অবশেষে কুষ্টিয়া ঘুরে আসার গল্পটা এখানে বলেই ফেলি। বাংলাদেশের ঐ পাশটা দেখার সৌভাগ্য আমার পূর্বে কখনো হয়নি। বাবার চাকুরীর সুবাদে অনেক জেলায়ই ঘুরা হয়েছে কিন্তু পদ্মার ঐ পাড়ে যাওয়ার সুযোগ আসেনি।একদমই যে যাওয়া হয়নি তাও কিন্তু না। ইন্ডিয়া যাওয়ার সময় একবার পদ্মা পাড়ি দিয়েছিলাম বটে তবে গাড়ির সিটে বসে গাছগাছালি ও মাঠ ঘাট দেখা পর্যন্তই। তাই আপুনিটা যখন বার বারই বলছিল- একবার ফরিদপুর এসে বেড়িয়ে যা তখন আর সুযোগটা হাতছাড়া করতে চাইলাম না। অবশ্য আমি বরাবরই একটু ভ্রমণবিলাসী। প্রতি মাসেই আমার কোথাও না কোথাও যাওয়া হয়। একদম কোথাও না গেলেও কক্সবাজার আমার যাওয়া চাই ই চাই। অবশ্য শ্বশুড় বাড়ি হওয়ার কারণে এই সুযোগটা আমার প্রাণপ্রিয় স্বামীটিই করে দেয়। বরাবরের মতো এইবারও যখন স্বামীটি বলল - চল কক্সবাজার যায়। আমিও বাগিয়ে বলে দিলাম এই বার কক্সবাজার না, চল ফরিদপুর থেকে ঘুরে আসি, আপুও বার বার বলছে যাওয়ার জন্য। আমার কাজ এই টুকুই। বাকিটা ওই করে নিল। টিকেট করে আমাকে ফোন করে বলল ফরিদপুরের টিকেট করে ফেলেছি ব্যাগ গুছিয়ে রাখ। সবই ঠিকঠাক ছিল কিন্তু বাধ সাধল আবহাওয়াটা। তিন নম্বর সংকেত পড়ে গেল। অনেক ফেরিঘাটই বন্ধ হয়ে গেল। মনটা খুব খুঁতখুঁত করতে লাগল, অচেনা জায়গা, সাথে আমার ছোট্ট সোনামনিটি যাবে, আপুনিটা আবার মাকেও নিয়ে যেতে বলেছে, আর প্রায়ই তো শুনি ঢাকা -আরিচা সড়কের দুর্ঘটনার কথা। কিন্তু বোনটার জন্যও খারাপ লাগতে লাগল, বেচারী একা একা থাকে কত খুশিই না হয়েছিল আমরা যাব শুনে। সব কিছু মিলে আমি অনেকটায় দোটানায় ছিলাম। কিন্তু আমার স্বামীটি একপায়ে খাড়া- যাব যখন বলেছি অবশ্যই যাব কপালে যা আছে হবে। যেমন কথা তেমন কাজ। সন্ধ্যা সাতটায় ঘর থেকে বের হলাম স্বামীটির হাত ধরে, সাথে মা ও পিচ্চিকে নিয়ে, মুখে আল্লাহর নাম জপতে জপতে। ও একটি কথাতো আগে বলাই হয়নি- আমরা চট্টগ্রামে থাকি। যথারীতি দামপাড়া বাসষ্ট্যান্ড থেকে বাস ছাড়ল ফরিদপুরের উদ্দেশ্যে। হায়! আমাদের কপাল আসলেই খারাপ ছিল সেদিন।
(চলবে....)
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:০৫