মোবাইলের ভাইব্রেশনে মিথিলার ঘুম ভাঙলো রাত তিনটায়। ওর ভাগ্য যেমন - ব্যস্ত হয়ে ফোন ধরতে ধরতেই থেমে গেলো। 'নো কলার আইডি' দেখে মেজাজ ভীষন খারাপ হয়ে গেলো! রাত বারোটা পর্যন্ত জেগে ছিলো এমনি এমনি, কোন বন্ধু ফোন বা ম্যাসেজ করেনি। এখন যে করেছে, সে তিন ঘন্টা দেরী করেও কোন সাহসে নাম্বার হাইড করে! সব কিছুতে দেরী করার অভ্যাস কার আছে এটা ভাবতে ভাবতেই একটা ম্যাসেজ ভেসে উঠলো:
"সতেরো বছর বয়স কি দুঃসহ
স্পর্ধায় নেয় মাথা তোলবার ঝুঁকি,
সতেরো বছর বয়সেই অহরহ
বিরাট দুঃসাহসেরা দেয় উঁকি।
I hope you have a great year, filled with দুঃসাহস!"
মিথিলা হেসে ফেললো। জামিল বেচারার ব্যাবসায়ী বাবার মিড লাইফ ক্রাইসিসের তাড়ায় বাংলা কবিতা পড়তে হচ্ছে। সে জ্ঞান কোথাও কাজে লাগতে পারে না, মিথিলার ওপর ছাড়া। মিথিলা যখন ট্রেনে বসে মুগ্ধ হয়ে সাতকাহন পড়তো, জামিল একশোটা কারন দাঁড় করাতো কেন সমরেশের চেয়ে আরও অনেক ভালো ইংরেজী লেখক আছে ও কেন সমরেশের থাকা না থাকা একই। সেই জামিল এখন ওকে সুকান্তর কবিতা এডিট করে পাঠাচ্ছে!
"Haha thnx. Wat r u doin up so late? *suspicious*"
"English essay - due last wk. x("
জামিল গত সপ্তাহের জিনিস এ সপ্তাহে দিচ্ছে দেখে ও একটু অবাক হলো, সাধারনত দু'এক মাস দেরী করা জামিলের জন্য কিছু না। অবশ্য বছরের শেষে এইচ এস সি - এখন ভালো না হলে মৃত্যু চিন্তা করা উচিৎ।
লাইট নিভিয়ে মিথিলা আবার ঘুমিয়ে পড়লো। সাড়ে চারটার সময় দ্বিতীয় বারের মতো মোবাইলের শব্দে ঘুম ভাঙলো:
"ths is my new no. dad found out abt the other fone lol. so ayon got me a new fone. i've been talking to him all nite lolz xD love him sooo much. love you too mwah.
&& happy 17th! party hard!
xx
- sam"
সামিহা! গত কয়েকদিন স্কুলে আসেনি, স্কুলের সময় বাসায়ও থাকে না। ওর কথা চিন্তা করতে করতে ঘুমিয়ে পড়তে না পড়তেই সকালের এ্যলার্ম বাজলো। ছয়টা বিশ।
মিথিলা দীর্ঘশ্বাস ফেললো। জন্মদিনের দিনটা ঘুমিয়ে কাটাতে হবে - রাতে এতো খারাপ ঘুম ওর জীবনেও হয় নি।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই নভেম্বর, ২০০৯ রাত ২:০২