somewhere in... blog

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মুজিব রহমান
সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

বাঙালির যৌন তাড়না পর্ব- তিন

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৮:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পূর্ব প্রকাশের পর. . . Click This Link
১১
মেসে ফিরে এসে পিন্টু ভাই খুব উল্লাস প্রকাশ করলেন। তিনি আজ সফল হয়েছেন। বাসে বসে থাকা এক নারীর বুকের ভিতরে দশ পয়সা ঢুকিয়ে দিতে পেরেছেন। বাসে বসে থাকা নারীর বুক লক্ষ্য করে সে পয়সা ফেলে আসছিল। তার বন্ধুরাও উল্লসিত।
এক নারীর কাছে শুনেছি, তার পিতার মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরছিল বাসে করে। তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে লুঙ্গি পরা এক লোক ভদ্রমহিলার বাহুর পেছন দিয়ে পুরুষাঙ্গ দিয়ে ঠেলছে। তিনি বুঝতে পেরে হতভম্ব হয়ে যান। বাসে এক শ্রেণির পুরুষের কাজই যেনো নারীদের যৌন নিপীড়ন করা। গা ঘেঁষে দাঁড়ানো, শরীরে হাত দেয়া, পুরুষাঙ্গ দিয়ে ধাক্কা দেয়া অহরহ ব্যাপার। নারীর পাশের সিটে বসেও নোংরামি করার চেষ্টা করে। এ নিয়ে সম্প্রতি এক ঝাল চানাচুরের বিজ্ঞাপন জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ‘গা ঘেঁষে দাঁড়াবেন না’ লেখা টি-শার্ট পরা নিয়েও খুব আলোচনা হয়। গা ঘেঁষে দাঁড়ায় এমন ছেলেদের আঁতে ঘা লাগে। তারা এই টি-শার্টের নিন্দা করে। নারীরা সাহসী হচ্ছে। আইন ও অগ্রসর চিন্তার মানুষ তাদের পক্ষে। নারীদের সোচ্চার হওয়া বেশি প্রয়োজন।


১২
যে ছাত্র-ছাত্রীকে পড়াতাম তাদের মামা তাবলিগ জামাত করতেন। তিনি প্রায়ই আসতেন বোনের বাসায়। একদিন দেখি বাথরুমে তিনি গৃহকর্মীর শ্লীলতাহানি করছেন। মেয়েটি আপ্রাণ চেষ্টা করছে রক্ষা পেতে। আমি কাঁসি দিলে তিনি ছেড়ে দেন। কিছুক্ষণ পরেই তিনি পড়ানোর কক্ষে এসে টোলিফোন কারা ভান করে বললেন, কোরান আমাকে দাসীদের ভোগ করার অধিকার দিয়েছে।
বাংলায় কোরান পড়তে গিয়ে আমিও পড়েছি। আমার মনে হয়েছিল, এই দাসী মানে দাসপ্রথার দাসী। পাবলিক লাইব্রেরিতে গিয়ে তাফসির দেখলাম। ওনার দাবি অসত্য সেটা বলার সুযোগ নেই। বাড়ি গিয়ে বিষয়টি নিয়ে এলাকার দুএকজনের সাথে আলাপ করে জানলাম, শুধু ভোগই নয়, কয়েকজন সন্তানও জন্ম দিয়েছেন।
হুমায়ুন আহমেদের অয়োময় নাটকের পাখাটানা মতি ছিল দাসীর ঘরের সন্তান। বরিশালে আমার এক প্রিয় লেখকের বাড়ি দেখতে গিয়ে জানতে পারি তিনিও জমিদারের দাসীর ঘরের সন্তান। ইন্টার পড়ার সময় আমার পাশের সহপাঠী বলেছিল, তার আব্বা ও বড় ভাই দাসীদের ভোগ করে। দুই একদিনের মধ্যে সে নিজেও শুরু করবে। ছিঃ বলাতে সেও বলেছিল, এটা তার ধর্মীয় অধিকার।
দাসী বা সেবাদাসী যাই হোক, প্রভাবশালী ধনীদের জন্য ধর্ম কতো ব্যবস্থাই না করে দিয়েছে। বাঙালি সেই সুবিধা তাদের যৌন জীবনে মেনে নিয়েছে, আইন ও নৈতিকতার তোয়াক্কা না করেই। আইনগতভাবে কোন গৃহকর্মীকেই দাসী বলা যায় না। তাদের যৌন হয়রানি করা, ধর্ষণ ছাড়া কিছুই না।


