ভাবসিলাম পলিটিক্স নিয়া লেখুম না । কিন্তু আজকে সামুতে একটা লিখা দেখে মেজাজটা খারাপ হয়ে গেল।তাই লান্সব্রেকটাতে লিখতে বসলাম ।
বিশ্বকাপের টিকেট নিয়ে যা হচ্ছে তা সত্যিই লজ্জাকর।ডিজিটাল সরকার টিকেট সিস্টেমটা ডিজিটাল না করে এনালগ করে রেখেছে। ফলাফল...... জোড় যার মুল্লুক তার ।গভীর রাতে সারাদিনের অপেক্ষমানদের লাইন ভেংগে পলায়ন।"পারলে দখল করিস!" ডায়লগ, সন্ত্রাসী আস্ফালন ।ভাবটা এমন যে, সরকারী দলের পোলাপান থাকতে আপনের ক্যান খেলা দেখার শখ হইলো? আপনেগো লাইগা তো টিবি আর ক্রিকইনফুর ব্যবস্হা করে দিসেন উনারা / / / ।উনারা হইলেন এখন দেশের মালিক আর আমরা হইলাম দিনমজুর কামলা, সো, আমাগো জা্যগা চা দোকানের ব্ল্যাক এন হোয়াইট টিবি , ষ্টেডিয়ামের চেয়ার আমাদের জন্য না
ঠিক একই টাইপের একটা টেন্ডারবাজীর ঘটনার সাক্ষি আমি।আমার বড় ভাইয়া একটা প্রাইভেট কোম্পানীতে জব করেন। সেদিন রাতে গেলাম উনার সাইটে। পাশের রুমে শুনলাম উচু গলায় কথা বলার আওয়াজ।কিছুক্ষন পর দেখি ২ টা ছেলে ঐ সাইটের একজনকে টেনে বাইরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। লোকটা অজানা আশোংকায় যেতে চাচ্ছিল না (রাস্তায় ফেলে পিটিয়ে জনগনের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিকে মেরে ফেল্লেও বিচার হয়না, ঐলোক তো কিছুই না )।ওদের কথা হলো বড় বড় ছাত্রনেতারা বসে আছেন, উনাদের সামনে গিয়ে বলে আসতে হবে, এই কোম্পানী একটা টেন্ডার জমা দেবে না।ঐ ২ জনের একজন বলতে ছিল "কেউ আপনের একটা লুমো ছেরবেনা,ভয় পাইতেয়্যাসেন ক্যা? আমরা লইয়্যে যাইতে চাইলে আপ্নে না যাই্য়্যে ফারবেন।এখন কল করলে শয়ে শয়ে লোক আইসে ধইরে লইয়্যে যাইবে, বোজ্জেন?" সাথের ছেলেটা অফিসের ভিতরে গিয়ে একটা হাতুড়ি নিয়ে এসে ঐ লোকটার মাথায় প্রায় আঘাত করে ফেলতেছিল।ওখানে যে কয়জন ছিল, তাতে ঐ দুজনকে একটু আদর সমাদর করলে ওদের হাড্ডি গুড্ডিও খুজে পাওয়া যেত কিনা সন্দেহ ।কিন্তু সবাই জানে ভালো করেই সকালেই আমাদের সাহাড়া আফায় হাজির হয়ে দুজন অত্যন্ত্ মেধাবী, সাহসী ছাত্রনেতা ও বংগবন্ধুর আদর্শের সৈনিকের উপর হামলার প্রতিবাদে ঐ সাইটে আস্তনা গেড়ে থাকা সব রাজাকারকে ধরে রাস্ট্রোদ্রোহীতা, এটেম্প্টু মার্ডার কেস, আর একটু বয়স্ক হলে যুদ্ধপরাধি বলে চালান করে দিবে ।শেষ পর্যন্ত এক মুরুব্বিসহ গিয়ে কয়েকশ ছাত্রনেতার সামনে বলে আসছে যে উনারা টেন্ডার জমা দিবেন্না।তখন বুঝতে পেরেছিলাম আমরা কত অসহায় সন্ত্রাসের সামনে, ক্ষমতা কি জিনিস।
শুধু শক্তি বা লোকবল থাকলেই হয় না।ক্ষমতা থাকলে একজনও অনেক কিছু।কারন ঐ লোকটা দেখতে একা হলেও আমি দেখতে পাচ্ছিলাম ওর পেছনে আমাদের প্রধানমন্ত্রী , স্বরাস্ট্রমন্ত্রী, পুরা পুলিশ বাহিনী, আর্মি, বি.ডি.আর সব দাড়িয়ে আছে।তখন নিজেকে অনেক অসহায় মনে হচ্ছিল।মনে হচ্ছিল আমরা স্বাধীন দেশেও কতটা পরাধীন।ওদের যা ইচ্ছা তাই করতে পারবে। পুরা প্রাসাশন ওদের ব্যাকআপ দিবে।
থানায় যাবেন? পুলিশ তো আপনার মামলাই নিবে না।বরং উল্টো আপনাকেই সন্দেহজনক আক্ষা দিয়ে ৫৪ ধারায় চালান করে দিতে পারে। নয়তো থানা থেকে বের হওয়ার পর আপনার গন্তব্য হবে হয় হাসপাতাল, বা আজিমপুর।
স্বাধীন এই মাতৃভূমিতে আমরা আর কতকাল পরাধীন থাকবো কেউ বলতে পারেন? নিজ দেশে পরবাসী হয়ে আর কতকাল মাথা নিচু করে বেচে থাকবো আমরা? এই কি আমাদের সোনার বাংলা, এই কি আমাদের বাংলাদেশ?