somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সোনার হরিণ হারিয়ে গেছে!

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড এই বাক্যটুকু আমরা সবাই বহুবার পড়েছি ও শুনেছি । যতোদিন পৃথিবী নামক এই গ্রহটির অস্তিত্ব টিকে থাকবে ততোদিন প্রতিটি শিক্ষিত মানুষ তার জীবনে কোনো না কোনো ক্ষেত্রে এই শব্দটি উচ্চারণ করে থাকবেন। বিভিন্ন সাংবাদিক, সাহিত্যিক , বুদ্ধিজীবি, পেশাজীবি, নাট্যকার, শিক্ষক ও বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তি তাদের বিভিন্ন কর্মকান্ডে আলোচনায় এই প্রবাদটি বলে থাকেন। ছোট বেলা একটি শিশু যখন স্কুলে যায় সে তার শিক্ষকের কাছ থেকে ও বই থেকে শব্দটি পড়েছে ও শুনেছে বহুবার । আমরাও পরীক্ষায় ভাবসম্প্রসারন হিসেবে ও ইংরেজী অনুবাদে বিভিন্ন ক্লাসে পড়েছি বর্তমানেও পড়ছে এবং ভবিষতেও ছাত্রছাত্রীরা এই প্রবাদটি পড়বে; আমরা সবাই জানি যে, শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড আজ আমাদের এই শিক্ষার হার বহুগুণে বেড়েছে এতে কোনো সন্দেহ নেই। বর্তমানে ক্লাস ফাইভ এর সমাপনী পরীক্ষায় আমরা তা দেখতে পেয়েছি। জেএসসি, জেডিসি, এসএসসি, এইচএসসি ও অন্যান্য উচ্চ ও সম্মান শ্রেনীতেও আমরা লক্ষ করছি যে, সব ক্ষেত্রেই পাশের হার বেড়েছে; কিন্তু শিক্ষার গুনগত মান কতটুকু বেড়েছে সেটা তো আমরা দেখতেই পাচ্ছি। এক সময় শিক্ষাক্ষেত্রে প্রচুর নকল প্রবনতা দেখা দিয়েছিলো সেটা ৯০ এর দশকে মহামারি আকারও ধারন করেছিলো। বর্তমানে নকল প্রবনতা ছাত্রছাত্রীদের মাথা থেকে প্রায় চলেই গেছে; কিন্তু এখনো কোচিং প্রবনতা রয়েই গেছে। এক শ্রেনীর শিক্ষক কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের ক্লাসে পাঠদান না করে কোচিং এ উৎসাহিত করেন, এতে করে ছাত্রছাত্রীরা সাময়িক কিছুটা লাভবানও হন ও পরীক্ষায় ভালো ফলাফলও করেন; কিন্তু নিজেদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে ও নিজেদের জ্ঞানের পরিধিকে আরো সামনে এগিয়ে নিতে গিয়ে ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে গিয়ে আর প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারেন না। বর্তমানে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন পরীক্ষাগুলোতে পাশের হার আকাশচুম্মী শতকরা ৯৭% সমাপনী পরীক্ষায় পাশের হার ও জেএসসিতে ৮৭% পাশের হার ও এসএসসি ও অন্যান্য পরীক্ষায় একই অবস্থা । এটা কি ছাত্রছাত্রীদের পড়াশুনায় প্রচুর মনোযোগী নাকি শিক্ষকের উদারতা? এতে করে দেশে পাশের হার ও শিক্ষার হার বাড়লেও চাকুরী ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের এক ধরনের প্রতিযোগিতায় নামতে হয়। । গ্লোবাল নেটওয়ার্কিং এর যোগে চাকুরী ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের প্রবল প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। অনেক সময় পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করেও ভালো চাকুরী ও অনেকে না পেয়ে হতাশায় ভুগেন । আবার অনেকে রাজনৈতিক বিবেচনায় ভালো ফলাফল না করেও ভালো একটি চাকুরী পেয়ে যান। যখন একটি ছেলে ও একটি মেয়ে ভালো ফলাফল করে উচ্চ শিক্ষিত হয়েও একটি চাকুরী পেতে তাকে হন্যে হয়ে ঘুরতে হয় । সে দেশে চাকুরী তো সোনার হরিণের মতো। একদিকে রাজনৈতিক অস্থিরতা অন্যদিকে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে সেশনজট অপরদিকে বয়সের বাধ্যবাধকতা । আবার বর্তমানে কোটাভিত্তিক চাকুরী । বর্তমানে মেধার মূল্যায়ন না করে চাকুরীতে দলীয়করন, রাজনীতিকরন করার কারনে চাকুরী পাওয়া যায় না। তাই দেশে চাকুরী যেনো এক সোনার হরিণ।
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মার্স্টাস পাশ করে চাকুরীর পত্রিকায় প্রতিনিয়ত চোখ রাখেন আবু তালহা নামের ( ছদ্ম নাম) এক শিক্ষার্থী সে প্রায় প্রতি সপ্তাহে বিভিন্ন কম্পানীতে তার সিভি পাঠায় এতে তার কিছু টাকা খরচও হয় এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে ২০০/ ২৫০ টাকার পোষ্টাল অডার্রসহ তার বেশ কিছু টাকা খরচ হলো;কিন্তু ইনটারভিউতে গেলে বিভিন্ন কারন দেখিয়ে তাকে বলে আপনাকে পরে ডাকা হবে এখন আসতে পারেন। সম্প্রতি সে বেশ কয়েকটি সরকারী বেসরকারী ব্যাংকেও দরখাস্ত করেছে তারও কোনো খরব নেই।এটা কৌশলে বিভিন্ন কম্পানী ও প্রতিষ্টানগুলোর এক ধরনের ব্যবসা। তাই আবু তালহা ( ছদ্ম নাম) কি করবে ভেবে পাচ্ছেনা । এদিকে তার বাবা রিটেয়ার পারসন। তার বাবা অসুস্থ, এক ভাই বোন কলেজে পড়াশুনা করেন। বিশ্বদ্যালয়ে পড়ালেখা করার কারনে যেকোনো জবও সে করতে পারছে না। সামান্য টিউশনি করে সে কিছু টাকা পায় । তার বাবার চিকিৎসার খরচ ও তাদের বাসা ভাড়ার টাকাও তারই জোগার করতে হয় । বেশ কয়েকদিন আগে তার সাথে কথা বলার পর সে বললো আরো কয়েকটি সিভি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়েছে। তার সাথে কিছুক্ষন কথা বলার পর সে বললো মনে হয় দেশ থেকে সেই সোনার হরিণ হারিয়ে গেছে( চাকুরী ) আর পাওয়া যাবে না। আমি তাকে ফোনে সান্তনা দিয়ে বললাম চেষ্টা করো ইনশাআল্লাহ তুমি চাকুরীটা পেয়ে যাবে। আমরা বলছি শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড অথচ সেই শিক্ষা অর্জন করেও আজ সে তার মেরুদন্ডকে সোজা করে দাড়াতে পারছেনা। আজ বঞ্চিত হচ্ছে মেধাবী শিক্ষার্থীরা এর জন্যে দায়ী কে?জনগণ , সমাজ, রাষ্ট্র,নাকি সরকার । দেশে আজ আবু তালহার মতো এরকম অসংখ্য আবু তালহা একটি চাকুরীর জন্যে হন্যে হয়ে ঘুরছে ।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×