১৩
দুজন যৌন বিষয়ে সম্পূর্ণ অজ্ঞ স্বামী-স্ত্রী বাসর ঘরে ঢুকেই বিপদে পড়ে। অপ্রস'ত ও ভীত স্ত্রীর উপর ঝাপিয়ে পড়ে স্বামী। ইনিংস শুরুর সাথে সাথেই অল আউট হয়ে যায়। যে যৌন জীবন শুরু হয় অজ্ঞতা ও ভীতি দিয়ে তা সুখের হওয়ার কথা নয়।
আমাদের তরুণ-তরুণীদের খুব একটা প্রেম করতে দেখা যায় না। সেক্স করার সুযোগ তারা পায় না। স্বমেহনই তাদের ভরসা। এতেও সম্পূর্ণ যৌনসুখ মিলে না। তারা তাদের ভিতরে থাকা যৌন আকাঙ্ক্ষা দমন করে দুটি পথে-সন্ত্রাস ও মাদকে।
আমাদের অনেক সন্ত্রাসই যৌন তাড়নার প্রকাশ। বরগুণার সাম্প্রতিক রিফাত হত্যার ভিতরেও রয়েছে যৌন তাড়না। খুনীরা প্রায় সকলেই সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্ত। তরুণরা তাদের জীবনের যৌন ব্যর্থতার প্রকাশ ঘটিয়েছে সন্ত্রাসে ও মাদকে। বাঙালি সমাজে নারীদের উপর দোষ চাপানোর যে প্রবণতা তার প্রকাশও এখানে দেখলাম। আয়েশা আক্তার মিন্নি নামের মেয়েটি, যার বিয়ের বয়স মাত্র দু মাস তার আচরণ নিয়ে সামাজিক মিডিয়াতে কিছু যৌন হতাশাগ্রস' মানুষ প্রশ্ন তুলেছে। কিছু প্রতারক ভিডিওর সাথে মিলিয়ে বক্তব্য দিয়ে দৃশ্য ভিন্ন খাতে নিয়েছে। তা দেখেই অনেকে বিভ্রান্ত হয়েছেন। ওদের বক্তব্য বাদ দিয়ে ভিডিওটি দেখলেই বুঝা যায়, মেয়েটিকে দোষারোপ করার মতো ভিডিও এটা নয়। বিয়ের আগে তাঁর সাথে অন্যের ভালবাসা বা যৌন সম্পর্ক থাকতেও পারে, সেটাকে দোষারোপ করা যায় না। যদিও বাঙালি সমাজ এটাকেই একজন নারীর সবচেয়ে বড় অপরাধ বলে গণ্য করে।
আমাদের সমাজ নারীকে চায় পুতপবিত্র হিসাবে। তাঁর যৌন উপলব্ধিও পাপ। পুরুষেরও বিবাহ বহির্ভূত প্রেম বা যৌনতাকে সমাজ ভাল চোখে দেখে না। তবে পতিতালয়ে গমনকে তারা মেনে নেয়। আমাদের গ্রাম থেকেও আগে যৌনকর্মীদের কাছে যাওয়ার জন্যই অনেকে নারায়ণগঞ্জের টানবাজারে বা ফরিদপুরের সিএন্ডবি ঘাটে যেতেন।
কোন নারী যদি বিয়ের আগেই গর্ভবতী হয়ে যায়, যদি গর্ভপাত ঘটিয়ে ফেলে তবে ওই নারীর জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠে। সম্প্রতি এমন এক সাহসি তরুণীকে দেখলাম, গর্ভপাত না ঘটিয়ে সন্তানকে জন্ম দিতে এবং সন্তানের পিতৃ অধিকার ফিরিয়ে দিতে। আমাদের সমাজে যৌনতার চেয়ে সন্তান অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কোন দম্পত্তি বিয়ের কয়েক বছরের মধ্যে সন্তান না নিলে, ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন। বন্ধ্যা নারী বা পুরুষের জন্য বিষয়টি আর্শিবাদের পরিবর্তে অভিশাপ হয়ে দেখা দেয়।
ইংল্যান্ডের বিচারক লিন্ডসে গত শতাব্দির মাঝামাঝিতে তরুণ তরুণীদের যৌন সমস্যা সমাধানের জন্য সাময়িক বিবাহের প্রস্তাব করেছিলেন। কিন' তখনও ইংল্যান্ডে গীর্জা অনেক শক্তিশালী ছিল। তারা হায় হায়! গেলো গেলো!! রব তুলেছিল। গীর্জা কি ফ্রয়েড বিশ্বাস করে? অবশ্য গীর্জার সাথে জড়িতরা একমাত্র ঈশ্বর, তার প্রেরিত পুরুষ ও কিতাব ছাড়া আর কিছুতে বিশ্বাস করে না। আজকাল ইউরোপ গীর্জার প্রবল বাঁধা কাটিয়ে উঠেছে। আমার কয়েকজন ফেসবুক ফ্রেন্ড আছেন, যারা রাশিয়াতে পড়াশোনা করেছেন। প্রথম আলোর সাংবাদিক মশিউল আলম এবং আমেরিকা প্রবাসি লেখক ডাক্তার শাহাব আহমেদ তাদের অন্যতম। তাদের বিভিন্ন লেখা মনোযোগ দিয়েই পড়ে মনে হয়েছে, সোভিয়েত ইউনিয়ন এই সমস্যা কিছুটা কাটিয়ে উঠেছিল। তারা ছাত্রাবাসে ওই সময়েই এক কক্ষেই ছেলে মেয়ে থাকা শুরু করেছিল। অবশ্য সোভিয়েত ইউনিয়নের বস'বাদী চেতনা ছাড়াও উত্তরণের আরো কারণ রয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র মৈত্রী করতেন প্রিয় মানুষ সাইফুর জামান মানিক ভাই। তিনি মনে করেন, বস্তুবাদ ছাড়াও দুটি বিশ্বযুদ্ধে তাদের লাল ফৌজের অংশগ্রহণও একটা ভূমিকা রেখেছে। বিশেষ করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিটলারের বিরুদ্ধে তাদের ছেলে ও মেয়েরা একসাথে যুদ্ধ করেছে। কমরেডগণ একসাথে বাঙ্কারে থেকেছে দিনের পরে দিন। তাদের মধ্যে যৌনতার কুসংস্কারটা কেটে যায় এসব কারণেও। চীনের বস'বাদী দর্শনও তাদের তরুণ তরুণীদের জন্য সুপথ দেখিয়েছে।
আজকাল জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে গিয়ে যৌনতাকে উপভোগ করার সময়ই পান না বাঙালি তরুণ-তরুণী। বার্ট্রান্ড রাসেল তাঁর ‘বিবাহ ও নৈতিকতা’ বইতে অর্ধশতাব্দীরও আগে যে চিত্র দেখিয়েছেন, আমরা মাত্রই সেই সমস্যা অতিক্রম করছি। সম্ভবত আমরা আরো পিছিয়ে আছি। চাকরিজীবীদের অনেকেই কেরিয়ার গঠনের চিন্তা করে বিয়েটা করতে চান না। এমনকি ব্যবসায়ীদের জন্যও একই বিষয়। তারাও একটু প্রতিষ্ঠিত হয়েই বিয়ে করতে চান। তাতে ছেলে বা মেয়ে একটু ভাল পাত্র/পাত্রী পাবেন মনে করেন। আবার বিয়ে করলে ওই যে সন্তান নেয়ার চাপ তৈরি হয় সেই চাপও উপেক্ষা করতে না পেরে সন্তান নেন। অনেকের অনভিজ্ঞতার কারণে প্রথম মাসের মিলনেই স্ত্রীকে গর্ভবতী করে ফেলেন। তাদের জীবন যাপনের ব্যয় আরো বেড়ে যায়। তরুণরা এটা কাটিয়ে উঠতে চান, দেরিতে বিয়ে করে। এসব কথা বিবেচনা করেই লিন্ডসে সাময়িক বিয়ের প্রস্তাব করেছিলেন। বাস্তবিক সাময়িক বিয়েটা ইউরোপে বাস্তবায়িত হয়েছে লিভটুগেদার হিসাবে। বাঙালিও ওই পথেই যাবে, তবে আরো অনেক সময় নিবে।

