এক সময় শিশুকিশোরেরা পাঠ্য পুস্তকের পাশাপাশি গল্পের কিংবা ছড়ার বই পড়ত। তরুণেরা উপন্যাস, নাটক ও প্রবন্ধ পড়ে জ্ঞান আহরণ করত। মাদরাসার ছাত্ররা কুরান-হাদিস ও ইসলামী সাহিত্য (ইসলামের ইতিহাস-ঐতিহ্য,গৌরব ও বিজয় বিষয়ক সাহিত্য)অধ্যয়ন করত। কিন্তু বর্তমান তরুণ সমাজ সাহিত্যের প্রতি অনীহ কেন? লেখকেরা কী পাঠকের মন জয় করতে পারছেনা? নাকি তরুণদের সাহিত্য চর্চার সুযোগ সীমিত হয়ে আসছে?
আজকের প্রেক্ষাপটে প্রতিটি পরিবারই চায় তাদের সন্তান উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ভাল চাকুরি করুক। আধুনিক পরিবারগুলোর বিশ্বাস, তাদের সন্তানদের নামকরা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করাতে পারলে জ্ঞানের ভিত্তি মজবুত হবে যা ভাল ফলাফল ও উচ্চবেতনের চাকুরি পাওয়ার পথকে সুগম করবে। আর এই থেকেই শুরু হয় ভর্তি যুদ্ধ,যা স্কুল থেকে শুরু করে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও চাকুরির পরীক্ষা পর্যন্ত বিস্তার লাভ করেছে। ভর্তি যুদ্ধে প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজন সাধারণ জ্ঞানের অসাধারণ বই, বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞানের নানা প্রকাশনীর কয়েক ডজন সিরিজ যা পৌঁছে গেছে স্কুল,কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও চাকুরি প্রার্থীর পড়ার টেবিলে। এত জ্ঞানের বই আত্তস্থ করতে তরুণ প্রজন্ম হাঁপিয়ে ওঠছে। সাহিত্যচর্চার সময় কই?
যে সাহিত্য মানুষের চিন্তা শক্তিকে বিকশিত করে,নতুন কিছু করার প্রয়াস যোগায়,নৈতিকতা ও মূল্যবোধের সমন্বয়ে মনুষ্যত্বকে জাগিয়ে তুলে,জাতির মেধার পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটায় সে সাহিত্য আজ নেমে এসেছে ফুটপাতে। ন্যূনতম মূল্যেও কেনার লোক নেই। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা ও চাকুরি পরীক্ষার ধরন বর্তমান প্রজন্মকে সাহিত্য-বিমুখ করে তুলছে।
সাহিত্য বাঁচাতে আমাদের নতুন করে ভাবতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১০:৩৭