছে । বর্তমান ছেলে মেয়েরা অবাধ মেলামেশার দিকে ঝুকে যাচ্ছে । তাই আমরা যদি একজন সতী স্ত্রী, সতী মা ও সতী বোন হিসেবে নিজেকে পেতে চাই তাহলে আমাদের নিজেদেরই এ বিষয় নিয়ে ভাবতে হবে । আমাদের অভিভাবকদের এ বিষয়ে আরো সচেতন হতে হবে । তাই আমরা যদি আত্নীয়তার সর্ম্পক ও ভালোবাসা আরো সুদৃঢ় রাখতে চাই ও আমাদের জীবনকে আরো সুন্দরভাবে সাজাতে চাই, তাহলে আমাদেরকে ইসলামের নিদের্শিত পথেই চলতে হবে । ব্যভিচার বা যেনা মানুষকে আত্নীয়তার বন্ধন থেকে দুরে সরিয়ে দেয় এবং ঘনিকের জন্যে ভালোবাসার মোহ তৈরি করে। এই ঘনিকের মোহই মানুষের মধ্যে আত্নীয়তার সর্ম্পক নষ্ট করে মানুষের জীবনকে খারাপ পথে পরিচালিত করে । আল্লাহ আমাদের সবাইকে এসব খারাপ ও অন্যায় পথ থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দান করুন ।