১৪
ফরিদপুর জেলার কোন একটি ইসলামি সংগঠনের নেতা ছিলেন বাবর। আমার সাথে দুএকবার কথা হয়েছে। হঠাৎই শুনেছিলাম বাবর সেলুনে ঢুকে, ক্ষুর দিয়ে নিজের পুরষাঙ্গ কেটে পুকুরে ফেলে দিয়েছে। তাকে হাসপাতালে নেয়ার পরে ডাক্টার পুরুষাঙ্গ খুঁজে আনতে বলে। তাঁর আত্মীয় স্বজনরা পুকুরে জেলে নামিয়ে, জাল ফেলেও বাবরের পুরষাঙ্গ উদ্ধার করতে পারেনি। কেন বাবর এমনটা করলো? তখন হাসাহাসি করেছে অনেকে। এখন বুঝি তাঁর তীব্র যৌন তাড়না নিবৃত করার সুযোগ তিনি পাননি। ফরিদপুরে তখন দুটি পতিতালয়- একটি ফরিদপুর শহরে অন্যটি সিএন্ডবি ঘাটে। কিন' সে যেহেতু ইসলামি সংগঠন করে তাই ওখানেও যায় নি। বিয়েও করতে পারে নি। এই বিরক্তিকর শরীরবৃত্তীয় অবস্থা থেকে মুক্তির জন্যই সেই ওই পথ বেছে নিয়েছিল আকষ্মিক ভাবেই।
বাবরের এই ঘটনার পরে আমি তাবলিগ জামাতের একটি তিন দিনের চিল্লা দেই। সেই চিল্লার একটি বয়ানের কথা মনে আছে। হুজুর বলেছিলেন, ‘আপনারা যারা কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন তাদের কাছে অনুরোধ, আপনারা বিয়ে করে ফেলেন। আমি নিজেও কলেজে পড়ার সময় বিয়ে করে ফেলেছি। আমার সংসার আল্লাহই চালিয়েছে।’ এখন বাবরের কথাই মনে হচ্ছে। আহা বাবর যদি বিয়ে করতো তাহলে ওই কাজ করতে হতো না।
বাস্তবিক একজন কলেজে পড়া ছাত্রর পক্ষে বিয়ে করা খুবই সমস্যা তৈরি করে। একেতো নিজের পড়াশোনা তার উপর স্ত্রীর পড়াশোনার খরচ কে বহন করবে? স্ত্রীকে রাখতে হলে যতটুকু ভাল ঘর দরকার তাইবা পাবে কোথায়? তার মধ্যে সন্তান হলে, আরো ব্যয়। তার উপরে পিতা-মাতাও এমন সন্তানকে মেনে নিয়ে স্ত্রীকে পড়ার খরচ দিবে, আবার সন্তান হলে তাদেরও লালন পালন করবে, সেটা অতি বেশি আশা করা। অধিকাংশ পরিবারেই সেই সামর্থ্যও থাকবে না। বাবরের গার্লফ্রেন্ড বা প্রেমিকা রাখার সুযোগ ছিল কিন' তার সংগঠন তাকে সেই সুযোগ দেয়নি।
বাবরের সাথে কোন মেয়ের প্রেমের সম্পর্কও ছিল না। সে ধর্মকর্ম করতো এবং ছাত্র রাজনীতি করতো। ওর সাথে কথা বলেও আমার মনে হয়েছিল ওর রাজনৈতিক জ্ঞান খুবই সীমিত এবং পাঠ্যবইয়ের বাইরে তাঁর কোন পড়াশোনাও নেই। ওর যৌন তাড়না নিবৃত করার মতো কোন ক্ষমতাই ছিল না।

