আমি আর্জেন্টিনা কে সাপোর্ট করি। তাই বলে আমি এন্টি ব্রাজিলি্যান নই। আমার পরিবারে আমার হাসবেন্ড আর দেবর হচ্ছে ব্রাজিল সাপোর্টার। বাকি যারা আছে সবাই আর্জেন্টিনা। তাই সেদিন যখন দুঙ্গার দল হেরে যাচ্ছিল আমার ঘরে একটি দ্বৈত পরিবেশ বিরাজ করছিল। কারো তো মুড অফ, প্রিয় দলের হেরে যাওয়ার বেদনায় আবার কারো অতি উচ্ছাস আনন্দ এন্টি দল ব্রাজিলের পরাজয় দেখে। আমি কিন্তু ছিলাম নির্বিকার। কারণ আমি চেয়েছিলাম ব্রাজিল জিতুক, জিতুক আমার আর্জেন্টিনাও। তারপর বিশ্বকাপ ফাইনালে উপভোগ করব সেরা সেই ম্যাচটি। গত একমাস ধরে যতটা সময় আমরা জলে ফেলেছি এই খেলা খেলা করে তার কিছুটা অন্তত উসুল হত। কিন্তু হায়! ব্রাজিলের মতো দলও বিদায় নিল আর আমার মনে মনে জানা হয়ে গেল আমার প্রিয় দলটিও খুব শীঘ্রই ঘরে ফিরে যাচ্ছে।
ম্যরাডোনার বিষন্নতায় ভরা মুখটি আমার দুটি চোখের কোনায় কিছুটা হলেও অশ্রু ভরে দিয়েছিল। এতটা নির্মম পরাজয় যেন ঠিক মানাচ্ছিল না সেই মুখটিতে। তাই প্রিয় দলের এই শোচনীয় হার মেনে নিতে পারছে না আমার মনটিও। বারংবার শুধু মনে হচ্ছে হয়ত রেজাল্ট অন্য রকমও হতে পারত যদি ম্যাচ রেফরী কিছুটা পক্ষপাতদুষ্ট না থাকত জার্মানীর প্রতি। এটা আমার দৃষ্টিকোন। হয়ত ভুলই হবে কিন্তু এখন এটাই আমার একমাত্র সান্ত্বনা।
আমার আড়াই বছরের ছেলেটির মুখে এখনও একটি বানী- মা! আমি আতডেন্তিনা। বলিনি ওকে আমি -বাবা আতডেন্তিনা হেরে গেছে। থাকনা ও ওর উচ্ছাসটা নিয়ে। এখনও ঘরের বারান্দায় উদীয়মান দুটি পাতাকা পাশাপাশি বিরাজমান। খুলিনি ইচ্ছে করেই। অন্তত যতদিন বিশ্বকাপের আমেজ বাতাসে ভাসবে ততদিন ভাসুক আমাদের আবেগটুকুও। হোক না পরাজিত তাই বলে কি স্বপ্নও মরে যাবে? স্বপ্ন চিরদিন বেঁচে থাকবে আর সেই স্বপ্নেরই কোন এক কোনায় ধীরে ধীরে দানা বাঁধবে নতুন এক স্বপ্ন। সে স্বপ্ন লাল সবুজের স্বপ্ন । হয়ত সেই স্বপ্ন পূরণের সৌভাগ্য হবে না আমার জীবদ্দশায়। তবুও হৃদয়ে বেঁচে থাকবে সেটি- কোনদিন হয়ত বিশ্বকাপ নন্দিত হবে লাল-সবুজের পতাকায়!
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুলাই, ২০১০ দুপুর ১২:৩৩