১৫
এক ভদ্রলোকের সাথে পরিচিত হয়ে জানলাম তিনিও পদার্থ বিদ্যায় মাস্টার্স করেছেন এবং পদার্থবিদ্যার উপর তাঁর বই রয়েছে যা আমাজন থেকে বিক্রি হচ্ছে। খুবই আগ্রহী হলাম। ঘণিষ্ঠ হলাম। পদার্থবিদ্যায় মৌলিক বিষয়গুলোতে তাঁর জ্ঞান হাস্যকর রকমের। তিনি বললেন ব্লাকহোল হল শূন্য। কিভাবে? তিনি নাকি এর প্রমাণ তার বইতে দিয়েছেন দার্শনিক ভাবে! কদিন পরেই জানলাম, আসলে ছেলেটি এসএসসি পাশ! স্ত্রীকে বিয়ের সময় বলেছিল, বুয়েট থেকে পাশ করেছে। স্ত্রী নয় বছর পরে জানতে পারে আসলে এসএসসি পাশ এবং তার স্বামীর আগের একটা স্ত্রী আছে। যে স্বামীকে ইঞ্জিনিয়ার ভেবে, প্রখ্যাত লেখক ভেবে নিজে আয় করে সংসার চালিয়েছেন। স্বামীকে লেখার(?) সুযোগ করে দিয়েছেন। সেই দেবতাতুল্য স্বামীর চরিত্র এমন! আগের স্ত্রীও জানতেন, স্বামী ইঞ্জিনিয়ার। দুই বউকেই ছেড়ে এখন তৃতীয় বউয়ের খুঁজে ভেগে গেছেন ওই স্বামী। হয়তো আরেকটি প্রতারণাও করে ফেলতে সক্ষম হবে। ভদ্রলোকের এ ধরনের প্রতারণার পেছনেও রয়েছে যৌন তাড়না। পারিবারিক ঘটনা শুনে নিশ্চিত হলাম, তাঁর পরিবার থেকেই এই সংকট তার মধ্যে ঢুকেছে। জীনের ত্রুটি তিনি এড়াতে পারেন নি।
গত পরশু আমাদের পাশের গ্রামের একজন নেতাকে স্থানীয় জনতা বাটাম দিয়েছে। ওই নেতা গভীর রাতে মানুষের ঘরে চুকি দিতো। তার ভয়ে স্বামী-স্ত্রী যৌন কর্ম করতেও ভয় পেতো। নেতা বলে কেউ কিছু বলতেও পারছিল না। হাতে নাতে ধরা পরলেও পালিয়ে যায়। পরদিন সকালেই জনগণ কিছু ধোলাই দিয়েছে। আমার আগ্রহ হলো ওর শৈশবে কোন সংকট আছে কিনা। খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত হলাম ওরও জীনগত সমস্যা রয়েছে। এই নেতার কোন শিক্ষাগত যোগ্যতাও নেই যে নিজেকে উত্তরণ করবে। নিজের স্ত্রী রয়েছে, অনেকগুলো সন্তানও রয়েছে। শুধু স্ত্রীর সাথে সেক্স করার সুযোগও তাকে এমন আচরণ থেকে বিরত রাখতে পারেনি।
আমাদের এলাকার একলোক চার বিয়ে করেছে। চার নাম্বার বিয়ের পরে কতিপয় তরুণের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে, তারা ঘরে চুকি দেয়। যে তিন জন চুকি দিতো তারা সকলেই বিবাহিত। আমি একজনের কাছ থেকে জানতে পারি ঘটনা সত্য। এই বিকৃত রুচি তৈরি কেন হয়েছে? সবারই ঘরে আরো সুন্দরী স্ত্রী রয়েছে। পারিবারিক সংকট ও যৌন শিক্ষার অভাব থেকেই এমন বিকৃত রুচির জন্ম হয়েছে। তাদের পরিবারেও অতীতে সংকট জনক যৌনতা ছিল।
যৌন শিক্ষার অভাবে একটি মারাত্মক ঘটনা আজই শুনেছিলাম একজন এডভোকেটের কাছ থেকে। বাসর ঘরে স্বামী শারীরিক সম্পর্কের দিকে এগিয়ে গেলে, মেয়েটি ছিঃ ছিঃ করে উঠে। বলে, ‘কি করছেন? এসব খুবই পাপের কাজ। আমাকে ছুঁবেন না।’ সংসারই ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হয়। ঘটনা ফাঁস হলে, পরিবারের নারীরাও তাকে বুঝাতে ব্যর্থ হয়। পরে মনোচিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হন। দুই বছর পরে মেয়েটি বুঝতে পারে, যৌন সম্পর্ক স্বাভাবিক। মানে হলো, পরিবার থেকেই জন্মের পর থেকেই তিনি জেনে আসছেন, যৌনতা হলো ভয়ঙ্কর খারাপ বিষয়। এসব করা খুবই পাপ। এক কবুল বলা, এই পাপকে মুক্ত করতে পারে না বলেই তার মনে হয়েছিল। আমাদের শিশুদের, শৈশব থেকেই যৌনতাকে এক বিকট খারাপ বিষয় বলে, ধারণা দিয়ে দেই। অনেকেই সারা জীবনে সেই বদ্ধমূল ধারণা থেকে বের হতে পারে না।
১১
মেসে ফিরে এসে পিন্টু ভাই খুব উল্লাস প্রকাশ করলেন। তিনি আজ সফল হয়েছেন। বাসে বসে থাকা এক নারীর বুকের ভিতরে দশ পয়সা ঢুকিয়ে দিতে পেরেছেন। বাসে বসে থাকা নারীর বুক লক্ষ্য করে সে পয়সা ফেলে আসছিল। তার বন্ধুরাও উল্লসিত।
এক নারীর কাছে শুনেছি, তার পিতার মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরছিল বাসে করে। তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে লুঙ্গি পরা এক লোক ভদ্রমহিলার বাহুর পেছন দিয়ে পুরুষাঙ্গ দিয়ে ঠেলছে। তিনি বুঝতে পেরে হতভম্ব হয়ে যান। বাসে এক শ্রেণির পুরুষের কাজই যেনো নারীদের যৌন নিপীড়ন করা। গা ঘেঁষে দাঁড়ানো, শরীরে হাত দেয়া, পুরুষাঙ্গ দিয়ে ধাক্কা দেয়া অহরহ ব্যাপার। নারীর পাশের সিটে বসেও নোংরামি করার চেষ্টা করে। এ নিয়ে সম্প্রতি এক ঝাল চানাচুরের বিজ্ঞাপন জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ‘গা ঘেঁষে দাঁড়াবেন না’ লেখা টি-শার্ট পরা নিয়েও খুব আলোচনা হয়। গা ঘেঁষে দাঁড়ায় এমন ছেলেদের আঁতে ঘা লাগে। তারা এই টি-শার্টের নিন্দা করে। নারীরা সাহসী হচ্ছে। আইন ও অগ্রসর চিন্তার মানুষ তাদের পক্ষে। নারীদের সোচ্চার হওয়া বেশি প্রয়োজন।


১২
যে ছাত্র-ছাত্রীকে পড়াতাম তাদের মামা তাবলিগ জামাত করতেন। তিনি প্রায়ই আসতেন বোনের বাসায়। একদিন দেখি বাথরুমে তিনি গৃহকর্মীর শ্লীলতাহানি করছেন। মেয়েটি আপ্রাণ চেষ্টা করছে রক্ষা পেতে। আমি কাঁসি দিলে তিনি ছেড়ে দেন। কিছুক্ষণ পরেই তিনি পড়ানোর কক্ষে এসে টোলিফোন কারা ভান করে বললেন, কোরান আমাকে দাসীদের ভোগ করার অধিকার দিয়েছে।
বাংলায় কোরান পড়তে গিয়ে আমিও পড়েছি। আমার মনে হয়েছিল, এই দাসী মানে দাসপ্রথার দাসী। পাবলিক লাইব্রেরিতে গিয়ে তাফসির দেখলাম। ওনার দাবি অসত্য সেটা বলার সুযোগ নেই। বাড়ি গিয়ে বিষয়টি নিয়ে এলাকার দুএকজনের সাথে আলাপ করে জানলাম, শুধু ভোগই নয়, কয়েকজন সন্তানও জন্ম দিয়েছেন।
হুমায়ুন আহমেদের অয়োময় নাটকের পাখাটানা মতি ছিল দাসীর ঘরের সন্তান। বরিশালে আমার এক প্রিয় লেখকের বাড়ি দেখতে গিয়ে জানতে পারি তিনিও জমিদারের দাসীর ঘরের সন্তান। ইন্টার পড়ার সময় আমার পাশের সহপাঠী বলেছিল, তার আব্বা ও বড় ভাই দাসীদের ভোগ করে। দুই একদিনের মধ্যে সে নিজেও শুরু করবে। ছিঃ বলাতে সেও বলেছিল, এটা তার ধর্মীয় অধিকার।
দাসী বা সেবাদাসী যাই হোক, প্রভাবশালী ধনীদের জন্য ধর্ম কতো ব্যবস্থাই না করে দিয়েছে। বাঙালি সেই সুবিধা তাদের যৌন জীবনে মেনে নিয়েছে, আইন ও নৈতিকতার তোয়াক্কা না করেই। আইনগতভাবে কোন গৃহকর্মীকেই দাসী বলা যায় না। তাদের যৌন হয়রানি করা, ধর্ষণ ছাড়া কিছুই না।


১৩
দুজন যৌন বিষয়ে সম্পূর্ণ অজ্ঞ স্বামী-স্ত্রী বাসর ঘরে ঢুকেই বিপদে পড়ে। অপ্রস'ত ও ভীত স্ত্রীর উপর ঝাপিয়ে পড়ে স্বামী। ইনিংস শুরুর সাথে সাথেই অল আউট হয়ে যায়। যে যৌন জীবন শুরু হয় অজ্ঞতা ও ভীতি দিয়ে তা সুখের হওয়ার কথা নয়।
আমাদের তরুণ-তরুণীদের খুব একটা প্রেম করতে দেখা যায় না। সেক্স করার সুযোগ তারা পায় না। স্বমেহনই তাদের ভরসা। এতেও সম্পূর্ণ যৌনসুখ মিলে না। তারা তাদের ভিতরে থাকা যৌন আকাঙ্ক্ষা দমন করে দুটি পথে-সন্ত্রাস ও মাদকে।
আমাদের অনেক সন্ত্রাসই যৌন তাড়নার প্রকাশ। বরগুণার সাম্প্রতিক রিফাত হত্যার ভিতরেও রয়েছে যৌন তাড়না। খুনীরা প্রায় সকলেই সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্ত। তরুণরা তাদের জীবনের যৌন ব্যর্থতার প্রকাশ ঘটিয়েছে সন্ত্রাসে ও মাদকে। বাঙালি সমাজে নারীদের উপর দোষ চাপানোর যে প্রবণতা তার প্রকাশও এখানে দেখলাম। আয়েশা আক্তার মিন্নি নামের মেয়েটি, যার বিয়ের বয়স মাত্র দু মাস তার আচরণ নিয়ে সামাজিক মিডিয়াতে কিছু যৌন হতাশাগ্রস' মানুষ প্রশ্ন তুলেছে। কিছু প্রতারক ভিডিওর সাথে মিলিয়ে বক্তব্য দিয়ে দৃশ্য ভিন্ন খাতে নিয়েছে। তা দেখেই অনেকে বিভ্রান্ত হয়েছেন। ওদের বক্তব্য বাদ দিয়ে ভিডিওটি দেখলেই বুঝা যায়, মেয়েটিকে দোষারোপ করার মতো ভিডিও এটা নয়। বিয়ের আগে তাঁর সাথে অন্যের ভালবাসা বা যৌন সম্পর্ক থাকতেও পারে, সেটাকে দোষারোপ করা যায় না। যদিও বাঙালি সমাজ এটাকেই একজন নারীর সবচেয়ে বড় অপরাধ বলে গণ্য করে।
আমাদের সমাজ নারীকে চায় পুতপবিত্র হিসাবে। তাঁর যৌন উপলব্ধিও পাপ। পুরুষেরও বিবাহ বহির্ভূত প্রেম বা যৌনতাকে সমাজ ভাল চোখে দেখে না। তবে পতিতালয়ে গমনকে তারা মেনে নেয়। আমাদের গ্রাম থেকেও আগে যৌনকর্মীদের কাছে যাওয়ার জন্যই অনেকে নারায়ণগঞ্জের টানবাজারে বা ফরিদপুরের সিএন্ডবি ঘাটে যেতেন।
কোন নারী যদি বিয়ের আগেই গর্ভবতী হয়ে যায়, যদি গর্ভপাত ঘটিয়ে ফেলে তবে ওই নারীর জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠে। সম্প্রতি এমন এক সাহসি তরুণীকে দেখলাম, গর্ভপাত না ঘটিয়ে সন্তানকে জন্ম দিতে এবং সন্তানের পিতৃ অধিকার ফিরিয়ে দিতে। আমাদের সমাজে যৌনতার চেয়ে সন্তান অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কোন দম্পত্তি বিয়ের কয়েক বছরের মধ্যে সন্তান না নিলে, ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন। বন্ধ্যা নারী বা পুরুষের জন্য বিষয়টি আর্শিবাদের পরিবর্তে অভিশাপ হয়ে দেখা দেয়।
ইংল্যান্ডের বিচারক লিন্ডসে গত শতাব্দির মাঝামাঝিতে তরুণ তরুণীদের যৌন সমস্যা সমাধানের জন্য সাময়িক বিবাহের প্রস্তাব করেছিলেন। কিন' তখনও ইংল্যান্ডে গীর্জা অনেক শক্তিশালী ছিল। তারা হায় হায়! গেলো গেলো!! রব তুলেছিল। গীর্জা কি ফ্রয়েড বিশ্বাস করে? অবশ্য গীর্জার সাথে জড়িতরা একমাত্র ঈশ্বর, তার প্রেরিত পুরুষ ও কিতাব ছাড়া আর কিছুতে বিশ্বাস করে না। আজকাল ইউরোপ গীর্জার প্রবল বাঁধা কাটিয়ে উঠেছে। আমার কয়েকজন ফেসবুক ফ্রেন্ড আছেন, যারা রাশিয়াতে পড়াশোনা করেছেন। প্রথম আলোর সাংবাদিক মশিউল আলম এবং আমেরিকা প্রবাসি লেখক ডাক্তার শাহাব আহমেদ তাদের অন্যতম। তাদের বিভিন্ন লেখা মনোযোগ দিয়েই পড়ে মনে হয়েছে, সোভিয়েত ইউনিয়ন এই সমস্যা কিছুটা কাটিয়ে উঠেছিল। তারা ছাত্রাবাসে ওই সময়েই এক কক্ষেই ছেলে মেয়ে থাকা শুরু করেছিল। অবশ্য সোভিয়েত ইউনিয়নের বস'বাদী চেতনা ছাড়াও উত্তরণের আরো কারণ রয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র মৈত্রী করতেন প্রিয় মানুষ সাইফুর জামান মানিক ভাই। তিনি মনে করেন, বস্তুবাদ ছাড়াও দুটি বিশ্বযুদ্ধে তাদের লাল ফৌজের অংশগ্রহণও একটা ভূমিকা রেখেছে। বিশেষ করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিটলারের বিরুদ্ধে তাদের ছেলে ও মেয়েরা একসাথে যুদ্ধ করেছে। কমরেডগণ একসাথে বাঙ্কারে থেকেছে দিনের পরে দিন। তাদের মধ্যে যৌনতার কুসংস্কারটা কেটে যায় এসব কারণেও। চীনের বস'বাদী দর্শনও তাদের তরুণ তরুণীদের জন্য সুপথ দেখিয়েছে।
আজকাল জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে গিয়ে যৌনতাকে উপভোগ করার সময়ই পান না বাঙালি তরুণ-তরুণী। বার্ট্রান্ড রাসেল তাঁর ‘বিবাহ ও নৈতিকতা’ বইতে অর্ধশতাব্দীরও আগে যে চিত্র দেখিয়েছেন, আমরা মাত্রই সেই সমস্যা অতিক্রম করছি। সম্ভবত আমরা আরো পিছিয়ে আছি। চাকরিজীবীদের অনেকেই কেরিয়ার গঠনের চিন্তা করে বিয়েটা করতে চান না। এমনকি ব্যবসায়ীদের জন্যও একই বিষয়। তারাও একটু প্রতিষ্ঠিত হয়েই বিয়ে করতে চান। তাতে ছেলে বা মেয়ে একটু ভাল পাত্র/পাত্রী পাবেন মনে করেন। আবার বিয়ে করলে ওই যে সন্তান নেয়ার চাপ তৈরি হয় সেই চাপও উপেক্ষা করতে না পেরে সন্তান নেন। অনেকের অনভিজ্ঞতার কারণে প্রথম মাসের মিলনেই স্ত্রীকে গর্ভবতী করে ফেলেন। তাদের জীবন যাপনের ব্যয় আরো বেড়ে যায়। তরুণরা এটা কাটিয়ে উঠতে চান, দেরিতে বিয়ে করে। এসব কথা বিবেচনা করেই লিন্ডসে সাময়িক বিয়ের প্রস্তাব করেছিলেন। বাস্তবিক সাময়িক বিয়েটা ইউরোপে বাস্তবায়িত হয়েছে লিভটুগেদার হিসাবে। বাঙালিও ওই পথেই যাবে, তবে আরো অনেক সময় নিবে।

১৪
ফরিদপুর জেলার কোন একটি ইসলামি সংগঠনের নেতা ছিলেন বাবর। আমার সাথে দুএকবার কথা হয়েছে। হঠাৎই শুনেছিলাম বাবর সেলুনে ঢুকে, ক্ষুর দিয়ে নিজের পুরষাঙ্গ কেটে পুকুরে ফেলে দিয়েছে। তাকে হাসপাতালে নেয়ার পরে ডাক্টার পুরুষাঙ্গ খুঁজে আনতে বলে। তাঁর আত্মীয় স্বজনরা পুকুরে জেলে নামিয়ে, জাল ফেলেও বাবরের পুরষাঙ্গ উদ্ধার করতে পারেনি। কেন বাবর এমনটা করলো? তখন হাসাহাসি করেছে অনেকে। এখন বুঝি তাঁর তীব্র যৌন তাড়না নিবৃত করার সুযোগ তিনি পাননি। ফরিদপুরে তখন দুটি পতিতালয়- একটি ফরিদপুর শহরে অন্যটি সিএন্ডবি ঘাটে। কিন' সে যেহেতু ইসলামি সংগঠন করে তাই ওখানেও যায় নি। বিয়েও করতে পারে নি। এই বিরক্তিকর শরীরবৃত্তীয় অবস্থা থেকে মুক্তির জন্যই সেই ওই পথ বেছে নিয়েছিল আকষ্মিক ভাবেই।
বাবরের এই ঘটনার পরে আমি তাবলিগ জামাতের একটি তিন দিনের চিল্লা দেই। সেই চিল্লার একটি বয়ানের কথা মনে আছে। হুজুর বলেছিলেন, ‘আপনারা যারা কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন তাদের কাছে অনুরোধ, আপনারা বিয়ে করে ফেলেন। আমি নিজেও কলেজে পড়ার সময় বিয়ে করে ফেলেছি। আমার সংসার আল্লাহই চালিয়েছে।’ এখন বাবরের কথাই মনে হচ্ছে। আহা বাবর যদি বিয়ে করতো তাহলে ওই কাজ করতে হতো না।
বাস্তবিক একজন কলেজে পড়া ছাত্রর পক্ষে বিয়ে করা খুবই সমস্যা তৈরি করে। একেতো নিজের পড়াশোনা তার উপর স্ত্রীর পড়াশোনার খরচ কে বহন করবে? স্ত্রীকে রাখতে হলে যতটুকু ভাল ঘর দরকার তাইবা পাবে কোথায়? তার মধ্যে সন্তান হলে, আরো ব্যয়। তার উপরে পিতা-মাতাও এমন সন্তানকে মেনে নিয়ে স্ত্রীকে পড়ার খরচ দিবে, আবার সন্তান হলে তাদেরও লালন পালন করবে, সেটা অতি বেশি আশা করা। অধিকাংশ পরিবারেই সেই সামর্থ্যও থাকবে না। বাবরের গার্লফ্রেন্ড বা প্রেমিকা রাখার সুযোগ ছিল কিন' তার সংগঠন তাকে সেই সুযোগ দেয়নি।
বাবরের সাথে কোন মেয়ের প্রেমের সম্পর্কও ছিল না। সে ধর্মকর্ম করতো এবং ছাত্র রাজনীতি করতো। ওর সাথে কথা বলেও আমার মনে হয়েছিল ওর রাজনৈতিক জ্ঞান খুবই সীমিত এবং পাঠ্যবইয়ের বাইরে তাঁর কোন পড়াশোনাও নেই। ওর যৌন তাড়না নিবৃত করার মতো কোন ক্ষমতাই ছিল না।

১৫
এক ভদ্রলোকের সাথে পরিচিত হয়ে জানলাম তিনিও পদার্থ বিদ্যায় মাস্টার্স করেছেন এবং পদার্থবিদ্যার উপর তাঁর বই রয়েছে যা আমাজন থেকে বিক্রি হচ্ছে। খুবই আগ্রহী হলাম। ঘণিষ্ঠ হলাম। পদার্থবিদ্যায় মৌলিক বিষয়গুলোতে তাঁর জ্ঞান হাস্যকর রকমের। তিনি বললেন ব্লাকহোল হল শূন্য। কিভাবে? তিনি নাকি এর প্রমাণ তার বইতে দিয়েছেন দার্শনিক ভাবে! কদিন পরেই জানলাম, আসলে ছেলেটি এসএসসি পাশ! স্ত্রীকে বিয়ের সময় বলেছিল, বুয়েট থেকে পাশ করেছে। স্ত্রী নয় বছর পরে জানতে পারে আসলে এসএসসি পাশ এবং তার স্বামীর আগের একটা স্ত্রী আছে। যে স্বামীকে ইঞ্জিনিয়ার ভেবে, প্রখ্যাত লেখক ভেবে নিজে আয় করে সংসার চালিয়েছেন। স্বামীকে লেখার(?) সুযোগ করে দিয়েছেন। সেই দেবতাতুল্য স্বামীর চরিত্র এমন! আগের স্ত্রীও জানতেন, স্বামী ইঞ্জিনিয়ার। দুই বউকেই ছেড়ে এখন তৃতীয় বউয়ের খুঁজে ভেগে গেছেন ওই স্বামী। হয়তো আরেকটি প্রতারণাও করে ফেলতে সক্ষম হবে। ভদ্রলোকের এ ধরনের প্রতারণার পেছনেও রয়েছে যৌন তাড়না। পারিবারিক ঘটনা শুনে নিশ্চিত হলাম, তাঁর পরিবার থেকেই এই সংকট তার মধ্যে ঢুকেছে। জীনের ত্রুটি তিনি এড়াতে পারেন নি।
গত পরশু আমাদের পাশের গ্রামের একজন নেতাকে স্থানীয় জনতা বাটাম দিয়েছে। ওই নেতা গভীর রাতে মানুষের ঘরে চুকি দিতো। তার ভয়ে স্বামী-স্ত্রী যৌন কর্ম করতেও ভয় পেতো। নেতা বলে কেউ কিছু বলতেও পারছিল না। হাতে নাতে ধরা পরলেও পালিয়ে যায়। পরদিন সকালেই জনগণ কিছু ধোলাই দিয়েছে। আমার আগ্রহ হলো ওর শৈশবে কোন সংকট আছে কিনা। খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত হলাম ওরও জীনগত সমস্যা রয়েছে। এই নেতার কোন শিক্ষাগত যোগ্যতাও নেই যে নিজেকে উত্তরণ করবে। নিজের স্ত্রী রয়েছে, অনেকগুলো সন্তানও রয়েছে। শুধু স্ত্রীর সাথে সেক্স করার সুযোগও তাকে এমন আচরণ থেকে বিরত রাখতে পারেনি।
আমাদের এলাকার একলোক চার বিয়ে করেছে। চার নাম্বার বিয়ের পরে কতিপয় তরুণের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে, তারা ঘরে চুকি দেয়। যে তিন জন চুকি দিতো তারা সকলেই বিবাহিত। আমি একজনের কাছ থেকে জানতে পারি ঘটনা সত্য। এই বিকৃত রুচি তৈরি কেন হয়েছে? সবারই ঘরে আরো সুন্দরী স্ত্রী রয়েছে। পারিবারিক সংকট ও যৌন শিক্ষার অভাব থেকেই এমন বিকৃত রুচির জন্ম হয়েছে। তাদের পরিবারেও অতীতে সংকট জনক যৌনতা ছিল।
যৌন শিক্ষার অভাবে একটি মারাত্মক ঘটনা আজই শুনেছিলাম একজন এডভোকেটের কাছ থেকে। বাসর ঘরে স্বামী শারীরিক সম্পর্কের দিকে এগিয়ে গেলে, মেয়েটি ছিঃ ছিঃ করে উঠে। বলে, ‘কি করছেন? এসব খুবই পাপের কাজ। আমাকে ছুঁবেন না।’ সংসারই ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হয়। ঘটনা ফাঁস হলে, পরিবারের নারীরাও তাকে বুঝাতে ব্যর্থ হয়। পরে মনোচিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হন। দুই বছর পরে মেয়েটি বুঝতে পারে, যৌন সম্পর্ক স্বাভাবিক। মানে হলো, পরিবার থেকেই জন্মের পর থেকেই তিনি জেনে আসছেন, যৌনতা হলো ভয়ঙ্কর খারাপ বিষয়। এসব করা খুবই পাপ। এক কবুল বলা, এই পাপকে মুক্ত করতে পারে না বলেই তার মনে হয়েছিল। আমাদের শিশুদের, শৈশব থেকেই যৌনতাকে এক বিকট খারাপ বিষয় বলে, ধারণা দিয়ে দেই। অনেকেই সারা জীবনে সেই বদ্ধমূল ধারণা থেকে বের হতে পারে না।
চলবে . . .
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৮:৩৫
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রক্তজবা ও গোলাপ

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৫ ই মে, ২০২৫ রাত ১২:৩৭

ভালোবাসার রূপান্তর

তোমার শহরে তুমি বসে আছো,
রক্তজবা হাতে…
আমার শহরে আমি,
একটি গোলাপের বাগান গড়ি—
লাল রঙে রাঙা, নিঃশব্দে ফুলে ভরে।

তুমি একদিন বলেছিলে,
রক্তজবা মানেই চিরন্তন ভালোবাসা,
তোমার অভিমানে লুকোনো ছিল রাগের আগুন,
তবু তার গভীরে ছিল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইহাকেই বলে আগবাড়িয়ে মাড়া খাওয়া

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই মে, ২০২৫ দুপুর ১২:৩৯


শিক্ষিত জঙ্গি মোদী ভোটের মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই হাসিনার মতো জঙ্গি নাটক সাজায়; দুজনের পার্থক্য হলো হাসিনা নিজদেশের জনগন হত্যা করে নিজদেশের জনগনকেই দোষ দেয় অপর দিকে মোদী নিজদেশের... ...বাকিটুকু পড়ুন

সার্জিস কয়েক মাস আগে বলসিলো প্রায় ৭ কিমি পদ্মা রেল সড়ক সেতু বানানো খরচ মাত্র ১০ হাজার কোটি টকা হওয়ার কথা।

লিখেছেন আহসানের ব্লগ, ১৫ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৩:২৫

সার্জিস কয়েক মাস আগে বলসিলো প্রায় ৭ কিমি পদ্মা রেল সড়ক সেতু বানানো খরচ মাত্র ১০ হাজার কোটি টকা হওয়ার কথা। ১৫-২০ হাজার কোটি নাকি চুরি হইসে।
তাহলে আজকে সার্জিস... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণহত্যাকারী দল জামাত শিবিরকে নিষিদ্ধ করা হোক!

লিখেছেন সৈয়দ তাজুল ইসলাম, ১৫ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৫:৫০



জামাত শিবির সুযোগ পেলে আবারও প্রকাশ্যে বাঙালী গণহত্যায় যুক্ত হবে, আওয়ামিলীগের পূনর্বহালের কথা ভাবতে গেলেই এই বিশ্বাসটা দৃঢ় হয়। এই হিসেব মিলাইতে গেলে আপনার রকেট সাইন্স... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাসুদ(শাহবাজ ) তোমরা কি আর ভালো হবা না ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:২৯


বাংলাদেশপন্থীরা ভারত ও পাকিস্তানপন্থীদের হাউকাউতে অতিষ্ঠ। ভারত ও ভাদা রা মনে করে ১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হয়েছিলো। ভারত বাংলাদেশ কে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। গুগলে সার্চ করলেও এমন কিছুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

×